স্বদেশ ডেস্ক:
কক্সবাজার-৪ আসনের বর্তমান এমপি শাহীন আক্তার চৌধুরী ও একই আসনের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির একমাত্র মেয়ে সামিয়া রহমান সানির বিবাহত্তোর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার কোম্পানি বাড়িতে এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের জন্য মেজবানের আয়োজন করা হয়।
এর জন্য জবাই করা হয় প্রায় ৪০০ ছাগল, ৩২টি গরু ও আটটি মহিষ। বেলা ১১টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে অতিথি আপ্যায়ন। পুরো আয়োজনকে আনা হয় সিসি ক্যামরার আওতায়। অনুষ্ঠানে বয় বেয়ারার কাজ করেছে শতাধিক রোহিঙ্গা। স্থানীয়রা জানান, এই বিয়েকে কেন্দ্র করে সপ্তাহ ধরে চলে প্রস্তুতি। ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে আনা হয় সাজসজ্জার সরঞ্জামাদি।
মূল ফটক থেকে বর-কনের মঞ্চ, খাবারের প্যান্ডেল পর্যন্ত ছিল বিভিন্ন জিনিসের কারুকাজ। প্রধান গেট থেকে বিশাল এলাকাজুড়ে ছিল বর্ণিল ও চোখ ধাঁধানো আলোর ঝলকানি। আয়োজনের পুরোটা তদারকি করেন সাবেক এমপি বদি। টেকনাফের মানুষ আর কখনো এমন রাজকীয় বিয়ে দেখেনি বলে জানান স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ আবদুর রহমান ও আবুল কালাম।
অনুষ্ঠানের এক ডেকোরেশন কর্মী জানিয়েছেন, খাবার বাদ দিলে শুধু সাজসজ্জাতেই সম্ভবত ব্যয় হয়েছে কোটি টাকার ওপরে। স্থানীয় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আনা শতাধিক যুবক মেজবানে বয় বেয়ারার কাজ করেছে।
সাবেক এমপি বদির ব্যক্তিগত সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন জানান, সামিয়া রহমান সানির বরের নাম ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীন। তিনি নেত্রকোনা জেলার জয়নগরের সুরত আলী ও মনোয়ারা আক্তারের ছেলে। এমপি কন্যা সানির সঙ্গে ব্যারিস্টার রানার প্রায় ৯ মাস আগে আকদ সম্পন্ন হয়। সামিয়া রহমান সানি বর্তমানে ঢাকার লন্ডন ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজে অনার্স তৃতীয় সেমিস্টারে অধ্যয়নরত।
এদিকে সাবেক এমপি বদি একমাত্র মেয়ের বিয়ে নিয়েও রাজনীতি করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, আবদুর রহমান বদি কেবল তার অনুসারী হিসেবে পরিচিতদেরই মেয়ের বিয়েতে দাওয়াত দিয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অন্য নেতাকর্মীদের তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানাননি।
পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে একইদিন উখিয়া উপজেলা যুবলীগ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভোজের অয়োজন করে। নেতাকর্মীরা চাঁদা তুলে এ আয়োজন করেছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন।
ইমাম হোসেন বলেন, আবদুর রহমান বদির দুটি সংসদ সদস্য নির্বাচন ও গত সংসদ নির্বাচনে তার স্ত্রী শাহীন আকতার চৌধুরীর পক্ষে যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানবাজি রেখে কাজ করেছে। অথচ তারা মেয়ের বিয়েতে যুবলীগকে মূল্যায়ন করেনি। এ নিয়ে নেতাকর্মীরা চরম ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট। এ বিয়েতে খাবারের জন্য অনেক পুরনো রোহিঙ্গা দাওয়াত পেলেও আমরা পাইনি।