স্বদেশ ডেস্ক:
ঢাকাসহ সারাদেশে শিল্পায়নের ফলে ভূপৃষ্ঠের পানি জৈব রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা দূষিত হওয়া ছাড়াও এখন এতে নতুন করে ‘ভোলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ড’-এর উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য নতুন এই হুমকি থেকে বাঁচতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ১৭৮ কোটি ৫৬ লাখ ১৪ হাজার টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
যার আওতায় ৫২ জেলায় পানি পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি কাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপন করা হতে পারে। প্রকল্প ব্যয়ের পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে মেটানো হবে। এটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বলে পরিকল্পনা কমিশনসূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে ময়মনসিংহ, রাজশাহী, কুমিল্লা, খুলনা, ঝিনাইদহ, রংপুর, বগুড়া, সিলেট, টঙ্গী, বরিশাল, নোয়াখালী, ঢাকাসহ ১২টি পানি পরীক্ষাগার রয়েছে। কিন্তু সব পরীক্ষাগার থেকে অনেক জেলার দূরত্ব বেশি হওয়ায় পানি পরীক্ষা করার জন্য নিয়মিত নমুনা সংগ্রহ এবং পরিবহনের জটিলতা দেখা দেয়। এর ফলে অনেক পানি পরীক্ষার সঠিক ফল পাওয়া যায় না।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জানায়, বর্তমানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত এসব পরীক্ষাগারে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি যন্ত্রপাতি দ্বারা পানির বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষা করার সুবিধা রয়েছে। এসব অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি অত্যন্ত ব্যয়বহুলÑ এমনকি এদের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনেরও প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়।
তবু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প থেকে কিছু কিছু তহবিল সংগ্রহ করে ১২টি পরীক্ষাগারে পানি পরীক্ষার রাসায়নিক দ্রব্যাদি সংগ্রহ কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তহবিল ও লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবে পানি পরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণের নতুন কাজ হাতে নেওয়া সম্ভব হয় না। এ ছাড়া প্রয়োজনবোধে নতুন নতুন প্যারামিটার পরীক্ষা করে পানির গুণগতমান যাচাইয়েরও প্রয়োজন হতে পারে।
অধিদপ্তরের চলমান বিভিন্ন প্রকল্পে স্থাপিত নতুন উৎসের পানি পরীক্ষার জন্য বিদ্যমান ১১টি আঞ্চলিক ও একটি কেন্দ্রীয় পানি পরীক্ষাগারের কার্যক্রম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাই অনুষ্ঠিত পিইসি সভার সুপারিশ অনুসারে দেশের অবশিষ্ট ৫২ জেলায় অধিদপ্তরের বিদ্যমান অফিসগুলোতে প্রয়োজনীয় কক্ষের ব্যবস্থা করে নতুন ৫২টি পানি পরীক্ষাগার স্থাপনের লক্ষ্যে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ৫২ জেলা সদরে নতুন পানি পরীক্ষাগার স্থাপন করা সম্ভব হবে। পানি পরীক্ষার সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে জনসাধারণ নিরাপদ পানি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবে এবং পানিবাহিত নানাবিধ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারবে।