স্বদেশ ডেস্ক:
সরকারি-বেসরকারি অর্থায়নে নির্মাণ করা হবে ঢাকায় আউটার রিং রোড। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের গাড়ি রাজধানীর ভেতরে প্রবেশ না করেই যাতায়াত করতে পারবে। রাজধানীতে গাড়ির চাপ সামলাতে এ প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে প্রথমে হবে দক্ষিণ অংশের কাজ। অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এ প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।
ঢাকার পূর্ব-পশ্চিমের তুলনায় উত্তর-দক্ষিণে গাড়ির চাপ বেশি। তাই ঢাকার চার পাশে ইনার রিং রোড ও আউটার রিং রোড নির্মাণ করা হবে। এজন্য রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশোধিত রুটটি হলোÑ হেমায়েতপুর-কালাকান্দি-তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু-মদনপুর-ভুলতা (ঢাকা বাইপাস হয়ে)-কড্ডা (গাজীপুর)-বাইপাইল (ঢাকা ইপিজেড)-হেমায়েতপুর। এ রুটের মোট দৈর্ঘ্য ১৩০ কিলোমিটার।
এর মধ্যে ৪৬ কিলোমিটারে নতুন সড়ক নির্মাণ করতে হবে। উন্নয়ন করতে হবে অবশিষ্ট ৮৪ কিলোমিটার বিদ্যমান সড়ক। এ মহাসড়কটি নির্মাণ করা হবে ৩ বছরে। ২৫ বছর পর্যন্ত টোল দিতে হবে এ পথ পাড়ি দেওয়া যানগুলোকে। এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান বলেন, ঢাকায় একটি আউটার রিংরোড নির্মাণ করবে সওজ। এর মাধ্যমে মূল শহরে প্রবেশ ছাড়াই গাড়ি পারাপার হতে পারবে। ফলে নগরীর যান চলাচলে চাপ কমবে।
জানা গেছে, নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর ও পূর্বাংশের সংযোগ স্থাপন করবে। পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে মুন্সীগঞ্জ ও মাওয়া হয়ে যাত্রাবাড়ী দিয়ে অসংখ্য যান ঢাকা শহরে প্রবেশ করবে। এতে যোগাযোগব্যবস্থা অসহনীয় করে তুলতে পারে। তাই সংশোধিত এসটিপিতে প্রস্তাবিত এলাইনমেন্টের মধ্যে রিং রোডের দক্ষিণ
অংশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বলা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, এ দক্ষিণ অংশ মানে হেমায়েতপুর-কালিকান্দি-মদনপুর অতিদ্রুত নির্মাণ করা উচিত। এই ৪৮ কিলোমিটার অংশের জন্য তিনটি রুটি প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়ককে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরে না ঢুকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে পারবে যানবাহন।
সূত্রমতে, হেমায়েতপুর থেকে কালিকান্দি হয়ে মদনপুর পর্যন্ত মহাসড়কের উভয় পাশে ৫.৫০ মিটার প্রশস্ত সার্ভিস লেন রাখা হবে। মধ্যবর্তী অংশে থাকবে মহাসড়ক বিভাজক। প্রস্তাবিত রিং রোডের কিছু স্থানে ইন্টারসেকশন থাকায় ওভারপাস ও ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ করতে হবে। প্রাথমিক জরিপ অনুযায়ী প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত এ মহাসড়কে প্রবেশ ও নির্গমনের জন্য সীমিতসংখ্যক গ্রেড-সেপারেটেড ইন্টারচেঞ্জের সংস্থান থাকবে। কেবল এসব নির্ধারিত স্থানে যানবাহন মহাসড়কে ব্যবহারের সুবিধা লাভ করবে।
যাত্রাকালে জ্বালানি সরবরাহ, যাত্রীদের বিশ্রাম ও পানাহাররের জন্য ১টি সার্ভিস এরিয়ার সংস্থান রাখা হয়েছে। প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা। নির্মাণকালীন ৩ বছরসহ সর্বমোট কনসেশন পিরিয়ড হবে ২৫ বছর। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচের ৩০ শতাংশ ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফাইন্যান্সিংয়ের (ভিজিএফ) প্রয়োজন হবে। ভিজিএফ ছাড়াও ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, ইউটিলিটি শিফটিং, স্বতন্ত্র প্রকৌশলী এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যয়বাবদ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের টোল নীতিমালা ২০১৪-এ উল্লিখিত যানবাহনের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে টোলহার।