সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন

সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ

সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ

স্বদেশ ডেস্ক:

সাবেক ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী। তার নাম জান্নাতুল ফেরদৌস।

আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নারী জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর অর্থ-সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত এক অসহায় নারী, বাবাহারা সন্তানের অসহায় মা তিনি। তার স্বামী মৃত হাসান আহমেদ পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। পৈতৃক সূত্রে একজন জুটমিলস ব্যবসায়ী ছিলেন। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে জুট রফতানি করতেন। তার স্বামী একসময় পিপলস্ ইন্স্যুরেন্সেরও চেয়ারম্যান ছিলেন। দেশের একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি পুরস্কৃতও হয়েছিলেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ২০২০ সালে ব্রেন স্টোকজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তার স্বামী। সেই সময় তার দেবর কবির আহমেদ ও মূসা এবং তাদের কর্মচারী বিদ্যুৎ ঘোষ বিভিন্ন অজুহাতে কোম্পানির বিভিন্ন ডকুমেন্টস সরাতে শুরু করে। কোম্পানির চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ করা হয় তার স্বামীকে। এ অবস্থা বুঝতে পেরে তার স্বামী তার প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি রক্ষায় ভিডিও বার্তায় কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তা কামনা করেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি রাজধানীর মতিঝিল থানায় জিডিও করেন।

ভুক্তভোগী নারী জানান, ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি তার স্বামী মারা যান। মৃত্যুর পর লাশ দাফনে কোনো রকম পদক্ষেপ না নিয়ে ভুক্তভোগী, তার ৯০ বছরের বৃদ্ধা মা, বোন, ভগ্নিপতিসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু করে। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটির মৃত্যু, সন্তানেরা পিতৃহীন এ পরিস্থিতিতে এক কঠিন বাস্তবতা ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হন বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এ মামলা পল্টন থানা পুলিশ তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। পরে এ তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিলে আদালত তা পুনরায় তদন্তে দেয় ডিবিকে। এ ভুক্তভোগী দাবি করেন, ডিবি প্রধান হারুন তাকে ডেকে নিয়ে দুই কোটি টাকা চান। অন্যাথায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হবে বলে জানিয়ে দেন। টাকা দিতে না পারায় এবং প্রভাবিত হয়ে এ মামলায় চার্জশিট দেয় ডিবি। পরে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তারা। মামলাটি এখন চার্জ শুনানির জন্য ধার্য রয়েছে। আমরা ডিসচার্জ আবেদন করছি। এর ওপর শুনানি হবে। আমরা ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করছি।

ভুক্তভোগী বলেন, তার স্বামী প্রথমে স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু তার দেবর ও কর্মচারীদের পরস্পরের যোগসাজশে ও ষড়যন্ত্রে কোম্পানি-ব্যবসা বাণিজ্য এবং সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা দেখে আবারো স্ট্রোক করেন এবং মৃত্যুবরণ করেন। তারপরও ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি, মিথ্যা মামলা করে সম্পত্তি আত্মসাতের লক্ষ্যে মামলা দিয়ে আমাদের নির্মূলের অপচেষ্টা চলে।

তিনি বলেন, তার স্বামীর বেতনভুক্ত কর্মচারী বেইলি রোডে কয়েক কোটি টাকার ফ্ল্যাটসহ বিপুল অর্থের মালিক। এসবই তার স্বামীর অসুস্থতার সুযোগে আত্মসাৎ করা অর্থ। দেবররা তার স্বামীর মৃত্যুর পরে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আত্মসাৎ, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে দেবরদের ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় ২০২৪ সালের ৩ জুলাই মামলা করি।

মামলায় আসামি গ্রেফতারের পর আমাদের (বাদি) জিম্মায় জামিন দেয়া হয়। জামিনের শর্ত ছিল যে আইন অনুযায়ী তার স্বামীর সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু তা তারা প্রতিপালন না করে ভয়ভীতি হুমকি ধমক দিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে বেশকটি এসএমএসও গণমাধ্যমকর্মীদের দেখান এ ভুক্তভোগী।

তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনা সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি এখন জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ঙ্কর এক বাস্তবতার মুখোমুখি আমার পুরো পরিবার।’

সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পরিবার ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আর্তনাদ জানান ভুক্তভোগী এ নারী, তার শিশু সন্তান, ৯০ বছরের বৃদ্ধা মাসহ পরিস্থিতির শিকার সবাই।

সূত্র : বাসস

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877