বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন

গাজা নিয়ে হামাসপ্রধানের হুঁশিয়ারি

গাজা নিয়ে হামাসপ্রধানের হুঁশিয়ারি

স্বদেশ ডেস্ক:

গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া বুধবার বলেছৈন, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা নিয়ে যেকোনো পরিকল্পনা যদি তাদেরকে বাদ দিয়ে করা হয়, তবে সেটা হবে স্রেফ ‘বিভ্রম।’

টেলিভিশনে দেয়া এক বক্তৃতায় হানিয়া বলেন, ‘গাজায় কিংবা ফিলিস্তিনি স্বার্থবিষয় কোনো চুক্তি হামাসকে বা প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোকে বাদ দিয়ে করা হবে বিভ্রম।’

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একটি মন্তব্যের এক দিন পর হানিয়া এই বক্তৃতা করলেন। নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘যারা সন্ত্রাসবাদ এবং আর্থিক সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে’ তাদের তিনি গাজায় প্রবেশ করতে দেবেন না।

কিন্তু হানিয়া বলেন, তিনি ইসরাইলি হামলা বন্ধ করতে আলোচনা করতে উন্মুক্ত।

তিনি বলেন, জেরুসালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার রাজনৈতিক পথে নেতৃত্বে দিতে’ হামাস আলোচনা করতে প্রস্তুত।’

ইসরাইলি কর্নেলসহ ব্যাপক প্রাণহানি

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের ভয়াল গুপ্ত হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে ইসরাইলি বাহিনীর। বুধবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের দুই সিনিয়র কমান্ডারসহ বেশ কয়েকজন অফিসার এই হামলায় নিহত হয়েছে। এর ফলে গাজায় স্থল হামলা শুরুর পর নিহত ইসরাইলি সৈন্যের সংখ্যা দাঁড়াল ১১৫। এটি ইসরাইলিদের তথ্য। হামাদের দাবি, আরো বেশি ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছে।

ইসরাইলি মিডিয়ার খবরে বলা হয়, শেজাইয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাটি হয়। এটিই ছিল গাজায় ইসরাইলি সৈন্যদের প্রবেশের পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী একক হামলা।

ইসরাইল বাহিনী জানিয়েছে, বুধবার নিহতদের মধ্যে রয়েছে গোলানি ব্রিগেডের কমান্ডার্স টিমের প্রধান কর্নেল আইজ্যাক বেন বাসাত, ৪৪; গোলানি ব্রিগেডের ১৩তম ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল তোমার গ্রিনবার্গ, ৪৫; ১৩তম ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার মেজর রোই মেলদাসি, ২৩; গোলানি ব্রিগেডের ৫১তম ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোশে আভরাম বার অন, ২৩; ৫১তম ব্যাটালিয়নের সার্জেন্ট অ্যালোনি, ১৯; ইসরাইলি বিমান বাহিনীর ৬৬৯ ইউনিটের স্কয়াড কমান্ডার মেজর বেন শেলি, ২৬; ইউনিট ৬৬৯-এর সার্জেনন্ট ফার্স্ট রম হেচট, ২০।

এছাড়া গাজায় পৃথক হামলায় স্টাফ সার্জেন্ট ওরিয়া ইয়াকুব, ১৯ নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এছাড়া আরো তিন সৈন্য মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।

হামাসের বিরুদ্ধে স্থল হামলায় এ পর্যন্ত নিহত সর্বোচ্চ র‌্যাংকের কর্মকর্তা হলেন কর্নেল বেন বাসাত।

প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা অনুসন্ধান অভিযান পরিচালনা করার সময় হামাসের গুপ্ত হামলার শিকার হয় তারা। ইসরাইলি বাহিনী তিনটি দৃশ্যত পরিত্যক্ত ভবনে প্রবেশ করে সুড়ঙ্গ খোঁজার জন্য। সৈন্যরা একটি ভবনে প্রবেশ করামাত্র হামাস সদস্যরা তাদের দিকে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটায়, গুলি বর্ষণ শুরু করে।

তাদের উদ্ধারের জন্য ইসরাইলের আরো সৈন্য এগিয়ে আসে। তারাও ওই হামলার শিকার হয়। তাদের উদ্ধারের জন্য আরেক দফা সৈন্য পাঠাতে হয়। এই পর্যায়ে দ্বিতীয় ভবন থেকেও হামলা শুরু হলে ইসরাইলিরা দিশাহারা হয়ে পড়ে।
ফলে তারা বেশ কিছু বিস্ফোরক দিয়ে পুরো ভবনটি উড়িয়ে দেয়।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার সময় এই গ্রিনবার্গের ১৩তম ব্যাটালিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছিল। ওই দিন তাদের ৪১ সৈন্য নিহত হয়েছিল। হামাসের হাতে ওই দিন প্রায় ১২ শ’ লোক নিহত হয়েছিল। তারা আরো প্রায় ২৪০ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে আসে।

এরপর থেকে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত গাজায় ১৮ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877