স্বদেশ ডেস্ক: সাধারণ মানুষের চোখে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের চক্ষুরোগ। এ থেকে বাদ যায় না ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীও। চোখের সব অংশই ডায়াবেটিসের জটিলতায় প্রভাবিত হতে পারে। এর মধ্যে কিছু কিছু জটিলতার কারণে চোখ অন্ধ হতে পারে। চক্ষুকোটরে রোগের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে ফাঙ্গাস জীবাণু মিউকোরের মাধ্যমে কোটরের কোষপ্রদাহ বা সেলুলাইটিস। এ রোগের নাম অরবটাল মিউকোর মাইকোসিস। এ রোগের দ্রুত চিকিৎসা না করলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। উন্নত দেশে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের পরও এ রোগে মৃত্যুর হার ৫৭ শতাংশ। এ ছাড়াও রয়েছে অনেক রোগ, যা ডায়াবেটিস রোগীর হয়ে থাকে। যেমন-
নেত্রবর্ণ : নেত্রবর্ণের ধমনি ও শিরার বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যায়। যেমন-ফুলে যাওয়া, জায়গায় জায়গায় মোটা হয়ে যাওয়া, সাধারণভাবে চিকন হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া নেত্রবর্ণের প্রদাহের হার ডায়াবেটিস রোগীদের বেশি।
অশ্রু : অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিক রোগীর অশ্রুতে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। এটির নাম গ্লাইকোল্যাকরিয়া। তাই অশ্রুতে চিনির পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে রোগীর ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং ডায়াবেটিস স্ক্রিনিংয়ের জন্য অশ্রু পরীক্ষা জরুরি।
কর্নিয়া, নেত্রস্বচ্ছ : ডায়াবেটিস রোগীর পলিনিউরোপ্যাথির মাধ্যমে কর্নিয়ার ট্রাইজেমিনাল স্নায়ুর কার্যক্ষমতা কমে যায়। এতে কর্নিয়ার সংবেদনশীলতাও কমে যায়। কর্নিয়ার সামান্য ক্ষত রোগীরা টের পান না। ফলে অ্যাবরেশন, বারবার ক্ষয় বা ক্ষত হওয়া বেড়ে যায়। এ ছাড়া কর্নিয়ায় রঞ্জকায়ন ও কুঞ্চিত হওয়া ডায়াবেটিসের বিশেষ লক্ষণ। ডায়াবেটিসে কর্নিয়ার কুঞ্চনের ওপর অনেক গবেষণা হয়েছে। কর্নিয়ার কেন্দ্রে সূক্ষ্ম বাঁকা বা খাড়া দাগের মতো দেখা যায়। সাধারণত একই সঙ্গে দুচোখে এটা দেখা যায়। নারী, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি থাকে, তাদের ক্ষেত্রে এ রোগে জটিলতা বেশি।
তবে সৌভাগ্যক্রমে এ ধরনের কর্নিয়া হওয়ায় চোখে দেখতে কোনো অসুবিধা হয় না। এ জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার না করাই ভালো। কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারে সামান্যতম অ্যাবরেশন রোগী বুঝতে না-ও পারেন। এতে অনেক সময় সামান্য থেকে বড় ক্ষত হয়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিসে কর্নিয়ার ক্ষত শুকাতে সময় লাগে বেশি। আধুনিক ডেইলি ওয়ার নরম বা সফট কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। কলকারখানায় কাজ করার সময় বা খেলাধুলার সময় কর্নিয়া যাতে কোনোভাবে আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব কাজের সময় নিরাপদ চশমা ব্যবহার করাও অত্যন্ত জরুরি।