স্বদেশ ডেস্ক:
আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের কম্বিনেশন নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। চেমসফোর্ডে বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় শুরু হবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।
নিজ দেশে বৈরি আবহাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সিরিজটি আয়ারল্যান্ডের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে হবে স্বাগতিক আইরিশদের। ইতোমধ্যেই সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করায় অবশ্য তেমন কোনো সমীকরণ বাংলাদেশের সামনে নেই।
টাইগারদের লক্ষ্য জয়ের ধারা অব্যাহত রাখা এবং বিশ্বকাপে সহায়ক হবে এমন একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনার সাথে অভ্যস্ত হওয়া। আয়ারল্যান্ড সিরিজটি সেই পরিকল্পনা নির্ধারণের জন্য একটি সঠিক মাধ্যম।
বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘খেলোয়াড়দের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতে হবে এবং দেখতে হবে কোনো কম্বিনেশন আমাদের জন্য সহায়ক হবে।’
তিনি আরো বলেন,‘এশিয়া কন্ডিশনে আমরা একজন অতিরিক্ত স্পিনার নিয়ে খেলবো, কিন্তু ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে আমরা স্বাভাবিকভাবে একজন অতিরিক্ত পেসার নিয়ে খেলবো। ম্যাচ জিততে আমরা নিজেদের সেরাটা দেব। বিশ্বকাপের আগে আসন্ন কিছু সিরিজে আমরা নিজেদের খেলার ধরণ নিয়ে কাজ করবো।’
এর আগে বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহ বলেছিলেন, আধুনিক ক্রিকেটের সাথে মানিয়ে নিতে আক্রমনাত্মক ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে চায় তার দল।
সম্প্রতি হাথুরু বলেন, ‘আমরা ইতিবাচক এবং আক্রমণাত্মক ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছি, এর মানে এ নয় আমরা প্রতিটি বল মাঠের বাইরে মারবো। আক্রমনাত্মক ক্রিকেট মানে আমরা যা কিছু করি, আমরা ইতিবাচক এবং আক্রমনাত্মক উদ্দেশে নিয়েই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আক্রমনাত্মক ফিল্ডিং সাজানো, আমাদের কোন ধরনের বল করতে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া। সুতরাং আমরা নিজেদের প্রমাণের জন্য খেলোয়াড়দের এমন স্বাধীনতা দিতে চাই।’
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, টাইগারদের সাথে আয়ারল্যান্ডের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৩টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। ৯টিতে জয় ও ২টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রিজটাউনে প্রথমবারের দেখায় বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পেয়েছিলো আয়ারল্যান্ড। ২০১০ সালে বেলফাস্টে শেষবার বাংলাদেশকে হারিয়েছিল আইরিশরা। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে যতগুলো ম্যাচ খেলেছে কোনটিতেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি আয়ারল্যান্ড।
সম্প্রতি ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। ওই সিরিজে বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙেছে টাইগাররা। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিজেদের ইতিহাসে ৬ উইকেটে সর্বোচ্চ দলীয় ৩৪৯ রান করে বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে ৬০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের পক্ষে যা দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড।
ওয়ানডের পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে এবং একমাত্র টেস্টও জিতেছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের কোচ হাথুরু বলেন, ‘ওপেনারদের ফিল্ডিং বাধ্যবাধকতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি মাঝের দিকে ব্যাটিং করেন তাহলে বিভিন্ন পরিস্থিতি আসবে, কখনো চারজন বা পাঁচজন আউট হওয়ার পর আসতে হবে। আপনি কিভাবে শুরু করতে চান সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরো বলেন, ‘এজন্য আপনি যদি এভাবে অনুশীলন না করেন, তাহলে উইকেটে গিয়ে থমকে যেতে হবে, যেটা আমরা চাই না। আমরা চাই কোনো পরিস্থিতিতে কেমন খেলতে হবে সে বিষয়ে সবার পরিষ্কার ধারণা থাকুক।’
বাংলাদেশ দল : তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, ইয়াসির আলী, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
আয়ারল্যান্ড দল : অ্যান্ড্রু বলবির্নি (অধিনায়ক), মার্ক অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্পার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, স্টেফেন ডোহেনি, ফিওন হ্যান্ড, গ্রাহাম হুম, জশ লিটল, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, পল স্টার্লিং, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার ও ক্রেইগ ইয়ং।
সূত্র : বাসস