শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মার্কিন বলয়ে অস্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রনীতি

মার্কিন বলয়ে অস্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রনীতি

স্বদেশ ডেস্ক:

বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশেই পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে নিজ নিজ স্বকীয়তা বজায় রেখে তৎপরতা চলছে। এশিয়ার দেশগুলো পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে তেমন স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে চলতে না পারলেও অস্ট্রেলিয়া তাঁবেদারির পররাষ্ট্রনীতি চর্চায় ব্যাকুল। এশিয়ার অন্যান্য দেশের সাথে যেখানে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক হওয়ার কথা উষ্ণ-সহযোগিতাপূর্ণ সেখানে ঐতিহাসিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া এশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সাথে তাদের সম্পর্ক শীতল। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রনীতি ক্যানবেরা-লন্ডন-ওয়াশিংটন এ অক্ষেই বহমান।

এশিয়ার দেশগুলোর সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক কতটুকু বন্ধুত্বের, পূর্ব তিমুর ইস্যু থেকেই এটি আঁচ করা যায়। পূর্ব তিমুর ইস্যুকে প্রথমেইন্দোনেশিয়ার অভ্যন্তরীণ ইস্যু হিসেবে ঘোষণা দেয় অস্ট্রেলিয়া। পরবর্তীকালে পূর্ব তিমুর অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলে অস্ট্রেলিয়া যুক্তরাষ্ট্রসহ তার ইউরোপীয় মিত্রদের সাথে একাট্টা হয়ে ইন্দোনেশিয়ার বিরোধী শিবিরে যোগ দেয়। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র সেখানেই অস্ট্রেলিয়া। তাঁবেদারির পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া এশিয়ার সাথে তার ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি বিবেচনায় নেয় না। অস্ট্রেলিয়ার কাছে শুধু ‘যুক্তরাষ্ট্র’ ফ্যাক্টর। তাঁবেদারির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া-এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বিচ্ছিন্নতারই জানান দেয়। অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন ও নরওয়ে হলো মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির পকেট। যুক্তরাষ্ট্র তার জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থ বজায় রাখার জন্য বরাবরই এসব দেশকে ব্যবহার করে।

ইরাকের কথিত গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অনুসন্ধানে সুইডিস নাগরিক হ্যান্স ব্লিস্ককে নিয়োগ করা হয়। হ্যান্স ব্লিস্কের বিতর্কিত ও ধীরগতি অনুসন্ধানে শুধু গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিষয়টিই নিশ্চিত করা হয়নি। ইরাকের নিরীহ-নিরস্ত্র জনগণকে যুদ্ধও উপহার দেয়া হয়। শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধে মধ্যস্থতার জন্য নরওয়েজিয়ান এরিক সোল হেইমকে মার্কিন ইশারায়ই দায়িত্ব দেয়া হয়। ভিয়েতনামে মার্কিন আগ্রাসনকালীন অন্য দেশগুলোর যেখানে নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অংশগ্রহণে ছিল অনীহা, সেখানে তাঁবেদারি পররাষ্ট্রনীতির ধারক ও বাহক অস্ট্রেলিয়া কনভেনশনাল যুদ্ধে অগ্রগামী ও নিরীহ ভিয়েতনামিদের হত্যায় ছিল সমান সক্রিয়।

কোরীয় যুদ্ধেও কম যায়নি অস্ট্রেলিয়া। পঞ্চাশের দশকে কোরিয়া রণাঙ্গনের রক্তাক্ত প্রান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কোরিয়ার বিভাজনে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অস্ট্রেলিয়া ছিল সমান সক্রিয়।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ইঙ্গিতেই অস্ট্রেলিয়ান স্যার নিনিয়ানকে পাঠানো হয়। চলমান উপসাগরীয় উত্তেজনা এবং ওই অঞ্চলে যুদ্ধ উন্মাদনা যখন তুঙ্গে তখন ক্যানবেরা বিমানবাহী রণতরীসহ লন্ডন-ওয়াশিংটন অক্ষে যোগদানের উদ্দেশে পারস্য উপসাগর অভিমুখে রওনা দিয়েছে, যা অস্ট্রেলিয়ার তাঁবেদারির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877