বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
লিবিয়ায় আটক ৪০০০ অভিবাসী

লিবিয়ায় আটক ৪০০০ অভিবাসী

স্বদেশ ডেস্ক: অভিবাসী বিরোধী অভিযানে লিবিয়ায় আটক করা হয়েছে কমপক্ষে ৪ হাজার মানুষকে। গারগারেশ শহরে চালানো এই অভিযানে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন কয়েক শত নারী ও শিশু। তবে এর মধ্যে কোনো বাংলাদেশি আছেন কিনা তা জানা যায়নি। কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে আরো বলা হয়েছে, গারগারেশ শহরে ওই অভিযান চালানো হয়েছে শুক্রবার। কর্তৃপক্ষ বলেছে, অবৈধ অভিবাসী এবং মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তামূলক অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে কোনো পাচারকারী বা মাদক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা তা উল্লেখ করেনি লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার দিনের শুরুতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল তারা অবৈধ ৫০০ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে।

কিন্তু শনিবারের রিপোর্টে বলা হয় এ সংখ্যা ৪ হাজারে পৌঁছে গেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

গারগারেশ হলো রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পশ্চিমের একটি শহর। কয়েক বছরে সেখানে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযান চালানো হয়েছে। তবে সর্বশেষ চালানো এই অভিযানকে সবচেয়ে তীব্র বলে বর্ণনা করেছেন অধিকারকর্মীরা। শুক্রবার নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের লিবিয়া বিষয়ক পরিচালক ড্যাক্স রোক বলেছেন, আমরা শুনতে পেয়েছি নারী ও শিশু সহ কমপক্ষে ৫০০ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে খেয়ালখুশি মতো। তারা নির্যাতিত ও অশোভন আচরণের ঝুঁকিতে আছেন। লিবিয়ায় অভিবাসী এবং শরণার্থী- যাদের আইনগতভাবে দেশটিতে থাকার বৈধতা নেই, তারা খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে আছেন। বন্দিশিবিরগুলোতে নির্যাতন, যৌন সহিংসতা এবং চাঁদাবাজি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেসব ছবি পোস্ট করেছে তাতে দেখা যায়, যানবাহনের ভিতরে ডজন ডজন অভিবাসী বসে আছেন। তাদের হাতে হাতকড়া পরানো। এ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব বন্দিকে ত্রিপোলিতে ‘কালেকশন অ্যান্ড রিটার্ন সেন্টারে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এর প্রধান পুলিশ কর্নেল নুরী আল গ্রেটলি। পরে তিনি আরো জানিয়েছেন, আটক অভিবাসীদেরকে রাজধানী ত্রিপোলি এবং আশপাশের শহরগুলোতে ভাগ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, এসব অভিবাসীকে যতটা দ্রুত সম্ভব তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হবে। তারা বৈধ ডকুমেন্ট ছাড়াই বছরের পর বছর বসবাস করছিলেন লিবিয়ায়। উল্লেখ্য, দেশটির দীর্ঘদিনের নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করার পর মানব পাচারের একটি বড় ট্রানজিট রুট হয়ে ওঠে লিবিয়া। আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ ও দারিদ্র্য কবলিত দেশগুলোর জনগণের কাছে এই ট্রানজিট রুটটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তারা ইউরোপে উন্নত জীবনের লক্ষ্যে ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দেয়া শুরু করেন। তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় বিশৃংখল অবস্থার মধ্যে সুবিধা নিতে থাকে মানবপাচারকারীরা। তারা অর্থের বিনিময়ে বহু মানুষকে বিদেশে পাচার করেছে এবং করছে। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে যুক্ত ৬টি দেশের সীমান্তকে ব্যবহার করেছে।
বেলাদি অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটসের লিবিয়ার কর্মী তারিক লামলুম বলেছেন, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যে অভিযান চালানো হয় তাতে তাদের অধিকার লঙ্ঘন হয়। বিশেষ করে কিছু নারী ও শিশুকে আটক করে তা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। তিনি বলেছেন, যাদেরকে আটক করা হয়েছে, তার মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাদেরকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সি শরণার্থী অথবা আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধিত করেছে। তবে এ বিষয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সি ইউএনএইচসিআরের তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877