স্বদেশ ডেস্ক:
ঢাকায় সচিবালয়ে আগুন গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘অর্থপাচার ও দুর্নীতির ফাইলপত্র নষ্ট করতেই সচিবালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে।’
রংপুরের মিঠাপুকুরের আটপুনিয়া গ্রামে সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে নিহত ফায়ার ফাইটার সোয়ানুর জামান নয়নের পরিবারের সঙ্গে আজ শনিবার সকালে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির এই নেতা। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘সচিবালয়ে আগুন গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ, নিঃসন্দেহে এটা চক্রান্তের অংশ। পতিত শেখ হাসিনার একজন প্রধান আমলা, মুখ্য সচিব প্রচুর টাকা পাচার করেছেন। তার সেই অর্থ পাচারের ফাইলগুলো ছিল সেখানে। পুড়ে যাওয়া ফাইলগুলোর মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ থেকে পলাতক স্বৈরাচার হাসিনার মুখ্য সচিব অনেক টাকা পাচার করেছিল, সেই সব দুর্নীতির ফাইলগুলো ওই স্থানে ছিল। সেগুলো পুড়িয়ে দিতেই এই আগুন। ’
‘আজকে হাসিনা ও তার পুত্র জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের প্রমাণ দিয়েছে এফবিআই। আরও কত দুর্নীতি করেছে হাসিনা ও তার দোসরগুলো, আল্লাহ জান’, যোগ করেনবিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
এ সময় ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেলেও বিশেষ করে আমলাতন্ত্র এখনো ফ্যাসিবাদের তোষামোদি করছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী। তিনি বলেন, এখনো দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় হাসিনার দোসরগুলো আছে। তারা চক্রান্ত করে যাচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা ও দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের স্পিরিট অক্ষুণ্ন রাখতে এখনো সোহানুর জামান নয়নরা জীবন দিয়ে যাচ্ছে।
সচিবালয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি ছিল- উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাদের জীবনবাজি রেখে আগুন নেভাতে কাজ করেছে, সোহানুর জামান নয়ন- তার মধ্যে অন্যতম। চলমান স্বাধীনতা রক্ষার অন্যতম শহীদ হচ্ছেন সোহানুর জামান নয়ন। দেশের স্বার্থে নিজের জীবন বাজি রেখে শহীদ হয়েছেন নয়ন, সচিবালয়ের যে ফ্লোরে আগুন লেগেছিল, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ছিল।’
এ সময় নিহত নয়নের বোনকে আগামী এক মাসের মধ্যে চাকরি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।
উল্লেখ্য, আজ সোহানুর জামান নয়নের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন রিজভী। পরে প্রতিনিধিদলটি নয়নের কবর জিয়ারত করেন।
এ সময় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, রংপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকুসহ মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের চেষ্টায় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।