স্বদেশ ডেস্ক:
নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিতে রাজ্যস্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সেক্রেটারি অব স্টেট ব্র্যাড রাফেনসপারজারকে দেওয়া ট্রাম্পের ওই ফোনালাপের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এফবিআইকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির দুজন আইনপ্রণেতা।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, জর্জিয়ার সেক্রেটারি অব স্টেটকে ফোন করে ফল পাল্টে দেওয়ার নির্দেশনার জন্য ট্রাম্পকে আইনি ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। ইতিমধ্যে কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্য টেড লিউ ও ক্যাথলিন রাইস এফবিআই পরিচালক ক্রিস ওরেইকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক তদন্ত শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার এ চিঠি ইস্যু করা হয়।
এমন কাণ্ডে ট্রাম্পের মুক্তির সুযোগ নেই। তবে, প্রেসিডেন্ট ফেডারেল অপরাধ থেকে নিজেকে ক্ষমা করার ব্যবস্থা নিতে পারেন ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু কোনো অঙ্গরাজ্য আইনে এ দায় থেকে মুক্তি নাও পেতে পারেন ট্রাম্প। কারণ, ফেডারেল ও জর্জিয়ার নির্বাচনী আইনে পরিষ্কার করে বলা আছে, জ্ঞানত ভোট জালিয়াতি-কারচুপিতে ইন্ধন দেওয়া বা উৎসাহিত করা দণ্ডযোগ্য অপরাধ।
গত শনিবার জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সেক্রেটারি অব স্টেট ব্র্যাড রাফেনসপারজারকে ফোন করেন ট্রাম্প। তিনি রাফেনসপারজারকে বলেন, কোনোভাবে ১১ হাজার ৭৮০ ভোট খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে জো বাইডেনের চেয়ে এক ভোট বেশি হয়ে যাবে তার।
ট্রাম্পের কথার পরিপ্রেক্ষিতে ব্র্যাড রাফেনসপারজারকে বলতে শোনা যায়, তিনি (ট্রাম্প) ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলছেন। তিনি বিনয়ের সঙ্গে কাজটি করতে অস্বীকৃতি জানান।
বিষয়টি নিয়ে এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘জর্জিয়ায় ভোটারদের জালিয়াতি নিয়ে কথা বলেছিলাম। তবে ব্র্যাড রাফেনসপারজার নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো কথা বলতে রাজি হননি।’
ব্র্যাড রাফেনসপারজার ফিরতি টুইটবার্তায় বলেন, ‘শ্রদ্ধার সঙ্গে বলছি, প্রেসিডেন্ট, আপনি যা বলছেন, তা ঠিক নয়।’
ট্রাম্প-রাফেনসপারজারের ফোনালাপের অডিও ফাঁস করে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। গত রোববার এ ফোনালাপ ফাঁসের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্প নিজেবে কেন ফের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান বোঝা যাচ্ছে না। গতকাল সন্ধ্যায় বাইডেন জর্জিয়ায় দেওয়া বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি (ট্রাম্প) তো কোনো কাজ করতে ইচ্ছুক নন।
এ বিষয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ক্ষমতায় থাকার জন্য গণতন্ত্রকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তিকেই আজ হুমকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।