রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
১৫ই আগষ্ট নিয়ে ড. সিদ্দিকুর রহমান মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর

১৫ই আগষ্ট নিয়ে ড. সিদ্দিকুর রহমান মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর

হাকিকুল ইসলাম খোকন : ২২ আগষ্ট নিউইয়র্কে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকায় ড. সিদ্দিকুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য আমার দৃষ্টি গোচর করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, সাবেক জিএস, বাকসু’ ৭৯ ও আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি উল্লেখ করেছেন আমি তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছি। ড. সিদ্দিকের কাছে আমার প্রশ্ন? কোনটিকে তিনি অপপ্রচার বলছেন? ১) সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ড. সিদ্দিকুর রহমানের দেওয়া স্বাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছন ‘৭৫এর ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে শত শত ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল, মিছিল শেষে সমাবেশ, ওয়ারেণ্ট ইস্যু, এ খবরে আর্মি এসে তাকে তুলে নেয়া, গ্রেফতার ও দফায় দফায় নির্যাতন করা হয়েছেন। যা সম্পুর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বরণ দিবসের মত স্পর্শকাতর ইস্যু নিয়ে ড. সিদ্দিকুর রহমান যে মিথ্যাচার করে চলছেন তার বিরুদ্ধে সত্য তুলে ধরা কি অপপ্রচার? ২) ’৭৩ এ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুকে বাকসু’র পক্ষ থেকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুঠানটি ড. সিদ্দিকুর রহমান দাবী করছেন তার পরিচালনায় অনুঠিত হয়েছে। এ রকম ডাহা মিথ্যা কথা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করে বাহবা নেওয়ার বিরুদ্ধে সত্য তুলে ধরা কি অপপ্রচার? বাকসু’র তৎকালীন সহ-সভাপতি জনাব নজিবুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক ডঃ আবদুর রাজ্জাকের কাজ থেকে জানা, ডঃ সিদ্দিকুর রহমানের দাবী সম্পুর্ন অসত্য। বাকসু’র তৎকালীন সাধারন সম্পাদক ডঃ আবদুর রাজ্জাকের পরিচালনায় অনুঠানটি অনুঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সংবর্ধনা অনুঠান এ রকম মিথ্যাচার ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। ৩) ডঃ সিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করেছেন তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার তথাকথিত প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্বদান করায় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে চাকুরী চ্যুতির প্রসিডিং শুরু করেছিল। ফলে তিনি পালিয়ে আমেরিকা আসছেন। যা সম্পুর্ন মিথ্যা। উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশে আসার জন্য উনাকে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ছাড়পএ ও সরকারী জিও নিয়েই আসতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় তার বিরুদ্ধে চাকুরী চ্যুতির প্রসিডিং শুরু করলে উনি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের ছাড়পএ কিভাবে পেলেন? তার বিরুদ্ধে চাকুরী চ্যুতির প্রসিডিং শুরু ও পালিয়ে আমেরিকা আসা। যা সম্পুর্নই মিথ্যা। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে চাকুরী চ্যুতির প্রসিডিং শুরুর প্রপ্নই আসে না। ডঃ সিদ্দিকুর রহমান এ সব মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রকৃত সত্য তলে ধরা কি অপপ্রচার? আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি ডঃ সিদ্দিকুর রহমান যদি এ গুলোর প্রমান দিতে পারে, আমি যে কোন শাস্তি মাথা পেতে নেবো। ৪) ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠনের ঘোষনার পর তাঁর সেই ২য় বিপ্লবের কর্মসূচির সমর্থনে ও তাঁকে অভিনন্দন জানানো উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মোসলেমউদ্দিন আহমেদ চৌধূরী মহোদয় নেতৃত্বে দুইটি বাস বোঝায় করে ঢাকায় গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর সাথে স্বাক্ষাৎ করতে। অথচ সিদ্দিকুর রহমান সেই মহতি অনুঠানে না গিয়ে এখন প্রলাপ বকছেন যে, তিনি শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক ছিলেন, ১০০ জন শিক্ষকের নাম ভিসিকে দিয়েছিলেন! শিক্ষক সমিতির তথাকথিত সাধারন সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান কাছে আমার প্রস্ন বঙ্গবন্ধুর সাথে স্বাক্ষাৎ অনুঠানে নিজে গেলেন না, ১০০ জন শিক্ষকের নাম ভিসিকে দিয়েছিলেন, উনারাও কেউ গেলেন না, কি উদ্দেশে আমরা বঙ্গবন্ধুর সাথে স্বাক্ষাৎ গিয়েছিলাম, তাও ভূলভাল বকছেন-যেমন আমার বয়স ছিল না বাকশালে যোগদান করতে, আবার আমাকে -বাকশালে যোগদান করতে, আবার আমাকে বিএনপি’র ভাষায় বাকশালী বলে গালি দিতেও ছাড়ছেন না, উনি বিভিন্ন সময় যে সব ব্যক্তির নাম রেফারেঞ্জ হিসাবে দিচ্ছেন তারা সবাই মৃত ব্যক্তি! সিদ্দিকুর রহমানের এ সব মিথ্যা প্রলাপ কি প্রমান করে না যে, উনি কখনই রাজনীতির সংস্লিটতায় ছিল না। তাছাড়া উনি উপহাস করে উল্লেখ করে বলছেন, আমি কোথায় ছিলাম? উনি আমাকে চিনবেন না, কারন উনার তো কোন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না। যাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল তারা সবাই আমাকে জানে। তবুও সিদ্দিকুর রহমানের জ্ঞাতার্থে আমি কোথায় ছিলাম তার একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা পেশ করলাম। ‘৭৩-‘৭৪ সালে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে থাকালীন আমি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হল ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি নির্বাচিত হই। ‘৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট সকাল বেলাতেই তৎকালীন বিরোধী ছাত্র সংগঠনের উৎশৃখল ও সএাসী একটি দল অকস্মাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার আবাসিক হলের ব্লকে ঢুকে হামলা চালায় ও আমরা অবরুদ্ধ হই। ’৭৬ সালে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ভিপি নির্বাচিত হই। পরবর্তীতে ’৭৭ সালে আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সাধারন সম্পাদক এবং ’৭৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাএ সংসদ (বাকসু’র) নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক ছিলাম। এছাড়া বাংলাদেশ ছাএলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলাম এবং ’৮১ তে বাকসু’র নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে ভিপি পদে মনোনয়নও পেয়েছিলাম। সেই সময়ে আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তৎকালীন স্বৈরাচার জিয়া সরকার অস্থির হয়ে আরো অত্যাচারী হয়ে উঠেছিল। কিডন্যাপ, মার্ডার করার সব চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে বাকসু’র জিএস পদ থেকে সড়ানোর জন্য অন্যায় ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য কোন কারন দশাও নোটিশ ছাড়াই তার স্পেশাল ক্ষমতা বলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে রাজটিকেট ইস্যু করে। প্রসংগত উল্লেখ্য যে, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে যাই, ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করি, স্বাধীনতার পর ‘৭২-‘৭৩ সনে ফরিদপুর সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ ছাএলীগ শাখার সাধারন সম্পাদক ও কলেজ ছাএ সংসদের বার্ষিকী সম্পাদক হিসাবে নিবাচিত হই। এছাড়াও ‘৭৩ দৈনিক বাংলার বানী পত্রিকার রিপোর্টার ও ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হিসাবে কাজ করি। এবার ডঃ সিদ্দিকুর রহমান কোথায় কি ছিলেন, কি করতেন, তা নিশ্চয়ই সবাইকে তিনি জ্ঞাত করবেন? ৫) ’৭৫ এর ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যার পর ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে হত্যা ও জেল হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে স্বরণকালের বৃহওর ছাএ প্রতিবাদ মিছিলের আমি ছিলাম অন্যতম উদ্যোগতা, আয়োজক ও পরিচালক। ডঃ সিদ্দিকুর রহমান বলছেন ঐ ছাএ প্রতিবাদ মিছিলের সামনে তিনি ছিলেন। যা সম্পুর্ন মিথ্যা। তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, তিনি আমাকে সেই মিছিলে দেখেনি। তিনি যদি ঐ মিছিলে থেকে (তার কথামত) আমাকে না দেখে থাকেন? তার অর্থ দাড়ায়, তিনিই ঐ মিছিলে ছিলেন না। কারন ঐ প্রতিবাদ মিছিলের আমি ছিলাম অন্যতম আয়োজক ও পরিচালক। ৬) ডঃ সিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করেছেন যে, খুনী জিয়া তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিল। আমার প্রপ্ন কেন জিয়া তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিবে? উনি ’৭৫ সনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি ছিলেন? ’৭৫ সনে উনি একজন নবীন লেকচারার মাত্র। উনি কখনো ছাএ সংগঠন করেনি বা ছাএ নেতাও ছিলেন না যে জিয়া উনাকে ভয় পেয়ে গ্রেফতারের নির্দেশ দিবে! জিয়া যদি কোন গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েই থাকে সেটা আমরা যারা ঐ প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছি তাদের বিরুদ্ধেই দিয়েছিল। সুতরাং আশাকরবো ডঃ সিদ্দিকুর রহমান সাহেব এই সব মিথ্যা, ভিত্তিহীন ভৌতিক গল্প তৈরী করা থেকে বিরত থাকবেন। ৭) ডঃ সিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাএলীগ গঠনের সময় থেকেই তিনি ছিলেন, কি ছিলেন, তা বলেননি তিনি। এবার তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাএলীগ শাখার প্রথম সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিঃ রহমতউল্ল্যা সাহেবকে স্বাক্ষী মেনেছেন। ডঃ সিদ্দিকুর রহমান সাহেব এই প্রথম একজন জীবিত ব্যাক্তিকে স্বাক্ষী মানলেন। এর আগে তিনি অনেকেরই রেফারেঞ্জ দিয়েছেন যারা সবাই মৃত। ইঞ্জিঃ রহমতউল্ল্যা সাহেব একজন পোড় খাওয়া নেতা। তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাএলীগ শাখার প্রথম সাধারন সম্পাদক এবং পরবর্তীতে তিনি বাকসু’র ভিপি নিবাচিত হয়েছিলেন। আমরা দেখি ডঃ সিদ্দিকুর রহমান সম্পর্কে তার কি বক্তব্য। এখানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাএলীগ শাখার প্রথম সাধারন সম্পাদক এবং পরবওীতে তিনি বাকসু’র ভিপি ইঞ্জিঃ রহমতউল্ল্যা সাহেবের ফেস বুক থেকে সিদ্দিকুর রহমান সম্পর্কে কিছু তথ্য যোগ করা হলোঃ “যুক্তরাষ্ট্র হতে ১১ই জুলাই প্রকাশিত সাপ্তাহিক আজকাল নামক একটি পত্রিকায় আমার আমার সহপাঠী ও বন্ধু যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড.সিদ্দিকুর রহমানের সাখ্যাতকারটি দেখলাম। উক্ত সাখ্যাতকারে ড. সিদ্দিকুর রহমানের তথ্যগত কিছু ভুল রয়েছে। যেমন ১৯৬৮/১৯৬৯ সনে তাঁরা কয়েকজন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। এই তথ্যটি সঠিক নয়। বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের ১ম কমিটি গঠিত হয়েছিল ১৯৬৭ সনে। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন এম.এসসি কৃষি অর্থনীতির তদানীন্তন ছাত্র জনাব মেছের উদ্দিন আহমেদ। আমি শামসুল হক হলে ছিলাম। তিনিও একই হলে ছিলেন। আমি ছিলাম প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। ড. সিদ্দিকুর রহমান মেছের ভাইর নাম উল্লেখ না করে কুতুবউদ্দিন উল্লেখ করেছেন। ছাত্র লীগ প্রতিষ্ঠার সাথে ড. সিদ্দিকুর রহমান ছিলেন না। প্রকৃত ইতিহাস হল ১৯৬৯ সনে গঠিত ছাত্রলীগের ২য় কমিটিতে সভাপতি ছিলেন জনাব আবুল ফয়েজ কুতুবী এবং আমি আবারও ছিলাম সাধারণ সম্পাদক। আমার দুর্ভাগ্য যে, আমার বন্ধু আমার নামটিও বলতে ভুল করেছেন“। ৮) ২০১১ সনে জননেএী শেখ হাসিনা যুক্তরাস্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন দেন। ডঃ সিদ্দিক গং রাতের অন্ধকারে জননেএীর শেখ হাসিনার অনুমোদিত কমিটি সিজারিং করে ত্যাগী-পোড় খাওয়া ও বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের নেতা-কমীদের বাদ দিয়ে ছাএ শিবির, ছাএদল, কিং পার্টি ও একই ফ্যামেলীর ৫ জন সদস্যের সম্মনয়ে গঠিত কমিটি প্রকাশ পেলে, ত্যাগী নেতা-কমীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ত্যাগী নেতা-কমীরা ছাএ শিবির, ছাএদল, কিং পাটি সম্মনিত কমিটির কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ পর্যায়ে দলীয় কাজ অব্যহত রাখতে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের নেতা- কর্মীদের নিয়ে প্রায় ৩০০ জন নেতা-কর্মীর সম্মনয়ে গড়ে উঠে একটি প্লাটফর্ম, যার নাম ছিল নর্থ আমেরিকা আওয়ামীলীগ। শুরুতের ইউএস স্ট্রেট ডিপাটমেণ্টে প্রতিনিধি প্রেরন, পদ্মাসেতু ফান্ডিং ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বহিঃবিশ্বে সর্বপ্রথম জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে সমাবেশ
ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেণ্টে বরাবর অবিরাম পএ প্রেরন প্রোগ্রামের ফলে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কাণ্ট্র ম্যানেজার পদ্মাসেতু ফান্ডিং বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের বর্তমান অবস্থান ব্যাখ্যা দিয়ে আমাদের নামে পত্র পাঠান। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সাজা প্রাপ্ত খুনিদের দেশে ফিরিয়ে সাজা কার্যকর সহ অনেক কর্মতৎপরতা/কর্মসূচী অব্যহত ছিল। ২০১২ সনে জননেত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক এলে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করি এবং কোন প্রেক্ষিতে নর্থ আমেরিকা আওয়ামীলীগ গঠন হলো তার ব্যাখ্যা করি। এছাড়া ডঃ সিদ্দিক গং ইউএস আওয়ামীলীগ গঠনে কি কি কারসাজি করেছে তাও নেএীকে অবহিত করা হয়। নেএী সব কিছু শুনে ডঃ সিদ্দিক গংকে ভৎষনা করেছিলে এবং অবিলম্বে নর্থ আমেরিকা আওয়ামীলীগ সদস্যদের ইউএস আওয়ামীলীগ সাথে সম্মনয় করার নিদ্দেশ দিলেন এবং সজীব ওয়াজেদ জয়কে সমন্বয় করার দায়িত্ব দিলেন। সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাথে কয়েক দফা আলোচনা পর তিনি চুড়ান্ত সিন্ধান্ত দিলেন নর্থ আমেরিকা আওয়ামীলীগের ১৫ জন সদস্য যথাক্রমে ৫ ইউএস আওয়ামীলীগে, ৫ জন সিটি আওয়ামীলীগে এবং ৫ স্ট্রেট আওয়ামীলীগে আন্তভূক্তি করার। ডঃ সিদ্দিকুর রহমান নর্থ আমেরিকা আওয়ামীলীগের ৫ জন সদস্য ইউএস আওয়ামীলীগে আন্তভূক্তি করলেও নেএী ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশ অমান্য করে আজ পর্যন্ত ৫ জন সিটি আওয়ামীলীগে এবং ৫ স্ট্রেট আওয়ামীলীগে আন্তভূক্তি করা হয়নি। আমার প্রস্ন জননেএী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশ অমান্য করে চলছে কে? গত ৮ বছর নর্থ আমেরিকা আওয়ামীলীগের কোন অস্থিস্ত নাই। কিন্তু কারনে অকরনে নর্থ আমেরিকা আওয়ামীলীগ নিয়ে ডঃ সিদ্দিকুর রহমান প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করেই চলেছে অথচ ডঃ সিদ্দিকুর রহমান নিজেই অগঠনতান্ত্রিকভাবে বিশ্ব আওয়ামী লীগ গঠন করে এবং তার সভিপতি বনে চরম গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজ করেছেন। তাই প্রত্যেকেরই আয়নায় মুখ দেখা উচিৎ। ৯) ডঃ সিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করছেন যে, আমি তার প্রিয় ছাএ। আমি উনার ছাএ হওয়ার কোন অবকাশ নাই। কারন বিশ্ববিদ্যালয়ে উনার আর আমার সম্পুর্নই আলাদা ডিসিপ্লিলন। উনি পলিটিক্যালী আমাকে ছোট করার জন্যই এ সব মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করছেন। তাছাড়া উনিতো শিক্ষকতার চাইতে লাভজনক পদ ”বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল অর্থাৎ গ্যারেজ ইন- চার্জ” হিসাবে কাজ করতেন।
১০) সত্য সব সময়েই অপ্রিয়। সত্যকে গ্রহন করাও খুব কঠিন কাজ। ডঃ সিদ্দিকুর রহমানের সকল অসত্য ও মিথ্যাচার সমর্থন করলেই কৃতজ্ঞ হওয়া যায়। আর সমর্থন না করলেই তাকে অকৃতজ্ঞ বলে থাকেন তিনি। ১১) ডঃ সিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করেছেন যে, তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র/শিক্ষক সংগ্রামে অন্যতম একজন হিসেবে ছিলাম! আমার প্রশ্ন উনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি ছিলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র/শিক্ষক সংগ্রামে অন্যতম একজন হিসেবে ছিলেন? উনি কোন কোন সংগ্রামের সাথে ছিলেন তা যদি একটা তালিকা প্রকাশ করতেন, তাহলে পাঠককুল উনাকে বুজতে পারতেন এবং বাহবা পেতেন! তবে আমি চ্যালেঞ্জ রেখে বলছি ’৭৩ থেকে ’৮২ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ১০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি এক মুহুর্তের জন্যেও উনাকে কোন সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিংএ দেখি নাই। উনি উল্লেখ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে জনাব কর ছিলেন না। ডঃ সিদ্দিকুর রহমান আন্দোলন-সংগ্রামে থাকলে উনি ঠিকই আমাকে দেখতে পেতেন। যেহেতু উনি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না, তাই উনি আমাকে দেখবেন কিভাবে?
