গাজী মুনছুর আজিজ: শাড়িতেই ফুটে ওঠে বাঙালি নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য। সেজন্য উৎসব-পার্বণে নারীদের শাড়ি পরাটা অনেকটা অলিখিত চুক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তাই উৎসব এলে একটা শাড়ি কেনাটাও এখন অনেক নারীর নিয়মের মধ্যে পড়েছে। ঈদের বাজারে সব ফ্যাশন হাউজই কমবেশি শাড়ি এনেছে।
পাঞ্জাবি: ঈদ উৎসবে পুরুষের পাঞ্জাবি কেনা চাই-ই। কারণ ঈদগায়ে যাওয়ার জন্য পাঞ্জাবির বিকল্প কিছুই নেই। তাই ঈদের ফ্যাশন বাজারেও পাঞ্জাবির পসরার কমতি নেই। আর এসব পাঞ্জাবির রঙে ও নকশায় রয়েছে ঈদের বর্ণিল উৎসবের ছোঁয়া। তরুণদের জন্য এবার অধিকাংশ ফ্যাশন হাউজই এনেছে শর্ট ও সেমি লং পাঞ্জাবি। সুতি, সিল্ক, অ্যান্ডি, অ্যান্ডি কটন কাপড়ে করা এসব পাঞ্জাবির নকশা করা হয়েছে সুইসুতা, মেশিন এমব্র্রয়ডারিসহ নানা হাতের কাজের মাধ্যমে। আর রঙের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে নীল, খয়েরি, হলুদ, বেগুনি, সবুজ, লালসহ উজ্জ্বল রঙ। অন্য দিকে বয়স্কদের জন্যও আলাদা রঙ ও নকশার পাঞ্জাবি এনেছে দেশীয় বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ। বয়স্কদের এসব পাঞ্জাবির রঙে প্রাধান্য পেয়েছে সাদা, অফহোয়াইট, অ্যাশসহ নানা রঙ। এসব পাঞ্জাবিতে খুব একটা ভারি কাজ নেই।
টি-শার্ট ও পলো শার্ট: তারুণ্যের ফ্যাশনে বরাবরই বড় একটি অংশ দখল করে আছে টি-শার্ট ও পলো শার্ট। ঈদের বাজারে তাই এসেছে নানা রঙ ও নকশার টি-শার্ট ও পলো শার্ট। ট্রেন্ডি ও আরামদায়ক পোশাক হিসেবেও এর জুড়ি নেই। আর হাল ফ্যাশনে পলো শার্ট ও টি-শার্টের বিকল্প আর কিইবা হতে পারে। সেজন্য তরুণদের কাছে ঈদ উৎসবেও টি-শার্ট ও পলো শার্টের কদর অনেক। ৩৮০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ২০০ টাকায় মিলবে এসব টি-শার্ট ও পলো শার্ট।
শাড়ি: শাড়িতেই ফুটে ওঠে বাঙালি নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য। সেজন্য উৎসব-পার্বণে নারীদের শাড়ি পরাটা অনেকটা অলিখিত চুক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তাই উৎসব এলে একটা শাড়ি কেনাটাও এখন অনেক নারীর নিয়মের মধ্যে পড়েছে। ঈদের বাজারে সব ফ্যাশন হাউজই কমবেশি শাড়ি এনেছে। এসব শাড়ির মধ্যে আছে টাঙ্গাইলের সুতি শাড়ি, রাজশাহীর সিল্ক শাড়ি, সোনারগাঁওয়ের জামদানি শাড়ি, মিরপুরের বেনারশি শাড়িসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার তাঁতের শাড়ি। এসব শাড়ির অধিকাংশই বুননের মাধ্যমে নকশা করা। কিছু সুতি শাড়ি পাওয়া যাবে ব্লক-বাটিকের মাধ্যমে নকশা করা।
