শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন

বিয়ের পর বাসর ঘরে ঢুকেই দেখলেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা

বিয়ের পর বাসর ঘরে ঢুকেই দেখলেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা

স্বদেশ ডেস্ক:

মেয়ের বয়স ১৬ বছর। সংসারের টানাপড়নের কারণে একবছর আগে মেয়েকে মামার বাড়িতে দেখাশুনার জন্য রেখে যান মা-বাবা। কিন্তু দীর্ঘদিন একই ঘরে থাকার পরে মামাতো-ফুফাতো ভাই-বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পকের্র একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্ক হয়। কিশোরী হয়ে যায় অন্তঃসত্ত্বা। এরই মধ্যে মামাতো ভাই সোলায়মানের চাকরি হলে তিনি ট্রেনিংয়ে চলে যান। হঠাৎ করেই বদলাতে শুরু করে সকল প্রেক্ষাপট। পরিবর্তন হতে শুরু করে বোনের শরীর, চেহারা।

কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর গোপন রেখেই গত ১৫ জুলাই বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের বাসিন্দা লাল মিয়ার ছেলে মাজহার উদ্দিন টেকনিক্যাল কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জহির উদ্দিনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে ওই কিশোরীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু। কোরবানির ঈদের আগের দিন স্বামী জহির তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে তার বাড়িতে তুলে নেন। তখনও জহির জানতেন না তার নববধূ অন্তঃসত্ত্বা। এরপর বাসর ঘরে প্রবেশ করার পরেই প্রকাশ পায় নববধূ অন্তঃসত্ত্বা।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার শিংড়াবুনিয়া গ্রামের ওই কিশোরীর মা-বাবা ঢাকায় কাজ করতেন। ১৬ বছরের মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রায় ১০ মাস আগে আপন ভাইয়ের বাড়িতে মেয়েকে রেখে যান তারা। কিন্তু আবুল কালামের বাড়িতে থাকা অবস্থায় তার ছেলে সোলায়মানের সঙ্গে কিশোরীর অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে মামাতো ভাই সোলায়মানের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে অন্তঃসত্ত্বা হন ওই কিশোরী।

এ খবর চেপে রেখেই অভিভাবকরা কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর উপস্থিতিতেই ইউপি কার্যালয়ে জহিরের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে দেন। বাসর ঘরে নিজের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বামী জহির। বিষয়টি জহির তার ভাবিকে জানালে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর প্রমাণ হয় কিশোরী নববধূ ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ডাক্তারি পরীক্ষায় কিশোরী ৩২ সপ্তাহ অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে জানানো হয়। চলতি বছরের নভেম্বরের ৬ তারিখে তার সম্ভাব্য ডেলিভারি তারিখ।

বিষয়টি এখানেই শেষ না হয়ে গড়িয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ পর্যন্ত। গত শুক্রবার বিকেলে কিশোরীর মা পাথরঘাটা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার আপন ভাই, ভাইয়ের ছেলে ও ভাইয়ের বউকে আসামি করে পাথরঘাটা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী স্বামী জহির উদ্দিন বলেন, আমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেয়ের অভিভাবকরা। আমি এর বিচার চাই।

জহির উদ্দিনের ভাই আল-আমিন বলেন, কাকচিড়ার চেয়ারম্যান পল্টু স্থানীয় কাজীকে ডেকে এনে বিয়ে পড়ানোর পর কাবিন রেজিস্ট্রি করিয়ে দেন।

এদিকে শুক্রবার অভিযুক্ত আবুল কালামকে পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে প্রেরণ করা হলে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তবে মূল অভিযুক্ত মামাতো ভাই সোলায়মানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

অবশ্য উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মো: আলাউদ্দিন পল্টু দাবি করেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। তার কার্যালয়ে এমন কোনো বিয়ে হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি মো: সাহাবুদ্দিন বলেন, ওই কিশোরীর মামাতো ভাই সোলায়মান ও তার বাবা-মাকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্ত সোলায়মানের বাবা কালামকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877