স্বদেশ ডেস্ক:
কয়েক বছর আগেও স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো অডিও’র গুণগতমানের ওপর তেমন একটা গুরুত্বারোপ করতো না। বরং ব্র্যান্ডগুলো ভিন্নধরনের হেডফোন কিংবা ইয়ারফোন বাজারে নিয়ে আসতে বেশি মনোযোগী ছিলো। সময়ের পরিক্রমায় স্মার্টফোন প্রযুক্তির অনেক বিকাশ ঘটেছে এবং স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর কাছে ব্যবহারকারীরও অনেক প্রত্যাশা বেড়েছে; বিশেষ করে, স্মার্টফোনে ভিন্নধর্মী ও উন্নত ফিচার যুক্ত করার ক্ষেত্রে। স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে অনেক ক্রেতা ফোনের গুণগতমানের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন; বিশেষ করে, যারা ভালো সাউন্ড পাওয়ার জন্য হেডফোন বা ইয়ারফোনের ওপর র্নিভর না করে বিনোদন কিংবা শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্মার্টফোনের ওপর নির্ভর করে তাদের জন্য ভালো সাউন্ড কোয়ালিটির স্মার্টফোন বেশ জরুরি। বর্তমান সময়ে স্মার্টফোনে স্টেরিও সাউন্ড কোয়ালিটির বিষয়টি অস্বাভাবিক কিছু নয়, বরং প্রিমিয়াম ও মিড রেঞ্জ ক্যাটাগরির ফোনে এ ফিচারটি ক্রেতাদের একটি সাধারণ প্রত্যাশা।
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোনের অডিও’র গুণগতমান সম্পর্কে ক্রেতাদের সচেতনতা আগের চেয়ে বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের জন্য উন্নতমানের সাউন্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করতে তাদের ডিভাইসে নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করছে। এতে করে, আশাব্যঞ্জক ফলও দেখা গেছে। এটি হয়েছে শক্তিশালী নতুন হার্ডওয়্যার চিপ ব্যবহারের কারণে, যা শব্দ প্রক্রিয়া করার জন্য অডিও প্লেব্যাক ও অ্যালগরিদমকে উন্নত করেছে।
ক্রেতাদের জন্য স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর উন্নত মানের সাউন্ড কোয়ালিটি যুক্ত করার বিষয়টি বেশ সময়োপোযোগী। দেশে স্পটিফাই ও নেটফ্লিক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে স্মার্টফোনে ভালো মানের অডিও সিস্টেমের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ম্যানেজমেন্ট কনসালটিং ফার্ম পিআই স্ট্র্যাট্রেজি’র মতে, ২০১৯ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশে নেটফ্লিক্সের গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ২ লাখ। বিগত কয়েক বছরে দেশে আশানুরূপ ডিজিটাল প্রবৃদ্ধি হয়েছে। মূলত, মোবাইল ডাটা ও স্মার্টফোনের সুলভ মূল্যের কারণে এ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি হয়েছে। এতে করে, স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বিকাশ ঘটেছে। একটি বিষয় স্পষ্ট যে, পুরো ডিজিটাল বিনোদন খাত বিশাল হয়ে উঠেছে এবং পরবর্তী কয়েক দশকে এ খাতের বিকাশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ দু’টি বিষয় স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের বিরামহীনভাবে কনটেন্ট উপভোগের সুযোগ তৈরি করবে।
