শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩:২২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ভাত-ঘুম কতটা উপকারী?

ভাত-ঘুম কতটা উপকারী?

স্বদেশ ডেস্ক:

অনেকেই দুপুরে খাওয়ার পর কিছুটা ঘুমিয়ে নেন। যাকে বাংলায় বলা হয় ভাত-ঘুম। দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমানোকে যদিও অনেক সময় আলসেমি মনে করা হয়। কিন্তু ১০ থেকে ২০ মিনিটের এই ভাত-ঘুমের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর পক্ষে অনেক বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে। সব বয়সের জন্যই ভাত-ঘুম উপকারী। এমনকি নতুন এক গবেষণা বলছে, এটি হয়তো আপনাকে আরও বেশিদিন বাঁচতে সাহায্য করবে।

ভাত-ঘুমকে বলা হয় বাঙালির বদভ্যাস। কিন্তু এর সংস্কৃতি রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশে। ইউরোপের অনেক ভাষায় ভাত-ঘুমকে বলা হয় ‘সিয়েস্তা’। আর ইংরেজিতে ‘পাওয়ার ন্যাপ’। দিনভর নানা কাজের চাপের মাঝে কম্পিউটারের ‘রিফ্রেশ বাটনের’ মতো কাজ করে এই ভাত-ঘুম। দুপুরের পর দিনের বাকি সময়টুকু সতেজ বোধ করা এবং মন মেজাজ ভালো রাখতে ভাত-ঘুম বেশ কাজে আসে।

যে ধরনের কর্মশক্তি নিয়ে দিন শুরু হয় সেটি দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কমে আসতে শুরু করে। ন্যাপ বা ভাত-ঘুম শরীরের কর্মশক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে, বলছেন লন্ডনের ঘুম বিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠান ‘দ্যা স্লিপ স্কুলে’র প্রতিষ্ঠাতাদের একজন, ঘুম বিশেষজ্ঞ গাই মেডোজ।

তার মতে, ভাত-ঘুমের সময়কাল হওয়া উচিত ১০ থেকে ২০ মিনিট। ভাত-ঘুম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তার মানে হৃদপিণ্ড ও কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আর শরীরের এই যন্ত্রগুলো ভালো থাকলে আরও অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুস্থ থাকবে।

কেউ কেউ আছেন যারা কোথাও গা এলিয়ে দিলেই ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। কিন্তু সবাই তা পারেন না। আর কাজে থাকা অবস্থায় চেয়ার, টেবিল, সোফায়, আশপাশে মানুষের উপস্থিতি ও কথাবার্তার মধ্যে সবাই সবসময় ভাত-ঘুম আরাম করে দিতে পারেন না। কিন্তু চারপাশে পরিবেশে হালকা পরিবর্তন এনে উৎকৃষ্ট ভাত-ঘুম নেওয়া সম্ভব।

দিনের মাঝামাঝি সময়ে যেহেতু ৯০ মিনিটের ভাত-ঘুম দেওয়া মুশকিল তাই ১০ থেকে ২০ মিনিটকে ভাত-ঘুমের জন্য আদর্শ মনে করা হয়। যেভাবে উৎকৃষ্ট ভাত-ঘুম নিতে পারেন তা নিয়ে ডা. ইশরাত শারমিন রহমান কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তা হলো-

* ভাত-ঘুম নিতে চাইলে দিনের এই সময় আসার আগে চা-কফি নয়।

* সময়ের মিনিট পাঁচেক আগে কাজ বন্ধ করুন, উদ্দীপনা তৈরি করে এমন কিছু থেকে সরে আসুন, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে নিন।

* বেশি গরম বা ঠাণ্ডা না, স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হয় এমন কোন জায়গায় চেয়ার বা সোফায় আরাম করে বসুন। বাসায় থাকলে বিছানায় শুয়ে পড়ুন।

* ঘরের আলো কমিয়ে দিন, শব্দের উৎস নিয়ন্ত্রণ করুন।

* একটুখানি পানি খান।

* যদি চোখ ঢাকার মতো কিছু থাকে সেটি দিয়ে চোখ দিয়ে ঢাকুন, স্থির থাকুন, দীর্ঘ নিশ্বাস নিন।

সোজা কথায়, শরীর ও মনকে শিথিল করুন, চোখ বুজে মন থেকে নেতিবাচক, উদ্বেগ সৃষ্টি করে এমন চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। ডা. ইশরাত শারমিন বলছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এতে ঘুম আসে, তবে সবার ক্ষেত্রে সব সময়ে কাজে নাও লাগতে পারে।

তবে ২০ থেকে ৯০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ভাত-ঘুম নেওয়া যাবে না। সেটাকে আর ভাত-ঘুম বলা যাবে না। সে ক্ষেত্রে সেটা হবে গভীর ঘুম। আর যাদের রাতে ঘুমের সমস্যা রয়েছে তাদের ভাত-ঘুম নেওয়া উচিত নয়। তাহলে তাদের রাতে শরীর ক্লান্ত হতে পারে না অথবা দেরি হয়।

যারা রাতে ভালো ঘুমিয়েছেন এবং যারা ভালো ঘুমাতে পারেননি তাদের সবার ক্ষেত্রেই ভাত-ঘুম কাজে দেয়। অনেক সময় ঘুমাতে না পারলেও ২০ মিনিটের মতো শুধু চোখ বুজে থাকলেও ক্লান্তি দুর হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877