স্বদেশ ডেস্ক: কর্মসংস্থান সৃষ্টি জোরদারের লক্ষ্যে ইংল্যান্ড সরকারের গৃহীত মাল্টিমিলিয়ন পাউন্ডের এন্টারপ্রাইজ জোন স্কিম ব্যর্থ হয়েছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের প্রচেষ্টা হিসেবে ২০১১ সালে ইংল্যান্ডে ‘এন্টারপ্রাইজ জোন’ ঘোষণা করে সরকার। এ জোন থেকে ২০১২-১৫ সালের মধ্যে ৫৪ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিবিসির অর্থায়নে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরো ইংল্যান্ডের ২৪টি এন্টারপ্রাইজ জোনে ২০১৭ সাল নাগাদ কেবল ১৭ হাজার ৩০৭ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং দুটি অঞ্চলে কর্মসংস্থানের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। যদিও সরকার ২০১২ সাল থেকে এসব অঞ্চল থেকে ৩৮ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছে।
নীতিমালা অনুসারে এসব এন্টারপ্রাইজ জোনকে স্বল্প ব্যবসা কর, উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ এবং নিম্ন স্তরের পরিকল্পনা নিয়ন্ত্রণের সুবিধা দেয়া হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব অঞ্চল থেকে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, তা ২০১১ সালে সরকারের প্রাথমিক ঘোষণায় দেয়া পূর্বাভাসের চেয়ে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কম। উল্লেখ্য, অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের (ওএনএস) উপাত্ত ব্যবহার করে থিংকট্যাংক সেন্টার ফর সিটিজ গবেষণাটি পরিচালনা করেছে। ওএনএসের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১২-১৭ সালের মধ্যে ব্রিস্টল টেম্বল কোয়ার্টার অ্যান্ড বার্থ ও সমার ভ্যালি এন্টারপ্রাইজ জোনে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এ জোনটিতে নিট কর্মসংস্থান বেড়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। অন্য দিকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা গেছে ল্যাঙ্কাশায়ার এন্টারপ্রাইজ জোনে। অঞ্চলটি ২ হাজার ৩৪৭ কর্মসংস্থান হারিয়েছে। এ ছাড়া ২০১৭ সাল নাগাদ হামবার এন্টারপ্রাইজ জোনেও প্রায় ৩২০ কর্মসংস্থান কমতে দেখা গেছে।
সেন্টার ফর সিটিজের প্রধান অর্থনীতিবিদ পল সুইনি বলেন, মূলত ব্রিটিশ বহুজাতিক প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও মহাকাশ কোম্পানি বিএই সিস্টেমসের ছাঁটাইয়ের জন্যই ল্যাঙ্কাশায়ার ও হামবার অঞ্চলে কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে। এদিকে বিএই সিস্টেমসের সাবেক কর্মী ও ইউনিয়নের আহ্বায়ক ইয়ান জেন্ট বলেন, যেভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা প্রয়োজন ছিল, হামবার এন্টারপ্রাইজ জোন তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া বিএইর ছাঁটাইয়ের পর অঞ্চলটিতে যে পরিমাণ উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মসংস্থান প্রয়োজন ছিল, তা-ও সৃষ্টি করা হয়নি। ২২টি স্থানীয় উদ্যোগ অংশীদার (এলইপি), কাউন্সিল ও সরকারের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, এন্টারপ্রাইজ জোন স্কিমটির পেছনে প্রায় ৩১ কোটি ৬৬ লাখ পাউন্ড সরকারি অর্থ ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে দুটি জোনের তথ্য পাওয়া যায়নি। এত বিশাল অর্থ ব্যয়ের পরও এন্টারপ্রাইজ জোনগুলো তাদের উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।