স্বদেশ ডেস্ক:
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এক নারী। এসময় চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত গর্ভপাত করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেজন্য অফিসে গিয়ে ছুটির দরখাস্ত দেন তিনি। কিন্তু ছুটি তো মেলেইনি, উল্টো চাকরি হারিয়েছেন ওই নারী।
ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট কলকাতায় চুক্তির ভিত্তিতে গবেষণা সহায়ক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ওই নারী। গর্ভাবস্থায় ছুটি যাওয়ায় তাকে বরখাস্তের চিঠি দেওয়া হয়।
পরে প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করলেও কাজ না হওয়ায় ওই নারী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন। যে আইনে কোনো কারখানায় কর্মরত মহিলা শ্রমিক মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতে পারেন, সেই আইনে দেশের অন্যতম নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মরত মহিলা কর্মী একই রকম সুবিধা পাবেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি মামলাটি হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে ওঠে। হাইকোর্ট সব পক্ষকে নিজেদের বক্তব্য হলফনামার আকারে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। আইআইএম, কলকাতার একটি সূত্রে অবশ্য জানা গেছে, ওই নারী আগাম কিছু না জানিয়েই হঠাৎ ছুটিতে চলে যান, এমনকি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে ওই নারীর বক্তব্য, এক বছরের চুক্তিতে গবেষণা সহায়ক হিসেবে তিনি গত নভেম্বরে আইআইএম কলকাতায় যোগ দেন। তার পর থেকে নানাভাবে তাকে হেনস্থা করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। এর মধ্যে এ বছর মার্চ মাসে তার শারীরিক অসুস্থতা বাড়লে তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শ নেন। বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করার পর তাকে দ্রুত গর্ভপাত করাতে বলেন চিকিৎসকরা।
পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় তার শারীরিক জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে পুরোপুরি বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন বলেও জানান ওই নারী।
আদালতে ওই নারী জানান, তিনি চিকিৎসকদের যাবতীয় লিখিত পরামর্শ-সহ সমস্ত নথি দিয়ে কতৃর্পক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু তাকে মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়ার পরিবর্তে চাকরি ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। ওই অবস্থায় তিনি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ই-মেইল করে ছুটি চান ও বিশ্রামে চলে যান। তাতেও কোনো কাজ হয়নি।
এমনকি তিনি যখন চিকিৎসকের কাছে পরীক্ষার জন্য গেছেন তখন তার এক ঊর্ধ্বতন বাড়িতে এসে শ্বশুরকে হুমকি দিয়ে জানান, তার বৌমা চাকরি না ছাড়লে ফল খারাপ হবে, যোগ করেন ওই নারী।