স্বদেশ ডেস্ক: টাঙ্গাইলে যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর ফলে তার কারামুক্তিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রানার আইনজীবীরা।
এর আগে গত ১৯ জুন হাইকোর্ট এ মামলায় রানাকে স্থায়ী জামিন দেন। জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি একে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এরপর রানার জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন জানায়। সোমবার এই আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হয়।
রানার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো বশিরউল্লাহ।
২০১২ সালের ১৬ জুলাই টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন মোটরসাইকেলে টাঙ্গাইল শহরে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন টাঙ্গাইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা করে।পরে মামলটি তদন্ত করে একই বছরে ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে পুলিশ।
পরে এ মামলায় গ্রেপ্তার খন্দকার জাহিদ, শাহাদত হোসেন ও হিরন মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যার ঘটনায় আমানুর রহমান খান রানার নাম উঠে আসে।
গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, রানার নির্দেশেই যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালত গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় রানার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হলে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে যান। হাইকোর্ট ৬ মার্চ এ মামলায় সাবেক এমপি রানাকে ৬ মাসের জামিন দিয়ে রুল জারি করেছিলেন।
এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে গেলে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ১৪ মার্চ জামিন স্থগিত করে দেন। পরে ২৩ এপ্রিল আপিল বিভাগও স্থগিতাদেশ বহাল রেখে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। সেই ধারাবাহিকতায় রুল শুনানি শেষ করে হাইকোর্ট রানাকে স্থায়ী জামিন দেন।
এর আগে গত ১৪ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক এই এমপিকে ৬ মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ২৫ মার্চ জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগ আবেদনটির শুনানি নিয়ে ১ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি খারিজ করে দিলে এ মামলায় রানার জামিন বহাল থাকে।
এ হত্যা মামলায় রানা আত্মসমর্পণ করলে আদালত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। রানার বিরুদ্ধে মোট দুটি মামলা রয়েছে এবং দুটি আপিল বিভাগে জামিন বহাল থাকায় রানার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।