স্বদেশ ডেস্ক: কুড়িগ্রাম জেলায় টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে দেড় লক্ষাধিক মানুষ। পানি দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকায় কুড়িগ্রাম জেলার চারটি পয়েন্টে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা ওপরে রয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার (সে.মি), ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭ সে.মি, ধরলা পয়েন্টে ৫২ সে.মি ও তিস্তা কাউনিয়া পয়েন্টে ৯ সে.মি ওপর দিয়ে পানি প্রভাবিত হচ্ছে।
এদিকে পানি বাড়ায় কুড়িগ্রামের প্রায় সাড়ে চারশ চর-দ্বীপচর প্লাবিত হয়েছে। ৯৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও পানিবন্দী হওয়ায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই। এ সব চরে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দী জীবন কাটাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৭২৫টি। এ সব এলাকার গাছ-পালা, পাট ক্ষেত, বীজতলা, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত ডুবে গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, জেলায় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। পানিবন্ধী হওয়ায় ৯৩টি স্কুল বন্ধ রয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, সবকটি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। বাঁধগুলো যেন ভেঙে না যায় সে জন্য মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় ৩৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। পর্যাপ্ত ঔষুধ মজুদ রয়েছে। আমাদের এমবিবিএস ডাক্তারসহ মনিটরিং টিম মাঠে কাজ করছে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছি। ইতিমধ্যে জিআর দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা, জিআর চাল ৫০ হাজার মেট্রিক টন, শুকনো খাবার হাজার হাজার প্যাকেট পানিবন্দী এলাকাগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ২০ লাখ টাকা ও ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’