স্বদেশ ডেস্ক:
নারী-পুরুষ উভয়েরই টাক হতে পারে। বংশগত কারণে চুল পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা কম সক্রিয় থাইরয়েড গ্ল্যান্ড, অপর্যাপ্ত পুষ্টি ও মাথার ত্বকে অপর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন চুল পড়ার অন্যতম কারণ। এ ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক খাবারই চুলের শক্তিশালী গড়ন ও সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে এগারোটি খাদ্য ও প্রাকৃতিক উপাদান চুল বাড়াতে দারুণ সহায়ক-
১. নিয়মিত অ্যাসেনসিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। কারণ আমাদের শরীর নিজ থেকে এটি উৎপাদনে সক্ষম নয়। এটি মাছ বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ থেকে ভালো পাওয়া যায়। এটি শুঁটকিতে প্রচুর পাওয়া যায়।
২. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের কোলাজেন দ্রুত ভেঙে যায়। ফলে চুলও হয়ে পড়ে ভঙ্গুর। এই কোলাজেন টিস্যু বাড়াতে ভিটামিন-সি গুরুত্বপূর্ণ। সব সাইট্রাসফুড, যেমন- আমলকী, লেবু, স্ট্রবেরি, লাল মরিচ থেকে প্রচুর ভিটামিন-সি পাওয়া যায়, যা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. Biotin, যা ভিটামিন-ই-ঈড়সঢ়ষবী-এর অন্তর্ভূক্ত, তা নতুন চুল গজানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। উচ্চমূল্য Biotin ক্যাপসুল কিনে খাওয়ার চেয়ে প্রতিদিন সামান্য বাদাম, ঢেঁকিছাটা চাল শরীরে প্রচুর পরিমাণে Biotin-এর ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
৪. কেরোটিন প্রোটিন চুলের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এ প্রোটিন তৈরিতে METHYL SULFONYL METHANE (MSM) জরুরি। লতাপাতাযুক্ত সবজি, বাঁধাকপি ইত্যাদিতে এটি পাওয়া যায়। তাবে অতিরিক্ত তাপে রান্না করার চেয়ে সিদ্ধ, অর্ধসিদ্ধ খাবারে মাত্রা বেশি পাওয়া যায়।
৫. চুলের বৃদ্ধি ও নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে আয়রনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সব ধরনের সবুজ শাকসবজি, কলা, জাম, কাজুবাদাম আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। তবে শরীরে খাবার থেকে আহরিত ভিটামিন-সি প্রয়োজন।
৬. মিনারেল সিনিক্স ও জিঙ্ক চুল বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন ১ হাজার মিলিগ্রাম সিনিকা ও ৩০ মিলিগ্রাম জিঙ্ক চুল গজানোয় ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়ক। শশা, আম, সবুজ শাকসবজি, শিমে প্রচুর সিনিকা পাওয়া যাবে। ডিম ও লাউয়ের বিচিতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় জিঙ্ক, যা চুলের পুষ্টি জোগায়।
৭. প্রতিদিন নিয়মিত VITAMIN ‘ই’ COMPLEX গ্রহণ (১০০ মিলিগ্রাম) চুল পাতলা হওয়া প্রতিরোধ করার পাশাপাশি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
৮. VITAMIN চুলের ভঙ্গুরতা কমিয়ে কেরাটিন প্রোটিন তৈরিতে ভূমিকা রাখে। সরিষার তেল, জলপাই তেল এবং পালংশাক পর্যাপ্ত ভিটামিন-ই জোগান দিতে সক্ষম।
৯. মাথার ত্বকের রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধিতে কুসুম গরম নারিকেল তেল বা ROSEMARY OIL নিয়মিত সপ্তাহে অন্তত দুদিন মেসেজ করলে উপকার পাওয়া যায়।
১০. VITAMIN-D চুলের বৃদ্ধি ও ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে সাহায্য করে। নাগরিক জীবনে অনেকেই প্রতিদিন AIR CONDITIN ROOM-এ আবদ্ধ থেকে সূর্যকিরণ থেকে বঞ্চিত। তাদের জন্য নিয়মিত VITAMIN-D ট্যাবলেট গ্রহণ করা প্রয়োজন।
১১. থাইয়েড গ্ল্যান্ডের কার্যকারিতায় অনেকাংশে চুল পাতলা হয় ও টাক পড়ে। থাইরডের সমস্যা সংক্রান্ত রোগী আমাদের দেশে প্রচুর। তাই সম্ভব হলে থাইরয়েড FUNCTION TEST করা প্রয়োজন। নিয়মিত চুলের যতœ নিন। চুল সংক্রান্ত সমস্যায় আম্নবিশ্বাসের অভাব, হীনমন্যতা ও মানসিকভাবে পিছিয়ে না থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।