শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ অপরাহ্ন

জর্জিয়ার নির্বাচনে বাইডেন-ট্রাম্পের ভাগ্য পরীক্ষা আজ

জর্জিয়ার নির্বাচনে বাইডেন-ট্রাম্পের ভাগ্য পরীক্ষা আজ

স্বদেশ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে আজ মঙ্গলবার দুই সিনেট আসনের রানঅফ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনের ওপর সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেনের চূড়ান্ত ভাগ্য পরীক্ষাও নির্ভর করছে। স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে রানঅফ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলবে।

জর্জিয়ার দুই আসনে এখন পর্যন্ত হওয়া নির্বাচন পূর্ববর্তী জনমত জরিপগুলোর ফল বলছে, নির্বাচনে দুদলের প্রার্থীদের মধ্যে বেশ লড়াই হবে। একটিতে রিপাবলিকান সিনেটর ডেভিড পারডুর বিরুদ্ধে লড়ছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের জন ওসফ। অন্য আসনে রিপাবলিকান সিনেটর কেলি লোফলারের বিরুদ্ধে লড়ছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের রাফায়েল ওয়ার্নোক। দুটি আসনেই প্রার্থীদের প্রতি জনসমর্থনের হার অত্যন্ত কাছাকাছি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনের আগে জর্জিয়ায় পরিচালিত সর্বশেষ জরিপে দুই সিনেট আসনে প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। উভয় আসনে দুই প্রার্থীর প্রতি জনসমর্থনের হারের ব্যবধান কম, তাই যে কেউ জয় পেতে পারেন।

সর্বশেষ জনমত জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ছয় বছরের পূর্ণ মেয়াদের জন্য রিপাবলিকান দল থেকে লড়াই করা সিনেটর ডেভিড পারডুর প্রতি ভোটারদের ৪৮ শতাংশের সমর্থন রয়েছে। বিপরীতে জন ওসফের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪৯ শতাংশ ভোটারের। আর অন্য আসনের বিশেষ নির্বাচনে সিনেটর কেলি লোফলারের প্রতি ৪৮ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী রাফায়েল ওয়ার্নোকের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৫০ শতাংশ ভোটারের। দুই ক্ষেত্রেই প্রার্থীদের মধ্যে জনসমর্থনের পার্থক্য মার্জিন অব এরর ৩ শতাংশের চেয়ে কম। ফলে এ দুই আসনে যেকোনো দলের প্রার্থী জয় পেতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় জরিপকারী সংস্থা মাই এভারেজ অব জর্জিয়া।

জর্জিয়ার দুই সিনেট আসনের যেকোনোটিতে জয় পেলেই সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পারবে রিপাবলিকান দল। অন্যদিকে এখন পর্যন্ত সিনেটের ৪৮ আসন পাওয়া ডেমোক্র্যাটিক দলের এ দুই আসনে জয়ের বিকল্প নেই। দুটি আসনে ডেমোক্র্যাটরা জয় পেলে সিনেটে তাদের আসনসংখ্যা হবে ৫০। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পাওয়ায় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের পদাধিকার বলে প্রাপ্ত ভোটের জোরে তারা তখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যাবে।

সিএনএন জানায়, জর্জিয়ায় এখন পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান বেশ ভালোভাবেই ধরে রাখতে পেরেছে ডেমোক্র্যাটিক দল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দুটি আসনেই তাদের জয় পাওয়ার কথা। শুরুতে পরিস্থিতি এতটা অনুকূলে ছিল না। কিন্তু নির্বাচনের আগে তাদের অবস্থান বেশ দৃঢ় হয়েছে।

সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতার নির্ধারক হিসেবে জর্জিয়ার এই নির্বাচন নিয়ে আগে থেকেই ব্যাপক আলোচনা চলছে। কিন্তু এখন এই আলোচনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন নিয়ে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও। এই নির্বাচনকে তাই এখন বিবেচনা করা হচ্ছে ‘ট্রাম্প বনাম অন্যরা’ হিসেবে। কারণ, দুই রিপাবলিকান সিনেট প্রার্থীই ট্রাম্প সমর্থক হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনে জয় পেতে তারা নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের বিভিন্ন বিতর্কিত পদক্ষেপের পক্ষেও দাঁড়িয়েছেন। ফলে নির্বাচনে তারা পরাজিত হলে রিপাবলিকান দল এ জন্য ট্রাম্পকেই দোষারোপ করবে। একই সঙ্গে এ সুইং স্টেটে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে রিপাবলিকানরা ট্রাম্পের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সংযোগ রক্ষা নিয়ে দুবার ভাববে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ দুই আসনে এমনিতে রিপাবলিকানরাই শক্তিশালী। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীরা বেশি ভোট পেয়েছিলেন। আবার রানঅফ নির্বাচনে জয় পাওয়ার সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে রিপাবলিকানদের। ফলে পারডু ও লোফলারের এ খানে সহজ জয়ই পাওয়ার কথা। কিন্তু তাদের অবস্থান শেষ মুহূর্তে কিছুটা নড়বড়ে লাগছে। এ জন্য নিঃসন্দেহে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডই দায়ি। এই শেষ সময়ে এসে জর্জিয়ার সেক্রেটারি অব স্টেটের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফোনালাপ ফাঁস একটি বড় প্রভাবক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ট্রাম্পের কার্যক্রমের কারণে শেষ এই ধাক্কা রিপাবলিকান দুই সিনেটর শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারেন কিনা, তা-ই এখন দেখার বিষয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877