৪০ বছরের পর থেকে নারীদের শরীরে বার্ধক্যের ছাপ দেখা দিতে থাকে। এর কারণ হিসেবে নিজের শরীরের প্রতি নারীদের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। হাজার কাজের মধ্যেও ঠিকমতো শরীরের যত্ন নিতে পারলে কেবল ৪০ নয় ৬০ বছরেও অনায়াসেই যৌবন ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তারা।
এ ছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, দৈননন্দিন খাবারের তালিকায় নিচের খাবারগুলো রাখলেও ৪০-এর পরেও সতেজ ত্বক ও যৌবন ধরে রাখা যায়।
তাহলে দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন খাবার শরীরের ভেতরে গিয়ে বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ব্লুবেরি
প্রতিদিনই নানা কাজে আমাদের রোদে বের হতে হয়। এই রোদ আর দূষণ ত্বকে যে কেবল দাগই ফেলে তা কিন্তু নয়, বরং ত্বকের কোষের ক্ষতিও করে। এ ছাড়া কাজের চাপেও শরীরে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে বলিরেখা, যা ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ ফুটিয়ে তোলে। ব্লুবেরিতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে শরীর থেকে দূর করে। রোদ ও স্ট্রেসের কারণে ক্ষতি হওয়া কোষগুলোকে সারিয়ে তোলে। এ ছাড়া ব্লুবেরিতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি। ভিটামিন সি ত্বকের রিঙ্কলসকে দূরে রাখে।
বেদানা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্বকে কোলাজেন নামে একটি পদার্থ থাকে যা ত্বককে টানটান রাখে। কিন্তু শরীরে উৎপন্ন হওয়া ফ্রি র্যাডিক্যালস ত্বকের এই কোলাজেনকে নষ্ট করে দেয়। ফলে ত্বকে রিঙ্কলস, ফাইনলাইনস ইত্যাদি দেখা দেয়। বেদানার রস শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালসগুলোকে নষ্ট করে দেয়। শুধু তাই নয়, কোলাজেনকেও নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
মাশরুম
বয়স ৪০-এর কোটায় পড়লে কেবল যে ত্বক নষ্ট হয় তা কিন্ত নয়। কোমর ব্যথা, হাড়ের জয়েন্টের ব্যথায় অনেকের ঘুম হারাম হয়ে যায়। ডাক্তাররা বলছেন নারীদের ক্যালসিয়ামের অভাব হাড়ের দুর্বলতার একটি মূল কারণ। আর হাড়ের দুর্বলতা থেকেই এসব রোগের উপক্রম। মাশরুম হলো ভিটামিন ডি’র ভাণ্ডার। ভিটামিন ডি ছাড়া হাড় ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে না। তাই শরীরে ভিটামিন ডি’র পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে মাশরুম খেতেই হবে।
বাদাম
শুধুই ক্যালসিয়াম নয়, ৪০ পার হলেই প্রোটিন, ফাইবার ও মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণগুলোর ঘাটতিও যথেষ্ট পরিমাণে দেখা যায়। এরই সঙ্গে শরীরে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরলের পরিমাণ যা ডেকে আনে হার্টের বিপদ। বাদামের মধ্যে থাকা আখরোট ও আমন্ড কোলেস্টেরল কমানোর জন্য সবচেয়ে উপকারী। একইসঙ্গে শরীরে ঘাটতি হওয়া প্রোটিন ফাইবার ও অন্যান্য উপকরণও সরবরাহ করে এই বাদামগুলোই।
আনারস
ত্বকের মধ্যে থাকা কোলাজেন পদার্থটি তৈরি হতে কয়েকটি অ্যামিনো অ্যাসিড দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চল্লিশের পর থেকে শরীরে এই অ্যামিনো অ্যাসিডের মাত্রা কমে যেতে থাকে। ফলে পর্যাপ্ত কোলাজেন তৈরি হতে পারে না। আনারসে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজের মতো ধাতু যা এই অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করতে প্রধান ভূমিকা রাখে। তাই ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে আনারসের মতো ফলকে ডায়েট থেকে বাদ রাখলে চলবে না।