স্বদেশ ডেস্ক:
আগ্রাসীদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে সাত-পাঁচ ভাবার দরকার বোধ করে না তেহরান- এমন হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে মার্কিন বোমারু বিমানের মহড়ার পরিপ্রেক্ষিতে তেহরান থেকে ঝাঁজালো সুর শোনা গেল। এ কারণে অনেকে মনে করছেন, ঠিক বিদায়লগ্নে এসে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বাঁধিয়ে চলে যাচ্ছেন না তো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প?
স্পুৎনিক নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষ করে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ ট্রাম্প নিতেও পারেন। তার ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র চার দিন আগে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম যুক্তরাষ্ট্রের বি-৫২ বোমারু বিমান ওড়ায় সেই আশঙ্কা বেড়েছে। অবশ্য ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম পরিচালনাকারী কেন্দ্রীয় কমান্ড (সেন্টকম) দাবি করেছে, এটি তাদের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার একটি অংশ মাত্র। গত কয়েক মাসের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে পঞ্চমবারের মতো বি-৫২ বোম্বার ওড়াল মার্কিন বাহিনী। বোয়িংয়ের তৈরি বিশাল বিমানটি প্রায় ৩২ হাজার কেজি গোলাবারুদ বহনে সক্ষম।
সেন্টকমে কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক ম্যাকেনজি বলেছেন, এ ধরনের মিশনগুলোর মাধ্যমে আঞ্চলিক সুরক্ষায় মার্কিন বাহিনী কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সেটাই দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেছেন, কৌশলগত সম্পদের সাময়িক মোতায়েন এ অঞ্চলে আমাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে প্রশিক্ষণের সুযোগ তৎপরতা বৃদ্ধি করে এবং মিত্র ও সম্ভাব্য প্রতিপক্ষগুলোর কাছে একটি পরিষ্কার বার্তা পৌঁছে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র মুখে তেহরানকে উসকানি দেওয়ার বিপক্ষে দাবি করলেও গত কয়েক সপ্তাহে ইরানের বিরুদ্ধে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বোম্বারু বিমান ওড়ানোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এক টুইটে তিনি বলেছেন, এটি তেহরানকে উসকানি দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা মাত্র। এভাবে সামরিক বাহিনীর পেছনে শত কোটি ডলার ব্যয় না করে সেই অর্থ মার্কিনিদের স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয়ের পরামর্শ দিয়েছেন জাভেদ জারিফ।
প্রতিপক্ষকে হুশিয়ারি দিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা গত ২শ বছরের মধ্যে কোনো যুদ্ধ শুরু না করলেও আক্রমণকারীদের পিষে ফেলতে লজ্জাবোধ করব না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে গত দুই সপ্তাহে চারবার বড় আকারের সামরিক মহড়া দিয়েছে ইরান। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ওমান উপসাগরে সামরিক মহড়া চালিয়েছে দেশটির নৌবাহিনী। আর ইরানি সেনাবাহিনী ড্রোন মহড়া চালিয়েছে গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি।