শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় সমস্যা নেই, প্রয়োগ জারি রাখার আহ্বান ডব্লিউএইচও’র

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় সমস্যা নেই, প্রয়োগ জারি রাখার আহ্বান ডব্লিউএইচও’র

‍স্বদেশ ডেস্ক:

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনে ‘সমস্যার কোনো প্রমাণ নেই’ জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রক্তে জমাট বাঁধার আশঙ্কায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের প্রয়োগ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হচ্ছে। ইউরোপিয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিংবা নির্মাতা কোম্পানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করা হলেও কাজ হচ্ছিল না। যে কারণে, এ বিষয়টিতে নিজেদের মতামত প্রকাশ করলো ডব্লিউএইচও।

ডব্লিউএইচও’র দাবি, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা নেওয়ার সঙ্গে মানবদেহের রক্ত জমাট বাঁধার কোনো সংশ্লিষ্টতা এখনও পাওয়া যায়নি। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ভ্যাকসিন নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন সংস্থার পক্ষ থেকে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হলো ভ্যাকসিন প্রয়োগের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া। সম্ভাব্য ক্ষতিকর ঘটনা অনুসন্ধান করার চর্চা ভালো বিষয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ডব্লিউএইচও’র ভ্যাকসিন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা অ্যস্ট্রাজেনেকার টিকার বিষয়ে আলোচনা করতে আজ মঙ্গলবার বৈঠকে বসছেন। টিকা ইস্যুতে একইদিন বৈঠকে বসছে ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সিও (ইএমএ)। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সংস্থাটি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বিষয়ে হয়তো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে।

ডব্লিউএইচও মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডেমেইয়ার বলেন, সংস্থার পক্ষ থেকে এই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যখনই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত সম্পর্কে জানতে পারবে, বর্তমান সুপারিশমালায় যদি কোনো পরিবর্তন ঘটে এবং প্রাপ্ত তথ্য দ্রুততার সঙ্গে জনগণকে জানানো হবে। সোমবার পর্যন্ত এসব ঘটনা ভ্যাকসিন নেওয়ার কারণেই ঘটেছে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গুরুত্বপূর্ণ হলো ভ্যাকসিন প্রয়োগ জারি রাখা যাতে করে প্রাণঘাতী ভাইরাসের আক্রমণ থেকে জীবন রক্ষা করা যায়।

ইউরোপিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনও (ইএমএ) রক্তে জমাট বাঁধার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। তারাও ভ্যাকসিন প্রয়োগ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। ইএমএ জানায়, টিকা নেওয়ার কারণে রক্ত জমাট বেঁধে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। এমনকি এটা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও তালিকাভুক্ত করা হয়নি।’ এ সংস্থাটি এক বিবৃতিতে আরও জানায়, যে ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে; এর থেকে আসলে টিকা নেওয়ার লাভই বেশি। করোনার টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে এবং একইসঙ্গে টিকা নেওয়ার সঙ্গে শরীরের রক্ত জমাট বাঁধার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা- সে বিষয়ে তদন্তও অব্যাহত থাকবে।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানও ‘জনগণকে যখন বলা হবে তখন ভ্যাকসিন নেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, যে প্রমাণ আছে তাতে ভ্যাকসিনের কারণে জমাট বাঁধার কোনো ইঙ্গিত নেই।

ব্রিটেন ও ইউরোপজুড়ে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ তাদের তৈরি করোনার টিকা নিয়েছেন এবং এর মধ্যে মাত্র ৪০ জনেরও কম মানুষের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে, রক্তজমাট বাধার বিষয়টি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে আয়ারল্যান্ড, ডেনমার্ক, নরওয়ে, বুলগেরিয়া ও আইসল্যান্ডে। দেশ গুলোতে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো ও ইন্দোশিয়ায় ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করার আগেই স্থগিত করেছে। ইতালি ও অস্ট্রিয়াসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপিয় দেশ ভ্যাকসিনটির নির্দিষ্ট ব্যাচের প্রয়োগ বাতিল করেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877