স্বদেশ ডেস্ক:
কোনো কিছুতেই দেশে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার বিস্তার ঠেকানো যাচ্ছে না। এ নিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের চরম ব্যর্থতার চিত্রও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার এ নিয়ে আশার খবর জানিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত সংস্থা অ্যাটমিক এনার্জি রিসার্চ স্টাবলিশমেন্ট। সাভারে অবস্থিত সংস্থাটির দাবি, এরই মধ্যে এডিস মশার প্রজনন ঠেকাতে গবেষণা করে সফলতা পেয়েছে তারা।
প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিউক্লিয়ার রেডিয়েশনের মাধ্যমে পুরুষ এডিশ মশার প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়ার মাধ্যমে এদের বিস্তার ঠেকানো সম্ভব। প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেলে পুরুষ ও নারী এডিসের মিলনে নতুন করে আর মশার জন্ম হবে না। ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মশা নিয়ে যে দুশ্চিন্তা, সেটি থেকে হয়তো দেশ রক্ষা পাবে। এ ক্ষেত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে চীনকে অনুসরণ করতে চান তারা।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের দেশে নতুন নতুন যেসব সংকট ও সমস্যা তৈরি হচ্ছে, সেটি আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতে পারি। কারণ এখন অনেক সমস্যাই গতানুগতিক প্রক্রিয়ায় মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বর্তমানে মশা ও ডেঙ্গু নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত। ফলে আমরা চেষ্টা করছি গবেষণার মাধ্যমে নিউক্লিয়ার রেডিয়েশন দিয়ে পুরুষ এডিস মশার প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করতে। এগুলো ছেড়ে দিলে নতুন করে এডিস মশার বংশবিস্তার হবে না।
বিষয়টি নিয়ে বেশ আশাবাদী বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক। তিনি বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। আশা করছি আগামী দিনগুলোয় মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতা পাব। তবে গবেষণা এবং এ প্রক্রিয়াটি একটু সময়সাপেক্ষ। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। ইতোমধ্যে চীন এ প্রক্রিয়ায় মশা নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে।
অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজলা শেলী বলেন, বিশ্বজুড়েই বিজ্ঞানের মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমরা অল্প কিছু সময় ধরে সেটির গবেষণা শুরু করেছি এবং সফল হয়েছি। আমরা ল্যাবে মশার মুককিট পর্যায়ে চল্লিশ গে নিউক্লিয়ার রেডিয়েশন দিই। এতে প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয় পুরুষ এডিস মশার। তবে ডিম থেকে শুরু করে শুককিট, মুককিট পর্যায়ে আমাদের পুরুষ মশা আগে চিহ্নিত করে আলাদা করতে হয়। আমাদের ল্যাবে যারা কাজ করেন, তারা খুব সফলতার সঙ্গে সেটি করতে পেরেছেন। তবে এসব প্রক্রিয়ার জন্য অধ্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দরকার।
তিনি আরও বলেন, মশা নিয়ে গবেষণায় আমাদের মন্ত্রণালয় আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করছে। আমরা যেটি করছি এটিকে বলে-‘স্টেরিয়াল ইনসেক্ট টেকনিক’। আশা করছি আগামী এক বছরের মধ্যে আমরা মাঠপর্যায়ে স্বল্পপরিসরে কাজ শুরু করতে পারব। তবে বৃহৎ আকারে সারাদেশে করতে হলে সময় লাগবে।