স্বদেশ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন চলাকালে যখন লাখ লাখ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন, তখন অনলাইনে ভোটগ্রহণের স্বচ্ছতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
তবে নির্বাচনী কর্মকর্তারা দ্রুততার সাথে কিছু অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন, যার মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও একটি অভিযোগ রয়েছে।
একইসাথে কিছু যৌক্তিক সমস্যার ভুল ব্যাখ্যার বিষয়েও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা।
ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেয়া এক পোস্টে বলেছেন, ব্যাপক জালিয়াতির কারণে ফিলাডেলফিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসছে।’
তবে তিনি এ অভিযোগের বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ দেননি।
ফিলাডেলফিয়া পুলিশ জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে কিছু জানে না।
ট্রাম্প আরো দাবি করেন, ডেট্রয়েটে অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
কিন্তু সেখানকার পুলিশ জানিয়েছে, ‘সম্প্রতি আমাদের জনবল বাড়ানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
পেনসিলভেনিয়ায় কারচুপি? ট্রাম্পের অভিযোগে উত্তপ্ত মার্কিন নির্বাচন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে পেনসিলভেনিয়ার গুরুত্ব খুবই। তাই এই রাজ্য দখলের লড়াইয়ে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। ট্রাম্প হোক বা ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের কাছে ‘পাখির চোখ’ পেনসিলভেনিয়া। প্রচারের শেষবেলাতেও দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছুটে যেতে দেখা গেছে এই রাজ্যে।
সেখানেই ভোটে গরমিল? ২০২০ সালেও একই অভিযোগ তুলেছিলেন ট্রাম্প। সেবার পেনসিলভেনিয়াতে হারের পর প্রথম প্রতিক্রিয়া হিসাবে ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন ভোট কারচুপির। এবার যখন আমেরিকার ভোটপ্রক্রিয়া মধ্যগগণে তখন একই অভিযোগ শোনা গেল প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের মুখে। যদি সেই রাজ্যের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ট্রাম্প ‘বিভ্রান্তি’ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
আমেরিকার রাজনীতিতে ‘সুইং স্টেট’ বা ‘ব্যাটেল গ্রাউন্ড স্টেট’ নামে পরিচিত পেনসিলভেনিয়া। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পেনসিলভেনিয়ার মতো সাতটি প্রদেশই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবে। ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত প্রায় তিন দশক ডেমোক্র্যাটদের দখলে ছিল পেনসিলভেনিয়া। কিন্তু ২০১৬ সালে ধাক্কা দেন ট্রাম্প। হিলারি ক্লিনটনের মুখ থেকে পেনসিলভেনিয়া ছিনিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০২০ সালে নির্বাচনে সেখানেই হারতে হয় ট্রাম্পকে। লাল পতাকা নামিয়ে ডেমোক্র্যাটেরা পেনসিলভেনিয়া উড়িয়েছিলেন নীল পতাকা। সেবার ভোটের ফলাফল অস্বীকার করেছিলেন ট্রাম্প। এবারো যদি পেনসিলভেনিয়াতে ট্রাম্প হারেন একই ঘটনা ঘটাতে পারেন বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
২০২৪ সালে যদি পরাজয় ঘটে তা কি মেনে নেবেন ট্রাম্প? মঙ্গলবার সেই প্রশ্নের উত্তরে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তবে আমি প্রথম এটা স্বীকার করব।’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ট্রাম্প মুখে যাই বলুক না কেন, পরাজয় যদি ঘটে তবে সহজে মানতে পারবেন না তিনি।
সূত্র : বিবিসি, আনন্দবাজার পত্রিকা এবং অন্যান্য