স্বদেশ ডেস্ক:
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুললেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তার দাবি প্রতিষ্ঠানটি রাজধানী থেকে গরিব তাড়ানোর কাজ করছে। আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অডিটোরিয়ামে ‘ঢাকা ডেলিরিয়াম’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
এম এ মান্নান বলেন, ‘নগর পরিকল্পনায় রাজউক কতটা উন্নতি করেছে তা এখন ভাবার বিষয়। তারা মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টার এবং পার্ক তৈরি করে ভাড়া দিয়ে খাচ্ছে। গরিবের কাছ থেকে কম দামে জমি কিনে বড়লোকের কাছে বিক্রি করছে। এর মাধ্যমে শহর থেকে গরিব তাড়ানোর কাজ করছে তারা। গরিব মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে এদিক-সেদিক থাকছে। রাজউক নগর উন্নয়ন কতটুকু করেছে, আর গরিব তাড়ানোর কাজ কতটুকু করেছে, সেটাই দেখার বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে প্রতিষ্ঠান যে উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল তারা কতটুকু তা করতে পারছে, সেটা এখন ভাবার বিষয়। আমাকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলা হয়, কিন্তু আমি পরিকল্পনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত না। আমার আশপাশের কিছু লোক আছে তারা পরিকল্পনা করে। তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ও দেশের পরিকল্পনা সঠিকভাবে করতে পারছে না।’
এম এ মান্নান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেছিলেন তার কোনোটাই বাস্তবায়ন করতে পারছে না পরিকল্পনা কমিশন। প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের নির্দেশে পরিকল্পনা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকার এখন দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়া এবং সারা দেশে বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গ্রামের মানুষও যাতে শহরের সুবিধা পায় সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।’
অনুষ্ঠানে পিপিআরসির নির্বাহী পরিচালক হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ঢাকাকে পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়তে হলে ঢাকার বাইরে সমন্বিত পরিকল্পনা ও ঢাকা কেন্দ্রিক পরিকল্পনা একসঙ্গে এগিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রাম পর্যায়ে নিশ্চিত করতে হবে।’
আর্কিটেকচারের নির্বাহী পরিচালক লেখক ও গবেষক আদনান জেড মোর্শেদ বলেন, ‘শহর পরিকল্পনায় সকলকেই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এটা একটা জটিল প্রক্রিয়া। তাই পরিকল্পনার ক্ষেত্রে দুই চারজনকে দিয়ে মহা-পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। টেবিলে বসে নগর পরিকল্পনা করলে হবে না। বাইরে বের হতে হবে। শহর কখনো বেহেশত হবে না।’
অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ‘ঢাকা এখন বহু চরিত্রের সংমিশ্রণ। এই শহরটা অনেক বড় হয়ে গেছে। সময় ও চাহিদার অনুপাতে এখানে নানা কিছু তৈরি হয়েছে, তবে এখনো নারীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়নি। পাবলিক টয়লেটের সংখ্যাই এত অপ্রতুল যে কর্মজীবী নারীরা প্রতিদিনকার জীবনে চরমভাবে ভুক্তভোগী হন। এই বিষয় নিয়ে আমাদের আর ও সংবেদনশীল হয়ে কাজ করতে হবে।’