১২) ডঃ সিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করেছেন যে, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাকসু নির্বাচনে মরহুম ড. ফয়সাল আহমেদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান কে ছাত্রলীগ থেকে যথাক্রমে ভিপি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন তিনি দিয়েছিলাম জনাব রহমতুল্ল্যা ও কুতুবী ভাই সহ নমিনেশন বোর্ডের সদস্যদের সহযোগিতায়। আমার প্রশ্ন ড. সিদ্দিকুর রহমান নমিনেশন বোর্ডের সদস্য না হয়ে কিভাবে ভিপি ও জিএ পদে নমিনেশন দিলেন? সুতরাং ড. সিদ্দিকুর রহমানের এসব মিথ্যাচার হিটলারের গোয়েবলসীয় তথ্যকে হার মানায়। ড. সিদ্দিকুর রহমান সম্পকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাএলীগের প্রথম সভাপতি আবুল ফয়েজ কুতুবী ভাই কি বলছেন তা সকলের অবগতির জন্য এখানে দেওয়া হলো। “গত ২২ আগস্ট ২০২০, নিউইয়র্ক থেকে আজকাল পত্রিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামী লীগের সভাপতি ডক্টর সিদ্দিকুর রহমানের বিবৃতির ৫ নং অনুচ্ছেদেরপ্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। জনাব সিদ্দিকুর রহমান তাতে বলেছেন “ডক্টর ফয়সাল আহমেদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান কে ছাত্রলীগ থেকে যথাক্রমে ভিপি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন আমি দিয়েছিলাম রহমতউল্লাহ ও কুতুবি ভাই সহ নমিনেশন বোর্ডের সদস্যদের সহযোগিতায়”। আমি ১৯৭০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী এবং নাজমুল আহসান এর প্যানেলের মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ছিলাম। এই প্যানেলের মনোনয়ন সংক্রান্ত কোন প্রক্রিয়ায় জনাব সিদ্দিকুর রহমান সম্পৃক্ত ছিলেন না। এটা অনেকদিন আগের কথা, ৫০ বছর পার হয়ে গেছে, অনেক কিছু মনে থাকে না। তবে এই ঘটনা আমার স্পষ্ট মনে আছে”। ১৩) আমি আগেও বহুবার উল্লেখ করেছি, ড. সিদ্দিকুর রহমান সাহেব তার সাথে আমার ব্যক্তিগত কোন বিরোধ নাই। উনার সাথে আমার মতপার্থক্য একান্তই রাজনৈতিক। আমি কখনই ব্যক্তি সিদ্দিকুর রহমান বা তাঁর পরিবারের সদস্য নিয়ে কোথাও কোন দিন কোন কথা বলি না। অথচ ড. সিদ্দিকুর রহমান বারংবার আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নানাবিধ অশ্রাব্য বক্তব্য ও মন্তব্য মিডিয়াতে দিয়ে আমার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যা মোটেই শোভনীয় নয়। তাই তাকে আবারো স্বরণ করিয়ে দিচ্ছি, তিনি যদি এ প্রক্রিয়া অব্যহত রাখেন তাতে তিনি নিজেও ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। ১৪) ড. সিদ্দিকুর রহমান চরম মিথ্যার উপর ভর করে চলচ্ছেন। তার কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে তিনি হিটলারের গোয়েবলস তত্ত্ব অনুসরন করে চলেছেন। অর্থাৎ অসত্যকে সত্যে রুপ দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। মিথ্যা দিয়ে সাময়িক ভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করা গেলেও, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সত্যের কাছে অসত্যের পরাজিত হবে। সুতরাং মিথ্যাকে সত্য বলে চালানোর বাসনা কখনই পূর্ন হওয়ার নয়।
সাবেক জিএস, বাকসু’ ৭৯ ও আওয়ামী লীগ নেতা

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877