শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ অপরাহ্ন

বিশ্বকাপ : এক বাংলাদেশীর কাণ্ড

বিশ্বকাপ : এক বাংলাদেশীর কাণ্ড

স্বদেশ ডেক্স: বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল আজ শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে। টুর্নামেন্টে টিকে থাকার জন্য এজবাস্টনের এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

খেলা যেখানেই হোক বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ম্যাচেই প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশী সমর্থককে স্টেডিয়ামে হৈ হল্লা করতে দেখা যায়। লাল-সবুজ জার্সি গায়ে দিয়ে তারা নিজ দলের ক্রিকেটারদের উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করেন।

এরকমই একজন লন্ডনের বাসিন্দা ও আইনজীবী নাশিত রহমান। ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি বাস ভাড়া করে প্রতিটি ম্যাচেই তিনি তিরিশ জনেরও বেশি ক্রিকেট প্রেমীকে লন্ডন থেকে মাঠে নিয়ে যাচ্ছেন।

আজও তিনি বাংলাদেশি দর্শকদের একটি দল নিয়ে নিজ উদ্যোগে যাচ্ছেন বার্মিংহামে বাংলাদেশ ভারত খেলা উপভোগের জন্য।

বিবিসি বাংলাকে রহমান বলছেন, “দলকে সমর্থন যোগানো কিংবা প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের পাল্টা নানা কার্যকলাপের মাধ্যমে তারা স্টেডিয়ামকে প্রাণবন্ত করে তোলেন”।

এই উদ্যোগ কেন নিলেন নাশিত রহমান
এ ব্যাপারে নাশিত রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে যে ম্যাচে বাংলাদেশ হারিয়েছিল সেই ম্যাচেও তিনি বাংলাদেশি দর্শকদের নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন।

“তবে আমরা যারা বিদেশে থাকি আমাদের দুটি পরিচয়। প্রথমত আমরা বাংলাদেশী দ্বিতীয়ত আমরা হয়তো ব্রিটিশ, আমেরিকান কিংবা অন্য দেশের নাগরিক। যে কারণে আমরা অনেক সময় আত্মপরিচয় দ্বন্দ্বে ভুগি। তার বাংলাদেশের মানুষদের কাছে অনেক সময় আমরা যারা প্রবাসী আছি, তাদের দেশপ্রেম অনেক সময় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে। এ দুটি বিষয়ের উত্তর দেয়া থেকেই বিষয়টি মাথায় আসে”।

তিনি বলেন মূলত বিলেতের বুকে ছোট একখণ্ড বাংলাদেশ তৈরি করার চিন্তা থেকেই তাদের এ প্রয়াস।

ভাবনাটা মাথায় এলো কিভাবে?
নাশিত রহমান বলেন তার ছোটো বেলা কেটেছে ঢাকার ফুলার রোডে। শিক্ষাজীবনে ঢাকা কলেজ কিংবা ল্যাবরেটরি স্কুলে যখন পড়েছেন তখনই ক্রিকেট বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়।

“ফুটবলও আমাদের সময় জনপ্রিয় ছিলো। আবার ক্রিকেটও। কিন্তু পরে ক্রিকেট বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। দুটি খেলাই খেলতাম ও ভালোবাসতাম। এখন দেশের সুনাম ক্রিকেট যেভাবে আনতে পারে সেটা ফুটবলের দ্বারা সম্ভব নয়। তাই সেটাকেই কাজে লাগানোর চিন্তা করেছি।”।

তিনি বলেন, “বন্যা কিংবা রাজনৈতিক সহিংসতার মতো নানা নেতিবাচক খবরের মধ্যে ‘ক্রিকেট’ বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক খবর দেয় এবং এটা প্রবাসীদের আন্দোলিত করে।”

মিস্টার রহমান জানান কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো, ২০১০ সালে ইংল্যান্ডকে হারানোসহ অনেক খেলাই তারা এভাবে দেখতে গিয়েছিলেন স্টেডিয়ামে।

তিনি বলেন আইনজীবী হিসেবে পেশাগত জীবনের ব্যস্ততার মধ্যেও খেলা হলে, তিনি অনেক আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পনা করেন।

ব্যয় মেটান কিভাবে
নাশিত রহমান বলেন তাদের বাল্যবন্ধুর একটি বাস কোম্পানি আছে লন্ডনে। তিনি স্কুলের বাচ্চাদের সেবা দিয়ে থাকেন।

“আইনি নানা বিষয় আছে তাতে। সে কারণে তার কোম্পানির সহায়তা চাইলে তিনি খুব কম খরচে বাসটি দিতে রাজি হন। আধুনিক বাস। আমরা মজা করতে করতে স্টেডিয়ামে যাই”।

তাছাড়া যারা বাসে যান তারাও অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করে বলে জানান তিনি।

“অনেক দর্শক আছে যারা সব খেলা দেখতে যান। অনেকে প্লাটিনাম টিকেট কিনেন। সবাই দল বেধে যেতে আসতে মজা পাচ্ছে। আবার মাঠে আলাদা আলাদা জায়গায় বসে অনেকে টিকেটের কারণে। কিন্তু বাসে এক সাথে মজা করতে করতে যাচ্ছে নিজেরা মিলে। বিষয়টি বেশ উপভোগ্য হয়”।

যথেষ্ট সাড়া পাওয়া যায়?
তিনি বলেন যারা বাসে করে খেলা দেখতে যান তাদের কাছ থেকে কিছু অর্থ নেয়া হয়, কারণ এটি না হলে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা থাকেনা।

“প্রচুর দর্শক পাওয়া যায়। এমন অনেকেই আছেন যারা দেশের প্রতিটি খেলা দেখেন। সকাল ছয়টায় আমরা রওনা হয়ে যাই খেলার দিন। বাংলাদেশিরা খেলা দেখতে অনেক অর্থ ব্যয় করেন। আর এটা ট্রেনে যাওয়ার চাইতেও অনেক সাশ্রয়ী। সে কারণে সাড়া মেলে ভালো”।

নাশিত রহমান বলেন এখন যারা এই বাসে যাচ্ছেন তারা সবাই খুব সিরিয়াস সমর্থক।

“দলের ভালো মন্দ সব কিছুতেই আমরা দলকে সাহস যোগানো বা পাশে থাকার জন্য যাই।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877