স্বদেশ ডেস্ক:
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার খুলনার কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে শিঞ্জন রায় (২৫) নিজের বৌভাত অনুষ্ঠানের খাবার খেয়েছেন হাজতে বসে। যে হোটেলে তার অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, সেখান থেকেই থানায় তার জন্য খাবার পাঠানো হয়।
বেসরকারি নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন শিঞ্জন। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ নগরীর বয়রা এলাকা থেকে তাকে আটক করে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
শিঞ্জন রায় নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একই বিভাগের ছাত্র। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।
সোনাডাঙ্গা থানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমতাজুল হক বলেন, অভিযোগকারী ছাত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার একটি ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশুনা করতেন। দীর্ঘ এক বছরের সম্পর্ক থাকলেও শিঞ্জন রায় তাকে বিয়ে না করে বুধবার অন্য মেয়েকে বিয়ে করে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাত্রী তাকে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ এনে মামলা করে।’
ওসি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই ছাত্রীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।’
মামলার এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি বলেন, ‘নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ওই ছাত্রী ও শিঞ্জন রায় একসঙ্গে পড়াশুনা করেন। এক বছর আগে শিঞ্জন রায় তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এরপর বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ভাড়া বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। তিনি বর্তমানে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে শিঞ্জনের অন্য মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার খবরে ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে নগরীর মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার ১৬ নম্বর রোডে গিয়ে শিঞ্জন রায়ের দেখা পান। এ সময় তার বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাকে সেখান থেকে জোর করে ইজিবাইকে তুলে দিতে গেলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। এরপর বিষয়টি পুলিশের কাছে খবর গেলে তাদের দুজনকেই সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়।’
ওসি মমতাজুল হক আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই ছাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। শিঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।’
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত ওই মামলাটিতে নির্যাতিত ছাত্রীকে সংস্থার পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।’