স্বদেশ ডেস্ক:
ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ, লিখলো রূপকথার গল্প। মুশফিক-মিরাজদের হাত ধরে বাংলার ক্রিকেটে উঠল নতুন সূর্য। আগে যা কখনো হয়নি তাই করে দেখাল টাইগাররা, প্রথমবারের মতো টেস্টে পাকিস্তানকে সিরিজ হারালো তারা। দিলো হোয়াইটওয়াশের লজ্জা।
মঞ্চ প্রস্তুত ছিল। শুধু প্রয়োজন ছিল কোনো অঘটন ঘটতে না দেয়ার। সেই কাজটা খুব ভালো করেই করলেন মুমিনুল-মুশফিকরা। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ১৪২ রানের ব্যবধান দেখেশুনেই পাড়ি দিলো বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে পেল ৬ উইকেটের জয়।
জয় থেকে ১৪২ রান পিছিয়ে থেকে মঙ্গলবার শেষ দিনে মাঠে নামে বাংলাদেশ। তবে শুরুটা ভালো হয়নি। আগের দিনের আগ্রাসন ধরে রাখতে পারেননি জাকির হাসান। আগের দিনের ৩১-এর সাথে আজ আর ৯ রান যোগ করে ফেরেন তিনি। ৫৮ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
সাদমান ইসলাম খেলছিলেন দেখেশুনেই। তবে থিতু হয়েও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। ২৪ রান করে ধরেন সাজঘরের পথ। ৭০ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত।
মুমিনুল হককে সাথে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে লড়াই করেন দু’জনে। খুব হিসাব করে খেলতে থাকেন দুই ব্যাটার। তাড়াহুড়ো করছেন না খুব একটা। তবে দলের ওপর চাপ আসতে দেননি। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগেই দুজন মিলে গড়লেন পঞ্চাশছোঁয়া জুটি।
বিরতির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শান্ত। সালমান আগার সাদামাটা এক বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ৮২ বলে করেন ৩৮ রান। ভাঙে ৫৭ রানের জুটি। তবে মুমিনুল আর মুশফিক মিলে এগিয়ে নিতে থাকেন রান।
তবে থিতু হওয়ার পর অযথা শট খেলতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন মুমিনুল। শেষ হয় তার ৭১ বলে ৩৪ রানের ইনিংস। তখন জয় থেকে মাত্র ৩২ রান দূরে বাংলাদেশ। এই দূরত্ব ঘুচান সাকিব-মুশফিক। মুশফিক ৫১ বলে ২২ ও সাকিব অপরাজিত থাকেন ৪৩ বলে ২১ রানে।
উল্লেখ্য, রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে শুক্রবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। যেখানে টসে হেরে আগে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রান করে স্বাগতিকরা। সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন সাইম আইয়ুব। ৫ উইকেট নেন মেহেদী মিরাজ, ৩ উইকেট যায় তাসকিনের ঝুলিতে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট হারালেও লিটন দাসের ১৩৮ রানের ইনিংসে ভর করে বিপদ কাটায় বাংলাদেশ। ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন মেহেদী মিরাজ। ২৬২ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ১২ রানের লিড পায় পাকিস্তান।
লিড নিয়ে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তান। হাসান মাহমুদ আর নাহিদ রানার বোলিং তোপে আটকে যায় ১৭২ রানে। ফলে লিডসহ বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৫ রান।
এরপর ব্যাট করতে নেমে ৭ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৪৩ রান তুলে বাংলাদেশ। তবে এরপরই আলোস্বল্পতার কারণে বন্ধ হয় খেলা। নির্ধারিত সময়ের প্রায় তিন ঘণ্টা আগেই শেষ হয় চতুর্থ দিন। ফলে খেলা গড়ায় রোমাঞ্চকর পঞ্চম দিনে।