মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ন

‘অভিভাবকদের উচিত মেয়েরা কোথায় যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা’

‘অভিভাবকদের উচিত মেয়েরা কোথায় যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা’

রাজধানীর গুলশানে ক্যাফে সেলেব্রিটা বারের সামনে মারামারির অভিযোগে তিন নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার নারীদের মদ পানের লাইসেন্স ছিল না এবং বার কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করেছে বলে জানালেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। এ ছাড়া মেয়েরা কোথায় যায়, অভিভাবকদের সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হওয়া তিন নারী হলেন শারমিন আক্তার মিম (২৪), ফাহিমা ইসলাম তুরিন (২৬) ও নুসরাত আফরিন।

ব্রিফিংয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা এই নগরে সবাই বাস করি। নগরে বাস করতে গেলে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। মদ খাওয়ার জন্য কোনো পুরুষ বা নারীর লাইসেন্স থাকলে বৈধ বার থেকে মদ পান করতে পারে। এতে আইনগত কোনো বাধা নেই। কিন্তু পয়লা বৈশাখের রাতে গুলশানের মতো একটি এলাকা যেখানে অভিজাত পরিবারের লোকদের বসবাস, সেখানে তারা মদ পান করেছেন। কারও কোনো লাইসেন্স ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘লাইসেন্সহীন কারও কাছে বার কর্তৃপক্ষ মদ বিক্রি করতে পারে না। তাদের উচিত ছিল এসব নারীর মদের লাইসেন্স পরীক্ষা করা। এমনকি এই নারীদের কাছে অতিরিক্ত পরিমাণে মদ বিক্রি করেছে তারা। যা পান করে মাতাল ও বেসামাল হয়ে গেলেন তারা।’

ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘বারের লোকজনের বেসামাল নারীদের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত ছিল। এই নারীরা বার থেকে বের হয়ে রাস্তায় গিয়ে প্রকাশ্যে মারামারিতে জড়ালেন। যা গুলশানের বাসিন্দারা দেখলেন। তারা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিলেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ এই ভিডিও দেখে ভাববে, শহরের রাস্তায় নারীরা মাতলামি করবে, মারামারি করবে! এটা কোনো অভিভাবক মেনে নিতে পারবেন না। এসব নারীরা কারও না কারও সন্তান। তাদের অভিভাবকদের উচিত মেয়েরা কোথায় যায়, কী করে সেদিকে খেয়াল রাখা। আজ এই নারীরা বারে গিয়ে মদ পান করে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। যে মেয়েকে তারা মেরেছেন সেই মেয়েটিও মাতাল ছিলেন।’

অভিযোগকারী রিতা আক্তার সুমি ও গ্রেপ্তার হওয়া শারমিন আক্তার মিম, ফাহিমা ইসলাম তুরিন ও নুসরাত আফরিন

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে বারগুলো লাইসেন্স ছাড়া মদ বিক্রি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে, অভিযোগকারী রিতা আক্তার সুমি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সোস্যাল মিডিয়াতে আপনারা সবাই দেখেছেন, কীভাবে ভাইরাল হয়েছে। আমার তো একটা আত্মসম্মান আছে, তাই না? উনি তো একটা নারী, মেয়ে মানুষ। উনার দরকার ছিল, আমাকে একটা থাপ্পড় মারত, উনি আমাকে চুলে ধরত, আমার কোনো দুঃখ থাকত না। আমার শাড়িটা খোলার কী দরকার ছিল? এটা সবার কাছে আমার প্রশ্ন। আমি চাই, তাদের সুষ্ঠু বিচার হোক, আর কিছু না। আমার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, যেন কোনো বোনের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।’

তারা মিমাংসার কথা বলছে- সাংবাদিকরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘না, আমি কোনো মিমাংসা করব না। আমি হ্যারাসমেন্ট হইছি, সোস্যাল মিডিয়াতে আমি ভাইরাল হয়ে গেছি। উনারা হন নাই। উনারা মিডিয়াতে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন। কেন, আমি যদি দোষ না করি কথা বলতে কোনো প্রবলেম আছে? উনারা দোষ করেছেন বলেই কথা বলতে চাচ্ছেন না। আমি সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার চাই।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877