বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩০ অপরাহ্ন

২০২৪ সালে গণপিটুনিতে নিহত ১২৮ জন

২০২৪ সালে গণপিটুনিতে নিহত ১২৮ জন

স্বদেশ ডেস্ক:

নানা কারণে ২০২৪ সাল ছিল বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল একটি বছর। এ বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২৮ জন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগেই ৫৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৭ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, বরিশাল বিভাগে ৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন, রংপুর বিভাগে ৫ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন এসব তথ্য জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা কমে এলেও এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি। এমনকি এ ক্ষেত্রে অভিযোগগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা যায়নি।

২০২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২১ জনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে পুলিশ হেফাজতে শারীরিক নির্যাতনে ৬ জন, পুলিশের গুলিতে ৩ জন, পুলিশ হেফাজতে ১ জন আত্মহত্যা করেছে, র্যাবের হেফাজতে শারীরিক নির্যাতনে ১ জন, বিজিবির ক্রসফায়ারে ১ জন, যৌথবাহিনীর হেফাজতে গ্রেফতারের ও পরে শারীরিক নির্যাতনে ৭ জন, নৌবাহিনীর নির্যাতনে ১ জন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হেফাজতে ১ জনের মৃত্যু ঘটে। এই ২১ জনের মধ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৮৫৮

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মোট ৮৫৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১১ হাজার ৫৫১ জন।

পত্রিকায় প্রকাশিত সূত্রে আসক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন নারী এবং ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু-কিশোর রয়েছে ১২৯ জন। জুলাই অভ্যুত্থানে বিশেষত নিজ বাসায় গুলিতে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনাগুলো অত্যন্ত মর্মান্তিক। এছাড়া নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু

আসকের হিসাব অনুযায়ী ২০২৪ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ১৪৭টি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪০৮টি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, অগ্নিসংযোগ হয়েছে ৩৬টিতে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে ১১৩টিতে, মন্দির ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে ৩২টি, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে ৯২টি প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। এসব ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩ জন এবং আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১ জন নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে; আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৮২ জন।

আদিবাসীর অধিকার

আসক বলেছে, বিগত বছরগুলোর মতো ২০২৪ সালেও সমতল ও পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই তংগোঝিরি এলাকায় ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে পূর্ব-বেতছড়াপাড়ার ১৭টি ত্রিপুরা পরিবারের ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, এর আগে তাদের কাছে দুর্বৃত্তরা চাঁদা দাবি করেছিল। এরপর বসতবাড়িতে আগুনের ঘটনা ঘটে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877