স্বদেশ ডেস্ক:
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই ‘চিরবৈরী প্রতিবেশী’ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে ভারতের। ইসলামাবাদ এরই মধ্যে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা কাশ্মীরি মুসলমানদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে। এমনকি যুদ্ধের জন্য তার দেশ ও সেনাবাহিনী প্রস্তুত বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন ‘নয়া পাকিস্তানের নায়ক’ ইমরান খান।
এ রকম পরিস্থিতিতে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গতকাল পাকিস্তানকে ‘পরোক্ষভাবে’ পারমাণবিক হামলার হুমকি দিয়েছেন। যা বলেছেন রাজনাথ
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন রাজনাথ। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ভারতকে পরমাণু শক্তিধর করে তুলতে চেয়েছিলেন বাজপেয়ী। পোখরানে ১৯৭৪ ও ১৯৯৮ সালে ভারত পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছিল। বাজপেয়ীর তৎকালীন বিজেপি সরকারের আমলে দ্বিতীয় পরীক্ষা হয়।
রাজনাথ বলেছেন, ‘ভারতকে পারমাণবিক শক্তিশালী করে তোলা আমাদের দৃঢ়সংকল্প ছিল এবং এখনো আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতিতে। এটাই সত্যি এখন পর্যন্ত। ভারত এ নীতির প্রবল সমর্থক।’ তবে তিনি টুইটারে যোগ করেন, ‘ভবিষ্যতে কী হবে তা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপরে।’
রাজনাথের মন্তব্যকে অনেকেই পাকিস্তানের প্রতি প্রচ্ছন্ন হুশিয়ারি হিসেবেই দেখছেন। জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করে তাকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার বিল লোকসভায় পাস হওয়ার পর পাকিস্তান ও ভারতের রাজনৈতিক সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এখন কাশ্মীর হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। আবার দ্বিখ-িত জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ।
বলা সহজ করা কঠিন
যার যত ক্ষমতা, তার দায়ভারও তত বেশি। আর এ জন্যই অনেক রাষ্ট্রের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেও নানাবিধ কারণ ও পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বিশ্বে পরমাণু যুদ্ধ বাঁধছে না। আমরা উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রেসিডেন্টকে বলতে দেখেছি, টেবিলে কার কত বড় পারমাণবিক বোমা আছে। তারা পরস্পরকে হুমকি দিলেও যুদ্ধের ‘বোতাম’ কেউ এখনো চাপেননি। হয়তো ভারত ও পাকিস্তানও সেই সহনশীলতা দেখিয়ে যাবে।
ভারত বারবার জানিয়েছে, কাশ্মীর তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এতে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। কিন্তু পাকিস্তান এরই মধ্যে জাতিসংঘের কাছে এ নিয়ে হস্তক্ষেপের জন্য আবেদন জানিয়েছে। চীনও তার পাশে রয়েছে।
ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহম্মদের আত্মঘাতী সেই হামলায় চল্লিশের বেশি জওয়ান নিহত হয়েছিলেন।