স্বদেশ ডেস্ক:
সাত ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠকের পর ভারতের সর্বপ্রাচীন রাজনৈতিক দলের নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কংগ্রেসের ভার আপাতত সোনিয়া গান্ধীর কাঁধেই থাকবে। ডজন দু-এক প্রবীণ নেতা শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধী মত তুলে ধরে চিঠি লেখার পর গতকাল দলের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন সোনিয়া। কিন্তু পরে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিয়ে বলেছেন, ‘যারা বিরোধিতা করছেন, তাদের ওপর তার কোনো বিরাগ নেই।’
এনডিটিভি জানিয়েছে, প্রভাবশালী ২৩ নেতা ওই চিঠিতে ‘পূর্ণাঙ্গ, দৃশ্যমান নেতৃত্ব’ চাওয়ার পর তাদের সঙ্গে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির আঁতাতের প্রশ্ন উঠেছিল। তবে ওই নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
১৩৫ বছর পুরনো দল কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটির বৈঠকের পর সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘আমি কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু তারা তো আমারই সহকর্মী। যা ঘটে গেছে, তা গেছে। এখন সবাই মিলে সামনে এগোতে হবে।’
এর আগে চিঠির খবরের পর সোনিয়া পদ ছাড়তে চাইলে তার ছেলে রাহুল গান্ধী বলেন, তিনি কোনোভাবেই কংগ্রেস সভাপতি পদে ফিরে আসতে চান না। বরং দলের হয়ে কাজ চালিয়ে যাবেন এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন আরএসএসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই করবেন। সোনিয়ার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা
গান্ধী ভাদরাও পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন যে, তিনি জেনারেল সেক্রেটারিই থাকবেন এবং দলের শীর্ষপদের দায়িত্ব নেওয়ার কোনো ইচ্ছা তার নেই।
নতুন নেতৃত্বের দাবিতে পাঠানো চিঠিতে কপিল সিব্বল, শশী থারুর, গুলাম নবী আজাদ, পৃথ্বীরাজ চৌহান, বিবেক তানখা ও আনন্দ শর্মার মতো প্রবীণ নেতাদের সই ছিল। তাদের দাবি, রাহুল দলের শীর্ষপদ গ্রহণ করতে না চাইলে নির্বাচনের মাধ্যমে উপযুক্ত নেতা বেছে নেওয়া হোক। সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সব জায়গাতেই আমূল সংস্কারেরও দাবি তোলেন তারা।
রাহুল দলের শীর্ষপদ ছাড়েন গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের পরই। এরপরই অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দলের হাল ধরেন সোনিয়া। কিন্তু নিজের স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার কারণে কিছুদিন ধরেই তিনি দায়িত্ব ছাড়ার কথা বলছিলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সোনিয়াকে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়ে গতকালের বৈঠকে প্রস্তাব উত্থাপন করেন। কার্যনির্বাহী কমিটির অন্য নেতারাও এতে সমর্থন জোগান। সোনিয়া সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। কিন্তু ছয় মাসের মধ্যে নতুন সভাপতি খুঁজে বের করার উদ্যোগ নিতে তিনি দলকে আহ্বান জানিয়েছেন।