স্বদেশ ডেস্ক:
পবিত্র আশুরা আজ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো এই দিনটি পালন করছে বাংলাদেশের শিয়া ধর্মাবলম্বীরাও। দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকার হোসেনি দালানের ইমামবাড়া থেকে শুরু হয়েছে তাজিয়া মিছিল। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মিছিলটি বের হয়। কারবালার রক্তাক্ত স্মৃতির স্মরণে এই মিছিলে মানুষের ঢল নেমেছে।
জানা গেছে, তাজিয়া মিছিলটি বকশিবাজার, উর্দ্দুরোড, লালবাগ চৌরাস্তা, ঘোড়া শহীদের মাজার, আজিমপুর, নিউমার্কেট হয়ে জিগাতলা (ধানমন্ডি লেকের কাছে) গিয়ে শেষ হবে। পথের দুপাশে রয়েছে উৎসুক জনতার ভিড়। মানুষ ছাদে দাঁড়িয়ে, জানালা দিয়ে মিছিল উপভোগ করছে। পুরো মিছিল ঘিরে রয়েছে পুলিশ, র্যাবসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এবার তাজিয়া মিছিলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি বহন এবং আতশবাজি ও পটকা ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে চকবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এখানে কোনো অঘটন ঘটার সম্ভাবনা নেই।’
এদিকে হোসেনি দালান থেকে তাজিয়া মিছিলসহ শিয়া সম্প্রদায়ের সব ধর্মীয় রীতি (রিচুয়াল) ভালোভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। তিনি বলেন, ‘আমি বলব, শুধু পুলিশের উপস্থিতি নয়, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন পোশাকে এবং সাদা পোশাকে কাজ করছে এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আয়োজকদের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি, আশা আশা করছি, যে রিচুয়ালগুলো আছে, তা ভালোভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে এবং আপনারা দেখছেন সকাল থেকে ইমামবাড়া সুশৃঙ্খলভাবে লাইন ধরে তল্লাশির মাধ্যমে প্রবেশ করছে।’
এর আগে গতকাল সোমবার ইমামবাড়ায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শত শত শিয়া মুসলিম কারবালার বিয়োগাত্মক ঘটনা স্মরণে ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করছে বিভিন্ন রীতি-নীতি। তাজিয়া মিছিল ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অনুষ্ঠান ঘিরে হোসেনি দালান এলাকা ও আশপাশে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। পুরো এলাকা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীয় সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। এবার আশুরা উপলক্ষে হোসেনি দালানে প্রবেশের ক্ষেত্রে রয়েছে যথেষ্ট কড়াকড়ি। পুলিশের পাশাপাশি ইমামবাড়া কর্তৃপক্ষ প্রায় ২০০ স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।
মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের একটি দিন পবিত্র আশুরা। কারবালায় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের মৃত্যুর দিনটি (১০ মহররম) বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা শোকের আবহে পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে আশুরা।