স্বদেশ ডেস্ক:
গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক কলেজছাত্রীকে তার বাসায় ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় বাধা দিলে তার মা ও তিন বোনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষক সাইদুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
নিহত ছাত্রীর নাম রাবেয়া আক্তার (২১)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। তিনি ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ছুরিকাঘাতে আহতরা হলেন রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছা (৫০), বোন হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫) ও জান্নাত (১৩)।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার হোমনার শ্রীমতি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ সালনা বাজারে আরএফএল প্লাস্টিকের শোরুমে চাকরি করেন। তিনি পরিবার নিয়ে সালনা এলাকায় বসবাস করতেন। তার ছোট দুই মেয়ে খাদিজা (১৫) ও জান্নাতকে (১৩) কোরআন শিক্ষা দিতে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক সাইদুল ইসলামকে হাউস টিউটর হিসেবে নিয়োগ করেন। সাইদুল পাশের টেকিবাড়ী জামে মসজিদে ইমামতি করতেন এবং সেখানে ছোট ছেলেমেয়েদের কোরআন শিক্ষা দিতেন।
বাসায় যাতায়াতের সময় রাবেয়ার ওপর নজর পড়ে সাইদুলের। তিনি রাবেয়াকে বিয়ে করার জন্য রউফের পরিবারে প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। এতে সাইদুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়াকে বিয়ে করার জন্য ফুসলাতে থাকেন। তার খারাপ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে বাড়ির লোকজন তাকে বাসায় এসে পড়াতে নিষেধ করেন।
পরে রাবেয়া কলেজে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া-আসার পথে সাইদুল তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতেও রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে রউফের বাসায় ঢুকে রাবেয়া আক্তারকে ছুরি দিয়ে মাথায়, গলায়, হাতে, পায়ে এলোপাতারিভাবে কোপাতে থাকেন। রাবেয়ার ডাক-চিৎকারে তার মা-বোনরা এসে বাধা দিলে ছুরি দিয়ে তিনি তাদেরও আঘাত করে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় গুরুতর অবস্থায় রাবেয়াকে স্থানীয়রা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। রাজধানীর একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার মা চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।