স্বদেশ ডেস্ক:
নোয়াখালীর চৌমুহনীতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ‘উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল ইমাম ওরফে কমল (৩৯) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ফয়সাল এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সাংসদ বরকত উল্লাহ বুলুসহ ১৫ জনের নাম প্রকাশ করেছেন।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ফয়সালকে সোমবার রাতে জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সাঈদীন নাঁহীর আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
শহীদুল ইসলাম বলেন, জবানবন্দিতে ফয়সাল ইনাম ওরফে কমল সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার উসকানিদাতা হিসেবে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সভাপতি বরকত উল্লা বুলুসহ বিএনপি-জামায়াতের ১৫ নেতার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন।
দুর্গাপূজার অষ্টমীতে কুমিল্লার একটি মণ্ডপে ‘কোরআন অবমাননার’ কথিত অভিযোগ তুলে সহিংসতা শুরুর পর তা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কক্সবাজার, ফেনী, রংপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ১৫ অক্টোবর দশমীর দিন নোয়াখালীর চৌমুহনীতে কয়েকটি মন্দির ও মণ্ডপে দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুর হয়। সে সময় ‘হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে’ একজনের মৃত্যুর খবর দেয় পুলিশ। পরদিন পুকুর থেকে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নোয়াখালীর ঘটনায় মোট ২৬টি মামলা হয়, গ্রেপ্তার করা হয় প্রায় ২০০ জনকে। এর মধ্যে ফয়সাল ইনাম কমলসহ বিএনপি-জামায়াতের ১১ নেতাকর্মীকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গত রোববার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলায় বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজুল্লাহপুর গ্রামের আবু হানিফের ছেলে ফয়সাল ইনাম কমলকে ওই ঘটনার ‘অন্যতম উসকানিদাতা ও ইন্ধনদাতা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ফয়সালকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের নাম জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন। এরপর সোমবার রাতে তাকে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালতের নির্দেশে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।