সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন

‘ক্রসফায়ারে’ নিহত মাদক কারবারির অ্যাকাউন্টে সোয়া ১১ কোটি টাকা

‘ক্রসফায়ারে’ নিহত মাদক কারবারির অ্যাকাউন্টে সোয়া ১১ কোটি টাকা

স্বদেশ ডেস্ক:

নাম তাঁর জাহেদুল ইসলাম আলো। তবে ডুবে ছিলেন অন্ধকার জগতে। ভয়ংকর মাদক কারবারি আলো সাত বছর আগে চট্টগ্রামে ‘ক্রসফায়ারে’ মারা যান। তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মিলেছে সোয়া ১১ কোটি টাকার হদিস। ঢাকা, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই ব্যাংক হিসাবে সাড়ে চার মাসে জমা হয় এই টাকা। টেলিকম ব্যবসার আড়ালে মাদকের টাকা আলোর অ্যাকাউন্টে জমা দেন চার সহযোগী। আলোর অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছেন আদালত।

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের ধোপাড়া আমীন কন্ট্রাক্টর রোডের আলোর নামে নগরীর বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে। ২০১৫ সালের আগস্টে আলো র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আবেদনের পর ২৫ জুলাই আদালত আলোর খাজা টেলিকমের অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই অ্যাকাউন্টে প্রায় সোয়া ১১ কোটি টাকা আছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক (অপারেশন) আহসানুর রহমান জানান, আলো ছিলেন শীর্ষ মাদক কারবারি ও গডফাদার। তাঁর অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন স্থান থেকে মাদক বিক্রির টাকা পাঠানোর তথ্য পেয়ে মামলা করা হয়।

মাদারীপুর সদরের পূর্বরাস্তি এলাকার টিটু নামের একজনের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে আলোর অন্য তিন সহযোগী জাবেদ, ফারজানা আক্তার সুমী ও হাসানের নাম জানা যায়। এই চারজন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জালে আটকে পড়েছেন। হাসানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য জানতে গিয়েই আলোর ব্যাংক হিসাবে বিপুল অর্থের সন্ধান মেলে। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চট্টগ্রামের পাহাড়তলী শাখায় আলোর অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া যায়। তাঁর অ্যাকাউন্টে ২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ কোটি ১৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন ওই চারজন। আলোর প্রধান সহযোগী নগরীর বন্দর থানার মৌলভীপাড়ার জাবেদ ও তাঁর স্ত্রী সুমি।

জাবেদ ঢাকার দনিয়ায় ব্যাংকের শাখা থেকে ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত দুই কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা জমা দেন। তাঁর স্ত্রী সুমি ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ৬০ লাখ ১৫ হাজার টাকা জমা করেন। নুরুল ইসলাম টিটু ঢাকার দনিয়া শাখা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত জমা করেন ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৭০০ টাকা। মাদারীপুর থেকে মাদক কারবারি হাসান ২৫ আগস্ট থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ৯৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা জমা করেন। আলোর অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে গিয়ে তাঁরা ব্যাংকের ফরমে মোবাইল ব্যবসার কথা উল্লেখ করতেন। কিন্তু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তদন্ত করে তাঁদের মোবাইল ব্যবসার কোনো তথ্য পায়নি।

২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর র‌্যাব ২ লাখ ১২ হাজার ৬৯০ পিস ইয়াবা, ১৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকা এবং অস্ত্র জব্দ করার পর হালিশহর থানায় আলোর নামে দুটি মামলা করে।

২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট অস্ত্র ও ইয়াবা জব্দ করার পর র‌্যাব আকবর শাহ থানায় তিনটি মামলা করে।

জাবেদের বিরুদ্ধে নরসিংদীর রায়পুরা থানায় একটি, চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ থানায় দুটি মাদকের মামলা রয়েছে। তাঁর স্ত্রী সুমির বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় একটি ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্বিরগঞ্জে একটি মামলা হয়েছে। হাসানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও রায়পুরায় তিনটি মামলা হয়েছে। টিটুর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও মাদারীপুরে তিনটি মামলা আছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877