স্বদেশ ডেস্ক: নাম তার রাজা। আর নামের মতোই তার চালচলনও রাজকীয়। দশাসই চেহারার রাজা যখন রাস্তা দিয়ে যান, সবাই হাত তুলে সম্মান জানান। এহেন রাজকীয় চাল যার, তার সুরক্ষার বিষয়ে তো সতর্ক হতেই হবে! তাই রাজাকে ঘিরে সবসময় থাকে সশস্ত্র দেহরক্ষীর বলয়। না রাজা কোনো ভিআইপি ব্যক্তি নন। প্রায় সাড়ে ১০ ফুট লম্বা রাজা শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে লম্বা পোষা হাতি। যার নিরাপত্তার খাতিরে একে-৪৭ধারী দেহরক্ষীর আয়োজন করেছে শ্রীলঙ্কার প্রশাসন।
হাতি হলেও কোনো ভিআইপির থেকে রাজার গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। হাতিটির পুরো নাম নাদুগামুওয়া রাজা। শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় মন্দিরগুলোয় পুরোহিতদের প্রথম পছন্দ বিশাল এ দাঁতাল হাতি। তাই প্রতিদিনই কোনো না কোনো মন্দিরে ‘ডিউটি’তে যেতে হয় রাজাকে। শুধু তাই নয়, প্রতি বছর ‘এসালা’ বৌদ্ধ অনুষ্ঠানের সময়ে বুদ্ধের দেহাবশেষ বহনের গুরুদায়িত্ব থাকে রাজার কাঁধে। সেই সময়ে প্রায় ৯০ কিলোমিটার হেঁটে কান্দির বৌদ্ধ মন্দিরে পৌঁছে যায় রাজা। কাজকর্মের বাইরে মাহুত হর্ষ ধর্মবিজয়ার সঙ্গে বেশ খুনসুটি করতে ব্যস্ত থাকে বিশালাকায় হাতি।
কিন্তু হাতিটির আশপাশে এত নিরাপত্তা বলয় কেন? খোলসা করলেন মাহুত হর্ষ নিজেই। হর্ষ জানান ২০১৫ সালে সেপ্টেম্বরে এক মোটরসাইকেল আরোহী আর একটু হলেই রাজাকে ধাক্কা দিতে বসেছিলেন। সেবার অল্পের জন্য বেঁচে যায় রাজা। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাতির নিরাপত্তা তো না দিলেই নয়! সঙ্গে সঙ্গে চার-পাঁচজন সশস্ত্র দেহরক্ষীর ব্যবস্থা করা হয়। ওই সময় থেকে যখনই রাজা রাস্তায় বের হয়, তাকে ঘিরে থাকেন দেহরক্ষীরা। শ্রীলঙ্কায় মন্দির ও বিত্তশালীদের মধ্যে হাতি পোষার রীতি বেশ জনপ্রিয়। তবে পশুপ্রেমীদের দাবি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যথাযথ যতœ নেওয়া হয় না পোষ্য হাতিদের। তবে ভিআইপির তকমা পাওয়া রাজার ক্ষেত্রে ব্যাপার-স্যাপার যে রাজকীয়, তা বলাইবাহুল্য! জিনিউজ