সালোয়ার-কামিজ: শাড়ির পর উৎসব-পার্বণে নারীদের পছন্দের পোশাকই হচ্ছে সালোয়ার-কামিজ। তাই ঈদ উৎসবেও সালোয়ার-কামিজের জুড়ি নেই। বরং শাড়ির চেয়ে সালোয়ার-কামিজের ক্রেতার সংখ্যা একটু বেশিই। এ ছাড়া তরুণীদের পছন্দের পোশাকের তালিকায়ও সালোয়ার-কামিজের কদর বরাবরই বেশি। এবারের ঈদ বাজারে যেসব সালোয়ার-কামিজ এসেছে তার কাটিং, প্যাটার্ন ও সুইংয়ে আছে বৈচিত্র্যতা। এবারও শর্ট ও সেমি লং সালোয়ার-কামিজই বেশি চলছে। ভারী কাজ এবং হালকা কাজ দুটোরই প্রাধান্য লক্ষণীয়। অন্যদিকে প্রিন্টেড সালোয়ার-কামিজের বিক্রিও এবার বেশ রয়েছে। তবে সব সালোয়ার-কামিজই তৈরি সুতি, সিল্ক, অ্যান্ডি, অ্যান্ডি কটনসহ বিভিন্ন কাপড়ে।
কুর্তি: কুর্তি মূলত শর্ট কামিজেরই একটা রূপ। এর কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন এটি সাধারণত ওয়েস্টার্ন প্যানার্টে হয়ে থাকে। কাটিং, ডিজাইন ও কালারেও থাকে ভ্যারিয়েশন। এটি ঢিলেঢালা বা টাইটফিট দুভাবেই হতে পারে। আর তাই হাল ফ্যাশনে কুর্তি এখন বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে তরুণী বা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়পড়য়াদের কাছে মূলত কুর্তির কদর বেশি। আর কুর্তির স্টাইলটাও পশ্চিমা ঢঙের। ফলে পশ্চিমা ঢঙে নিজেদের সাজাতে অনেক তরুণীই এখন কুর্তি পরছে। এবারের বাজারে যেসব কুর্তি আসছে তার কার্টিংয়ে আছে ভ্যারিয়েশন। কালার অধিকাংশ উজ্জ্বল। প্যাটার্ন তো পশ্চিমা ধাঁচেরই। আর ডিজাইন করা হয়েছে এমব্র্রয়ডারি, সুইসুতার হাতের কাজসহ নানা মাধ্যমে।
কুর্তা: কুর্তির সঙ্গে ছেলেদের কুর্তাও এখন হাল ফ্যাশনে বেশ জনপ্রিয়। কুর্তার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো নরমাল পাঞ্জাবি থেকে একটু আলাদা। তবে হাল ফ্যাশনে তরুণদের কাছে এর কদর এখন অনেক। এটাও শর্ট পাঞ্জাবির আদলেই অনেকটা হয়ে থাকে। পাঞ্জাবিতে শুভ্রতার যেমন একটা ছোঁয়া থাকে, কুর্তার ক্ষেত্রে সেটা অনেকটাই কম থাকে। কুর্তা অনেকটা পশ্চিমা ধাঁচের। তবে এটি ঢিলেঢালা বা টাইটফিট দুভাবেই হতে পারে। অবশ্য এখন টাইফপিটের যুগটাই চলছে বলে বাজারের অধিকাংশ কুর্তা টাইটফিট।
বাজারে যেসব কুর্তা পাওয়া যায়, সেগুলো কালার, কাটিং ও প্যাটার্নে ভ্যারিয়েশন আছে। এগুলো উজ্জ্বল রঙ আর ভারী কাজের। কাজ করা হয়েছে এমব্র্রয়ডারিসহ নানা মাধ্যমে। কাপড় হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে সুতি, সিল্ক, অ্যান্ডি, অ্যান্ডি কটনসহ নানা কাপড়কে।
কটি: অনেকেই পাঞ্জাবির ওপর কটি পরেন। ফলে পাঞ্জাবির ফ্যাশনে যেমন পূর্ণতা আসে, তেমনি প্রকাশ পায় ব্যক্তিত্বের রুচিবোধ। পাঞ্জাবির সঙ্গে কটি পরার দুটি লক্ষণীয় বিষয়। একটি পাঞ্জাবির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কটি পরা, অন্যটি পাঞ্জাবির রঙের ঠিক বিপরীত রঙের কটি পরা। দুটি দিকেরই প্রচলন সমান সমান।