স্বদেশ ডেস্ক:
প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হলেও শেষ পর্যন্ত অপসারিত হচ্ছেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটি অবশ্য আগে থেকেই ধারণা করা হয়েছিল, কেননা সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাকে শেষ রক্ষা করার কথা। সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের আনা প্রথম প্রস্তাব ৪৮-৫২ ভোটে এবং দ্বিতীয়টি ৪৭-৫৩ ভোটে বাতিল হয়েছে। তবে ডেমোক্র্যাটদের সাফল্য হলো তারা প্রথম অভিযোগ অর্থাৎ ক্ষমতার অপব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর মিট রমনির সমর্থন পেয়েছিল। আর ট্রাম্প আশা করেছিলেন ডেমোক্র্যাটদের অনেকেই তার পক্ষে ভোট দেবে সেটি বাস্তবে ঘটেনি। তবে আপাতত এই বিজয়েই ট্রাম্প সন্তুষ্ট আছেন।
অপসারিত না হলেও ট্রাম্পের গায়ে অভিশংসনের কলঙ্কের দাগ স্থায়ীভাবেই এঁকে দিতে পেরেছে ডেমোক্র্যাটরা। ইতিহাসে তিনি তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যিনি অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত হবেন। এর আগে ১৮৬৮ সালে অ্যান্ড্রু জনসন ও ১৯৯৮ সালে বিল ক্লিনটন এই দুই প্রেসিডেন্ট প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হয়েছিলেন। ট্রাম্পের মতো তারাও সিনেটের সিদ্ধান্তে এই অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেও ইতিহাসের পাতা থেকে এই দাগ মুছতে পারেননি। ফলে একইভাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইতিহাসের একজন কলঙ্কিত প্রেসিডেন্ট হিসেবেই বিবেচিত হবেন।
প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এই কার্যক্রমের ফলে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কোন দল লাভবান হলো তা নিয়ে উভয় পক্ষের বিপরীত দাবি রয়েছে। রিপাবলিকানরা মনে করছে, এই অব্যাহতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে সুবিধা দেবে। এতে শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পাবে আর ডেমোক্র্যাটরা মনে করছে প্রতিনিধি পরিষদের বিজয় ও সিনেটে মিট রমনির সমর্থন তাদের পক্ষে জনমতকে প্রভাবিত করতে সহায়ক হবে। ডেমোক্র্যাট নেতারা প্রচারে সিনেটের ভ‚মিকার সমালোচনা করবে। তারা বলছেন, সিনেট তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র এবং সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর কাছে গুরুত্ব হারাচ্ছে। এসব কারণে বিশ্বব্যাপী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও প্রভাব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে মার্কিন জনমত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনদিকে মোড় নেবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ ফায়দা উসুলে ব্যর্থ হয়ে ডেমোক্র্যাটরা অভ্যন্তরীণ সংকটেই রয়েছে। তাদের প্রেসিডেন্ট তথা আগামী দিনে নেতা নির্বাচনের বিষয়টি এখনো ধোঁয়াশাচ্ছন্ন হয়ে আছে। জো বাইডেন পিছিয়ে আছেন, তাকে ছাপিয়ে একজন সমাজপতি, একজন নারী অথবা একজন সমকামী ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন, এসব জট খুলবে আগামী কয়েক মাসের প্রাথমিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। তখনই বোঝা যাবে এই অভিশংসন প্রক্রিয়া মার্কিন রাজনীতিতে কতটা, কীভাবে প্রভাব ফেলবে।