বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৯:১৪ অপরাহ্ন

পদ্মা সেতুর টোল তুলবে কে

পদ্মা সেতুর টোল তুলবে কে

স্বদেশ ডেস্খ:

আগামী জুনের মধ্যে চালু হওয়ার কথা পদ্মা সেতু। এই সময়সীমা সামনে রেখে শুরু হয়েছে ‘টোল অপারেটর’ নিয়োগের প্রক্রিয়া। চলতি মাসেই এ বিষয়ে চুক্তি চ‚ড়ান্ত করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতু পরিচালন ও টোল আদায়ে ‘কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনের’ (কেইসি) সঙ্গে চুক্তি হয়েছে আগেই। এবার তাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে

সেতুর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’ও (এমবিইসি)। তবে মাওয়া ও জাজিরা সংযোগ সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ নিজস্ব তত্ত¡াবধানেই করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ আটটি প্যাকেজে বিভক্ত। মূল সেতুর নির্মাণকাজ ৩০ জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে কর্মপরিকল্পনায় উল্লেখ করেছে প্রকল্পকর্তারা। মূল সেতুর নির্মাণকাজ করছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (এমবিইসি)। অসুবিধা হলো, করোনা মহামারীর কারণে সব বিদেশি পরামর্শক ও ঠিকাদারের চাইনিজ এক্সপার্ট মোবিলাইজ (সচল) করা সম্ভব হচ্ছে না। তারা সশরীরে সব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। অর্থাৎ বিদেশে যাতায়াতে বিলম্ব হচ্ছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক জাহাজ ও বিমান চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় আমদানি করা মালামাল যথাসময়ে প্রকল্প এলাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে না। এর মধ্যে আশার কথাও আছে। দেশে করোনা সংক্রমণের পরেও প্রত্যাশিত ভৌত ও আর্থিক অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হয়েছে। যদিও প্রকল্পের নদীশাসন কাজে মাওয়া প্রান্তে অগ্রগতি ২৫ শতাংশ, আর জাজিরা প্রান্তে ৮২ শতাংশ।

পদ্মা সেতু জুনে চালু করতে হলে তার আগে টোল অপারেটর নিয়োগ করতে হবে। এ কাজ করার প্রক্রিয়া চলছে এখন। জিটুজি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে অপারেটর নিয়োগ করতে চায় সেতু কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনকে (কেইসি) সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ১২ আগস্ট অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায় কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কেইসির কারিগরি প্রস্তাব মূল্যায়ন করে এ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটি। পরে তা সেতু বিভাগের জিটুজি পদ্ধতিতে ক্রয় সংক্রান্ত নিরূপণ কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়। সেখানে পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণের ‘সুবিধার্থে’ কেইসির সঙ্গে পদ্মা সেতুর মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজকে (এমবিইসি) যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর গত বছরের ২১ মে সংশোধিত কারিগরি প্রস্তাব জমা দেয় তারা। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে কাজ করবে। সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব বণ্টন করা আছে। যেমন কেইসি থাকবে সার্ভিস এরিয়া/এপ্রোচ রোড, টোল কালেকশন অ্যান্ড অপারেশন, ইনটেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম (আইটিএস) ও ট্রাফিক অ্যান্ড সেফটি ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে। আর মেইন ব্রিজের টোল মনিটরিং সিস্টেম ও অ্যানালাইসিস করবে এমবিইসি। তাছাড়া এমবিইসি নদীশাসন কাজও তদারকি করবে। মোট কথা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমবিইসি সেতুর নির্মাণকাজে যুক্ত থেকে সেতু এলাকায় আবহাওয়া, নদীর অবস্থা বিষয়ে সম্যক ধারণাসহ ভ‚মিকম্প নিরোধক বিয়ারিং স্থাপন, ট্রাসের সংযোগস্থল ইত্যাদি কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এটি সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে সহায়ক হবে বলে মনে করছে সেতু বিভাগ। তাছাড়া এমবিইসির ৩০০টি সেতু এবং ৭০০ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে পদ্মা সেতুর নির্মাণ তদারকি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেইসির ব্যাপারে বলা হয়েছে, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও টোল আদায়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইনটেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস) ও ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম (ইটিসিএস) ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আছে। শুধু তাই নয়, অভিজ্ঞতা রয়েছে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম মনিটরিংয়ে হেলথ মনিটরিং সিস্টেম ব্যবহারের। তাই কেইসি ও এমবিইসি প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায় নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

সূত্র মতে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠান দুটির যৌথভাবে দাখিলকৃত আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়ন চলছে। ওই প্রস্তাবের নেগোসিয়েশন শেষ করে চলতি মাসের মধ্যে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানোর চিন্তা রয়েছে। যৌথভাবে পাঠানো মূল প্রস্তাবে জনবল কমানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটির প্রস্তাবিত অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। সমঝোতার মাধ্যমে তা কমানোর কাজ করছে। প্রাথমিক যাচাইয়ে কাজের পরিধিও কমছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877