বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

পূজায় পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি

পূজায় পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি

স্বদেশ ডেস্ক:

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর দশজন সাধারণ মানুষের মতো তারকারাও মেতে ওঠেন এ উৎসবের আনন্দে। কাজ থেকে ছুটি নিয়ে বিশেষ এ উৎসবের সময়টায় পরিবারের সদস্য ও কাছের মানুষদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন তারা। এবার করোনার কারণে প্রায় সবাই বাসায় বসেই উৎসব উদযাপন করবেন। লিখেছেন- ফয়সাল আহমেদ

অরুণা বিশ্বাস

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভারতেশ্বরী হোমসে আমি পড়াশোনা করেছি। বড় হয়েছি। পূজায় আমাদের কোনো ছুটি হতো না। হোমসের ভেতরেই দেখা হয়েছে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পূজা। শরতের আকাশের রঙবৈচিত্র্যের অনুকরণে তৈরি করা হতো আমাদের হোমসের সেসব ম-প। জল, তিল ও অন্ন উৎসর্গ করে আমরা তর্পণ করতাম। পূজার জন্য আমরা এক-দেড় মাস আগে থেকেই তৈরি হতাম। কে কোন নাচ আর গানে অংশগ্রহণ করব, কে কোন নাটকের চরিত্রে অভিনয় করব- সেগুলো ঠিক করা হতো আগেই। বিসর্জনের দিন আমরা সবচেয়ে বেশি আনন্দ করতাম। সেই পূজার সঙ্গে এখনকার পূজার কোনো তুলনা দেব না। এখনকার পূজা শুধু লোক দেখানো। এবার কোথাও বের হওয়া হবে না। মানুষ আতঙ্কে আছে। তাই বাসায় বসেই পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করব।

বিদ্যা সিনহা মিম

অনেক আশা ছিল এবার গ্রামের বাড়িতে পূজা করব, অন্যরকম আনন্দ করব। কিন্তু তার কিছুই হবে না। এ কারণে একটু খারাপ লাগছে। ছোটবেলা থেকেই পূজার প্রতি আমার অন্যরকমের দুর্বলতা কাজ করে। এই কয়টা দিন খুব আনন্দ করেই কাটাই। অভিনেত্রী হওয়ার আগে ইচ্ছামতো ঘুরতে পারতাম। এখন আর পারি না। ভাবছি এবার অষ্টমীতে সাদা-লাল শাড়ি পরব। এ দিনের বিশেষত্ব হলো কুমারী পূজা। সবচেয়ে জমকালো উৎসবের দিন। নবমীর দিনেও এই বর্ণিল ব্যাপারটা থাকে। নবমীতে সালোয়ার-কামিজ পরব। দশমীতে লাল থ্রি-পিস পরব। লাইট মেকআপ করে চুল খোঁপা বাঁধব। পূজার চার দিনের যে কোনো একদিন দু-একটি পদ রান্না করার ইচ্ছা আছে। সেটা হতে পারে পায়েস আর সবজি কারি।

অপর্ণা ঘোষ

আমি চট্টগ্রামে বেড়ে উঠেছি। ছেলেবেলার সব পূজার স্মৃতি সেখানেই। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ^রের প্রতিমূর্তিও ম-পের গায়ে স্থাপন করা হতো। কখন স্কুল ছুটি হবে, কখন যাব মন্দিরে আর কখন দেখব কার্তিক ও গণেশকে রঙ দিয়ে তৈরি করা হয়ে গেছে, কখন কুড়াব শিউলি ফুল, কখন দেব পিতৃপুরুষের নামে তর্পণ- এসব নিয়েই সবাই মেতে থাকতাম। মহালয়ার পরে আসত আমাদের নতুন জামাকাপড়। কেউ কারোরটা দেখতাম না। কারণ বন্ধুদের দেখালে তো আর পূজা হবে না! আমরা ম্যাচিং করা জামা-জুতা পরতাম। তখন কুমকুমের যুগ ছিল। কুমকুম ছাড়া আমাদের পূজাই হতো না। বড়রা কুমকুম দিয়ে আমাদের হাতে ও পায়ে আলপনা এঁকে দিতেন। অষ্টমীর দিন ছিল পূজা ও প্রসাদ খাওয়ার। আমাদের বাড়িতেই দুর্গাপূজা হতো। বাড়িতে হাজার হাজর মানুষের ঢল নামত। তখনকার আর এখনকার পূজার মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসে গেছে। এখন মনে হয় এ অন্তরের পূজা নয়, অনুষ্ঠান। এবার এখনো কোনো পরিকল্পনা করিনি। বিশ্বের যা অবস্থা। করোনায় অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। কবে আবার আমরা সবাই মিলে উৎসব করব- কে জানে?

ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর

সত্যি বলতে মন খারাপের মধ্যে আছি। পুরো বিশ্ব একরকম বন্দিজীবন পার করছি। এক পূজার সময়ে বাবা পরলোক গমন করেন। সেই ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারিনি। বিশেষ করে উৎসব-পার্বণ বাবা ছাড়া কল্পনাই করতে পারি না। ছোটবেলায় বাবার হাত ধরেই ম-পে যেতাম। তাকে ছাড়া পূজা কেমন হবে, কিছুই জানি না। প্রতিবার পূজার অনেক দিন আগে থেকেই বাবার জন্য শপিংমল ঘুরে ঘুরে পাঞ্জাবি কিনতাম। এবার তাকে কোনো উপহার দিতে পারব না, আমিও তার কাছ থেকে কোনো উপহার পাব না- এটা ভেবেই মনে কষ্ট হচ্ছে।

পূজা চেরী

ছোটবেলায় পূজার ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গাজীরহাটে চলে যেতাম। আমাদের রায় বাড়িতেই সবচেয়ে বড় পূজা হতো। তখন পূজার সময় নজর থাকত জামা-জুতার দিকে। দু-তিন বছর হলো ব্যস্ততার কারণে পূজায় গ্রামের বাড়ি যেতে পারি না। ঢাকেশ^রী মন্দির, বনানী পূজাম-পে ঘোরা হয়। এবার তাও হবে না! কারণ ‘জিন’ ছবির টানা শুটিং পড়েছে পূজার কটা দিন। তবে এতে আমার মন খারাপ হয়নি মোটেও। কারণ শুটিং করতে ভালোই লাগে। চেষ্টা করব শুটিংয়ের ফাঁকে অন্তত দুটি দিন পূজাম-পে ঘুরতে। পাঁচ দিন পরার জন্য পাঁচটি নতুন পোশাক কিনেছি। শেষ তিন দিন শাড়ি পরব। পূজায় লাল-সাদা শাড়ি পরতে খুব ভালো লাগে। শুধু নিজের জন্য নয়, বাবা-মা, ভাইয়া, ফুপু-ফুফা, কাজিনসহ অনেককেই পূজার উপহার দিয়েছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877