শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ফিলিস্তিন সমস্যার ন্যায্য ও স্থায়ী সমাধান চায় চীন বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ১৫ সদস্যের দলে যাদের রাখলেন ওয়াকার দীর্ঘ বিরতি শেষে বলিউডে ফিরছেন প্রীতি জিনতা রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী গরমে পোষা প্রাণীর যত্ন দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি
যে লজ্জার রেকর্ডে নাম লেখাল বাংলাদেশ দল

যে লজ্জার রেকর্ডে নাম লেখাল বাংলাদেশ দল

স্বদেশ ডেস্ক:

চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ২২৪ রানে। টেস্ট ক্রিকেটের নবীনতম দলের সাথে বাংলাদেশের এমন হারের পর আলোচনা-সমালোচনা এখন সবখানে।

এর ফলে যে একটা অন্যরকম রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল! আর তা হলো বিশ্ব ক্রিকেটের প্রথম দল হিসেবে টেস্টে ভিন্ন দশটি দেশের কাছে প্রথম দেখাতেই হারলো বাংলাদেশ।

যার শুরুটা হয়েছিল ২০০০ সালে। সে বছরের ২৬ জুন আইসিসির দশম দেশ হিসেবে টেস্ট স্ট্যাটাস পায় বাংলাদেশ। আর দশই নভেম্বর ঢাকায় নিজেদের উদ্বোধনী টেস্টে তারা মুখোমুখি হয় ভারতের।

প্রথম টেস্ট
বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দারুণ লড়াই করেছিল।

বিশেষ করে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের ১৪৫ রান নজর কাড়ে ক্রিকেট বিশ্বের।

তবে ২য় ইনিংসের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ চতুর্থ দিন পার হওয়ার আগেই ম্যাচটি হেরে যায় ৯ উইকেটে।

জিম্বাবুয়েতে দ্বিতীয়

নিজেদের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পরের বছর জিম্বাবুয়ে যায় বাংলাদেশ দল।

হারারেতে স্বাগতিকদের সাথে প্রথম দেখায় সে ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে যায় ইনিংস ও ৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে।

এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ
একই বছর এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ সাদা পোশাকে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সাথে প্রথম দেখায় হারের বৃত্ত পূরণ করে।

পঞ্চম দল নিউজিল্যান্ড
২০০১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ডের। কিন্তু ফলাফল ঐ একই।

অর্থাৎ প্রথম দেখাতেই হার। নিজেদের মাটিতে কিউইরা সহজে ইনিংস ব্যবধানে জয়লাভ করে।

এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা
দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে ২০০২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিল বাংলাদেশ দল।

কিন্তু সেই সময়ের কার্স্টেন-স্মিথ-ক্যালিসদের নিয়ে গড়া দলের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি জাভেদ ওমর-হাবিবুল বাশাররা।

যথারীতি ইনিংস ব্যবধানে জেতে স্বাগতিক প্রোটিয়ারা।

আনলাকি সেভেন
বাংলাদেশের সাথে প্রথম দেখায় জয় পাওয়া সাত নম্বর দলের নাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

২০০২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে আসে ক্যারিবীয়রা।

কিন্তু গেইল-চন্দরপলদের দল একটুও ছাড় দেয়নি স্বাগতিকদের। ইনিংস ও ৩১০ রানের বিশাল জয়েই সিরিজ শুরু করে তাঁরা।

আটে অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার সাথে সাদা পোশাকে বাংলাদেশের প্রথম দেখা হয় ২০০৩ সালের জুলাইয়ে।

সে সময়ের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা দাঁড়াতেই দেয়নি বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্টই জিতেছিল ইনিংস ব্যবধানে।

ন’য়ে ইংল্যান্ড
ক্রিকেটের জনক ইংলিশদের সাথে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ খেলার সুযোগ আসে টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির ঠিক তিন বছর পর।

আগের ম্যাচেই মুলতানে নিজেদের প্রথম জয়ের খুব কাছ থেকে ফেরত এসেছিল টাইগাররা। সে ম্যাচ পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত জিতেছিল ১ উইকেটে।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ খেলে বাংলাদেশ। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি তাতে।

