সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন

তাইওয়ানকে ভাতে মারবে চীন

তাইওয়ানকে ভাতে মারবে চীন

স্বদেশ ডেস্ক:

চীনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে সফর করেছেন। সামরিক হুমকি দিয়ে ঠেকাতে না পেরে এবার পেলোসির তাইওয়ান সফরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে কড়া ব্যবস্থা নিল চীন। তাইওয়ানকে নিশানা করে সাঁজোয়া গাড়ি, যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্কের কুচকাওয়াজের পাশাপাশি তাইওয়ানকে এবার ‘ভাতে মারা’র পরিকল্পনা কষছেন শি জিনপিং। ফলস্বরূপ তাইওয়ানের বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটি।

এদিন চীনের ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জি ফেং মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জরুরি তলব করে পেলোসির সফরের তীব্র প্রতিবাদ করেন। বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে আবারও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে সামরিক আক্রমণ করে তাইওয়ান দখল করবে চীন-এমনটা সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দক্ষিণ চীন সাগরের স্বশাসিত ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানকে নিয়ে চীনের দাবি-দাওয়া নতুন কোনো ব্যাপার নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই তাইওয়ানকে চীন নিজেদের অংশ বলেই দাবি করে এসেছে। যদিও তাইওয়ানের বাসিন্দারা তা মানতে নারাজ। সেই বিবাদ যেন আবার নতুন করে উসকে উঠেছে পেলোসির ঐতিহাসিক সফরকে কেন্দ্র করে। কয়দিন আগেই প্রস্তাবিত সফরের বিরোধিতা করে শি জিনপিং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বলেন, আগুন নিয়ে খেলার ফল হবে মারাত্মক! কিন্তু তাতেও পেলোসির সফর আটকায়নি। এবার চীন যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি হুমকির পাশাপাশি তাইওয়ানকে উচিত শিক্ষা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। তাইওয়ানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সহযোগী চীন। গত বছর দুই দেশের মধ্যে ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার। বেইজিং রাতারাতি তা বন্ধ করে দিয়েছে। পেলোসি তাইপের মাটি ছোঁয়ার আগেই তাইওয়ানের শতাধিক সরবরাহকারীর থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি বন্ধ করে দেয়। আপাতত তাইওয়ান থেকে মাছ এবং ফল আমদানি করা বন্ধ করা হলো-এক বিবৃতিতে জানায় বেইজিং। ফল ও মাছ আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সরাসরি পেলোসির সফরের বিষয়টি উল্লেখ না করে চীনের কাস্টমস প্রশাসনের তরফ থেকে বুধবার জানিয়েছে, অতিরিক্ত কীটনাশক ও প্যাকেজে করোনাভাইরাসের উপস্থিত শনাক্তের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাইওয়ানের সঙ্গে আপাতত সব বাণিজ্যিক লেনদেনও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছে।

যদিও তাইওয়ানের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত করতে বেইজিংয়ের নেওয়া পদক্ষেপ এটিই প্রথম নয়। এর আগে ২০২১ সালের মার্চ মাসে দ্বীপটি থেকে আনারস আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল চীন। আনারসে কীটপতঙ্গ খুঁজে পাওয়ার অভিযোগ তুলে আমদানি বন্ধের সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ওই পদক্ষেপটি আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই বিবেচিত হয়। বেইজিংয়ের এই সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তাইপের কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার বলেছে, তাইওয়ানের পণ্য আমদানি স্থগিত করার ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করেছে চীন। এই অভিযোগে যেসব পণ্য আমদানি স্থগিত করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে মৎস্যজাত পণ্য, চা এবং মধুসহ অন্যান্য পণ্যও রয়েছে। ২৫ বছরেরও বেশি সময় পর ন্যান্সিই প্রথম শীর্ষ স্তরের কোনো মার্কিন কর্মকর্তা, যিনি তাইওয়ানে পা রাখলেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মুহূর্তে হয়তো সরাসরি সামরিক পদক্ষেপের পথে যাবে না চীন। তাই বাণিজ্যিকভাবে তাইওয়ানের ওপর চাপবৃদ্ধির কৌশল নেবে। কারণ তাইওয়ানে আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় কর্তার উপস্থিতির কারণে সামরিক পদক্ষেপ আরও জটিল আকার নিতে পারে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877