প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনের সাথে সাথে ক্রেতাদের ফোন কেনা ও ব্যবহারের আচরণগত অভ্যাসেও পরিবর্তন এসেছে। একুশ শতকে মানুষের জীবন বেশ কর্মমুখর। এ পরিপ্রেক্ষিতে, যে কোন পরিস্থিতিতেই মানুষ কনটেন্ট উপভোগের প্রত্যাশা করেন। পরিবর্তিত এ পরিস্থিতিতে, স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো হাই-এন্ড (বেশি বাজেট) ফোনগুলোতে অতিরিক্ত ফিচার হিসেবে স্টেরিও ফিচার ব্যবহার করছে এবং স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ফোনের ওপরে এবং নিচে মাইক্রো স্পিকারও ব্যবহার করছে। ব্যবহারকারীরা যখন স্টেরিও-এনহ্যান্সড ফোনের ডিসপ্লে দিয়ে কোন কিছু দেখবে তখন তাদের ’স্টেরিও’ ফিচারের মাধ্যমে অডিও শোনার অভিজ্ঞতাও বেশ উন্নততর হবে; কারণ, এ ফোনগুলোর উভয় পাশেই একটি স্পিকার রয়েছে।
স্মার্ট ডিভাইস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের পরিবর্তিত চাহিদানুযায়ী ফোনে বিভিন্ন ধরনের ফিচার যুক্ত করতে সচেষ্ট রয়েছে। ফোনগুলো এখন টেলিভিশন, গেমিং কনসোল ও অন্যান্য ডিজিটাল বিনোদনের ট্যুলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। বর্তমান সময়ের অভূতপূর্ব উদ্ভাবনই এ পরিবর্তনকে (স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি) ত্বরাণ্বিত করছে। নিত্য নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন স্মার্টফোন ব্র্যান্ড এর ফ্ল্যাগশিপ ও বাজেট-বান্ধব ফোনগুলোতে ’লার্জার ও শার্পার’ রেজ্যুলেশনের স্রিযান ব্যবহার করছে। স্মার্টফোনে গুণগত মানের অডিও এবং ভিজ্যুয়ালের সমন্বয় এ নতুন প্রযুক্তিগুলোর অবিচ্ছেদ্য অংশ। মূলত, বর্তমানে ব্যবহারকারীরা কনটেন্ট উপভোগের সময় আরামদায়ক স্রি েন ও পরিষ্কার সাউন্ড প্রদান করে এমন একটি ফোন ব্যবহার করতে চায়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিগত ব্র্যান্ড অপো এর নতুন স্মার্টফোন সিরিজ এ৫৭ এর এক্সক্লুসিভ ডুয়েল-বক্সের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের জন্য নিয়ে এসেছে একই রকম স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেম। এ৫৭ সিরিজের ফোন ব্যবহারকারীর জন্য থাকছে ডুয়াল-বক্স। পাশাপাশি, এ ডিভাইসটিতে রয়েছে এসিম্যাট্রিক ডিজাইনের আলট্রা-লিনিয়ার স্টেরিও সাউন্ড সেটাপ; যেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ডিরাক৩.০ প্রযুক্তি, যা আশপাশের নয়েজকে কমিয়ে এনে দুর্দান্ত সাউন্ড কোয়ালিটি নিশ্চিত করে। এই অনন্য সাউন্ড সিস্টেম দুর্দান্ত সাউন্ড, ভলিউম এবং তুলনামূলকভাবে কম ব্যাটারি কাভার ভাইব্রেশন নিশ্চিত করে। এ৫৭ ডিভাইসটির জন্য অপটিমাইজড ম্যাগনেটিক সার্কিট (এয়ার গ্যাপ সহ) উদ্ভাবন করেছে অপো, যেখানে প্রায় ৩ ডেসিবেল পর্যন্ত লো-ফ্রিকোয়েন্সির পারফরমেন্স অর্জন করতে ডায়াফ্রাম ম্যাটেরিয়াল কাস্টমাইজড করা হয়েছে।
বর্তমানে অপো’র মতো বিশ্বের অনেক স্মার্ট-গ্যাজেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডিভাইসে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে চমৎকার অডিও কোয়ালিটি ও সুবিশাল স্ক্রিন যুক্ত করছে। সময়ের সাথে সাথে স্মার্টফোনের যেসব বিষয় উন্নতীকরণের প্রয়োজন বলে ব্যবহারকারীরা প্রত্যাশা করছেন তার মধ্যে সাউন্ড কোয়ালিটি অন্যতম।