নবম দেশ হিসেবে ইংলিশদের বিপক্ষেও পরাজিত দলের নাম হয় বাংলাদেশ।

সবশেষে আফগানিস্তান
আগের নয়টি দলের সঙ্গে বাংলাদেশ হেরেছিল টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির একেবারে তিন বছরের মধ্যেই।

সে সময় র‍্যাঙ্কিংয়েরও তলানিতে থাকতো টাইগাররা। তাই অভিজ্ঞতাহীন নতুন দল বাংলাদেশের পরাজয় খুব একটা অবাক করেনি কাউকেই।

কিন্তু ২০১৭ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া আফগানিস্তানের সাথে বাংলাদেশের যখন প্রথম দেখা ততদিনে সাদা পোশাকে ১৯ বছর পার করে ফেলেছে বাংলাদেশ।

আর র‍্যাঙ্কিংয়েও প্রথমবারের মতো উপরে থেকে কোন দলের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামে টাইগাররা।

কিন্তু ২২৪ রানের হার শেষ পর্যন্ত এই অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড উপহার দেয় টাইগারদের।

আর কোন দলকেই যে টেস্টে ১০টি ভিন্ন দলের বিপক্ষে হারতে হয়নি। প্রথম দেখায় তো নয়ই।

তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে জিম্বাবুয়ে এখনো পর্যন্ত দুই নতুন টেস্ট সদস্য আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হয়নি।

টেস্ট দল জয় পরাজয়
ইংল্যান্ড ১০ দলের বিপক্ষে (এখনো আফগানিস্তানের সাথে খেলেনি) ৮ দলের কাছে (জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড বাদে)
অস্ট্রেলিয়া ৯ দলের বিপক্ষে (আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলেনি) ৮ দলের কাছে (জিম্বাবুয়ে বাদে)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ দলের বিপক্ষে (আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলেনি) ৮ দলের কাছে (জিম্বাবুয়ে বাদে)
পাকিস্তান ১০ দলের বিপক্ষে ( এখনো আফগানিস্তানের সাথে খেলেনি) ৮ দলের কাছে (বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড বাদে)
ভারত ১০ দলের বিপক্ষে (এখনো আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলেনি) ৮ দলের কাছে (বাংলাদেশ-আফগানিস্তান বাদে)
দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ দলের বিপক্ষে (আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলেনি) ৭ দলের কাছে (জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ বাদে)
নিউজিল্যান্ড ৯ দলের বিপক্ষে (আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলেনি) ৭ দলের কাছে (জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ বাদে)
শ্রীলঙ্কা ৯ দলের বিপক্ষে (আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলেনি) ৮ দলের কাছে (জিম্বাবুয়ে বাদে)
জিম্বাবুয়ে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯ দলের কাছে (আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলেনি)
বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০ দলের কাছে (আয়ারল্যান্ডের সাথে এখনো খেলেনি)
আফগানিস্তান আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের কাছে
আয়ারল্যান্ড নেই পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের কাছে
তাই এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরেই তাঁদের অবস্থান। অর্থাৎ জিম্বাবুয়ে এখন পর্যন্ত হেরেছে মোট নয়টি দলের বিপক্ষে। আর জিতেছে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ এই তিন দলের বিপক্ষে।

তবে বাংলাদেশে জিতেছে জিম্বাবুয়ের চেয়ে বেশি মোট পাঁচটি দলের বিপক্ষে। দলগুলো হল-জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া।

এদিকে সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই টেস্ট জয়ের রেকর্ড এখন ২০ বছর বয়সী রশিদ খানের।

আর সবচেয়ে দ্রুততম দুটি টেস্ট জয়ের রেকর্ডেও অস্ট্রেলিয়ার পাশে নাম লিখিয়েছে আফগানিস্তান। অজিদের মতো তাঁরাও নিজেদের ৩য় টেস্টেই ২য় জয় তুলে নিলো।

যেখানে বাংলাদেশের দুটি টেস্ট জিততে ম্যাচের হিসেবে লেগেছে সবচেয়ে বেশি ষাট ম্যাচ।
সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877