অধ্যাপক ডা. এআরএম সাইফুদ্দীন একরাম: চকলেট খাওয়া নিয়ে আমাদের নানা সংশয় রয়েছে। সেজন্য আমরা অনেকেই চকলেট খাওয়া নিয়ে নানা মনস্তাত্ত্বি¡ক বিড়ম্বনায় ভোগী। সম্প্রতি এক গবেষণায় চকলেটের নানা স্বাস্থ্যগুণ প্রকাশ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যের ওপর চকলেটের নানামুখী কার্যকরী প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে:-
** চকলেটের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে।
** চকলেটের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকার কারণে অনেকে মনে করেন চকলেট বার্ধক্য বিলম্বিত করে।
** চকলেট খেলে জীবনীশক্তি বাড়ে, কাজকর্মে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয় এবং কোনো কিছুতে মনোনিবেশ করার ক্ষমতা বাড়ে।
** মহিলাদের মাসিক রজস্রাবের আগে চকলেটের প্রতি বাড়তি আকর্ষণ দেখা যায়।
** চকলেটে বেদনানাশক ক্ষমতা রয়েছে, চকলেট খেলে মনে আনন্দ-ফুর্তির মনোভাব জাগে।
** চকলেটে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম থাকে। চকলেট সেবন শরীরের ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে।
চকলেট সম্পর্কে এ রকম অনেক তথ্য রয়েছে। তবে এসব তথ্যের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেন। চকলেটের স্বাস্থ্যকর গুণাগুণ সম্পর্কে প্রথম জানা যায় পানামার কুনা দ্বীপের স্থানীয় অধিবাসীদের স্বাস্থ্য পর্যালোচনা করে। ওই দ্বীপের অধিবাসীদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ বাড়ে না। এমনকি তাদের মধ্যে হƒদরোগের হারও অনেক কম। বিজ্ঞানীরা এর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখতে পান কুনা দ্বীপের অধিবাসীরা প্রচুর চকলেটযুক্ত খাবার গ্রহণ করে। পক্ষান্তরে কুনা দ্বীপের অধিবাসীরাই যখন শহরে বসবাস করে এবং চকলেট কম খায়, তখন তাদের মধ্যে উচ্চরক্ত চাপ এবং হƒদরোগের হার বেড়ে যায়।
সম্প্রতি ব্রিটেনের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গবেষণা করে জানান, চকলেট বেশি খেলে বিভিন্ন ধরনের হƒদ-বিপাকীয় ব্যাধি, যেমনÑহƒদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, হƒদ-বিকলতা ইত্যাদির হার এক-তৃতীয়াংশ কমে যায়। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত জ্ঞান এবং তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি, চকলেটের লোভ সংবরণ করা দরকার নেই। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা আনন্দ চিত্তে উপভোগ করুন অন্তত চকলেটের অমীয় স্বাদ।