স্বদেশ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়ো রাজ্যের ডেটনে বন্দুক হামলায় যেই নয় জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে বন্দুকধারীর নিজের বোনও রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুক হামলাটি ৩০ সেকেন্ডেরও কম সময় স্থায়ী হয়। গুলির শব্দ শোনার কিছুক্ষণ পরই ঐ অঞ্চলের পুলিশ কর্মকর্তারা ২৪ বছর বয়সী কনর বেটসকে ধরাশায়ী করে। বন্দুকধারী বেটস যখন জনাকীর্ণ একটি বারে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন, তখন পুলিশ তাকে গুলি করে।
ডেটনের পুলিশ প্রধান রিচার্ড বিয়েল বলেন, বেটস যদি বারের দরজা দিয়ে ঢুকতে পারতেন, তাহলে ‘ব্যাপক’ প্রাণহানি হতে পারতো। তবে বন্দুকধারীর উদ্দেশ্য এখনো জানা যায়নি। ঐ ঘটনায় অন্তত ২৭ জন আহত হয়। টেক্সাসের এল পাসোতে বন্দুক হামলার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় বন্দুক হামলা ছিল সেটি।
পুলিশ কর্মকর্তা বিয়েল জানান, স্থানীয় সময় রাত ১টা বেজে ৫ মিনিটের দিকে বেটস তার প্রথম গুলিটি করেন। এরপর আরো কয়েক ডজন রাউন্ড গুলি চালান তিনি। নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, স্থানীয় নেড পেপার্স নাইটক্লাবের দরজা দিয়ে দৌড়ে ভেতরে ঢুকছে মানুষজন।
তার কয়েক সেকেন্ড পরই বন্দুকধারী বেটসকে দেখা যায় বারের দরজার দিকে দৌড়ে যেতে। দরজার কাছে পৌঁছাতেই পুলিশের গুলিতে লুটিয়ে পড়তে দেখা যায় তাকে। বেটসের গায়ে বর্ম ছিল এবং তার হাতের .২২৩ ক্যালিবারের অ্যাসল্ট রাইফেলের জন্য অতিরিক্ত গুলিও ছিল।
পুলিশ প্রধান মি. বিয়েল বলেন, “ঐ ব্যক্তি যদি এসব অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে নেড পেপার্স বারের দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারতো, তাহলে হতাহতের সংখ্যা এবং ভয়াবহতা আরো ব্যাপক হতো।”
পুলিশ জানিয়েছে, রাইফেলটি টেক্সাস থেকে অনলাইনে কেনা হয়েছিল। বন্দুকধারীর অতীত ইতিহাস যাচাই করে দেখা যাচ্ছে যে, বৈধভাবে ঐ বন্দুক কেনার ক্ষেত্রে তার কোন বাধা ছিল না। নিহতদের মধ্যে বন্দুকধারীর বোন ২২ বছর বয়সী মেগান বেটসও ছিলেন।
“প্রথম যে কয়েকজনের গায়ে গুলি লাগে, তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে একজন,” বলেন মি. বিয়েল। কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দুকধারীর উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনই কোন ধারণা করা যাচ্ছে না।
বর্ণ বা জাতিবিদ্বেষ এই হামলার কারণ হতে পারে কি-না – এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান মি. বিয়েল বলেন, হামলার পেছনে যে এরকম ‘পক্ষপাতী উদ্দেশ্য’ রয়েছে – তা আসলে বলার মত না।
দ্যা গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ নামের একটি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ধরণ এবং হতাহতের সংখ্যা নিয়ে কাজ করে। চারজন বা তার চেয়ে বেশি মানুষ বন্দুক হামলায় মারা গেলে সেই ঘটনাকে নথিবদ্ধ করে তারা। ঐ সংস্থার মতে, ওহাইয়োর ঘটনাটি ২০১৯ সালের ২৫১তম বন্দুক হামলার ঘটনা।
হামলাকারী সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?
গণমাধ্যমে ওহাইয়োর ঘটনায় বন্দুকধারীর নাম প্রকাশিত হওয়ার ঘণ্টা-খানেকের মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেন যে হামলাকারী ২৪ বছর বয়সী কনর বেটস, যিনি ওহাইয়োর বেলব্রুকের বাসিন্দা। রবিবার পুলিশ তার বাসাতে তল্লাশী চালায়।
শুরুতে মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছিল যে, বন্দুকধারীর বোনকে একটি গাড়িতে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে পুলিশ জানায়, গাড়িতে যেই পুরুষটির সাথে ঐ নারীর মৃতদেহ পাওয়া যায় সে ‘সন্দেহভাজনের সঙ্গী।’
“হামলাকারীর চিন্তা ভাবনা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না,” বলেন মেয়র ন্যান হোয়েলি। এই ঘটনার তদন্তে পুলিশকে সাহায্য করছে এফবিআই কর্মকর্তারা।