শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১০ পূর্বাহ্ন

নীলাম্বরী শাড়ি পরে…….!!!

নীলাম্বরী শাড়ি পরে…….!!!

তৌফিক অপু: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত চরণ দুটির মতোই, নীল রঙ নিয়ে প্রকৃতিতে হাজির হয়েছে বর্ষকাল। বর্ষার স্নিগ্ধ ছায়ায় ডুবে আছে প্রকৃতি।

নীলাম্বরী শাড়ি পরে-নীল যমুনায় কে যায়…….?

কেতকি, কদম, যুথিকা, মালতি ফুলের আনাগোনা ঋতুরাণী বর্ষাকে করেছে আরও বেশি বর্ণিল। ভেজা হাওয়ার পরশে মন হয়ে উঠছে আন্দোলিত। বর্ষা যেমন প্রকৃতিকে সজীব করে তোলে তেমনি জীবনকে করে তোলে উৎসবমুখর। বর্ণিল এ উৎসবকে আরও রঙিন করে তোলে বর্ষার শাড়ি।

বাঙালি নারীদের পোশাকের মূল উপসঙ্গ হচ্ছে শাড়ি। আর সেই শাড়ি যদি হয় বর্ষার আবহকে ঘিরে তাহলে তো কথাই নেই। নীলাভ আভা বর্ষার শাড়িকে আরও বেশি প্রাণবন্ত করে তোলে। তাই তো ফ্যাশন হাউজগুলো বর্ষার শাড়িতে প্রাধান্য দিয়েছে নীল রঙকে। প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউজ বর্ষার শাড়িতে নীল রঙকে বেজ করে কারুকাজ করেছে। এ প্রসঙ্গে তরুণ ডিজাইনার ইফতেখার জানান, বিভিন্ন ধরনের শাড়ি ফ্যাশন হাউজগুলোতে শোভা পাচ্ছে। তার মধ্যে সুতি, কোটা, এন্ডি সিল্ক এবং মসলিন শাড়িই বেশি। কারণ আবহাওয়াগত একটা ব্যাপার রয়েছে। জুন-জুলাই মাস এক দিকে যেমন বৃষ্টিভেজা আবহাওয়া, অন্য দিকে গরমের মাত্রাটাও বেশি। তাই সব ধরনের কাপড় এই আবহাওয়ায় স্যুট করবে না। এ কারণে ডিজাইন করার আগে কাপড়ের ওপর প্রাধান্য দিয়ে থাকি। এরপর কি আঙ্গিকে ডিজাইন হবে সেই থিম নিয়ে কাজ করি। প্রকৃতির পালা বদলে চলছে বর্ষাকাল, এই বর্ষাকাল নিয়ে রয়েছে অনেক গান, কবিতা, ছড়া ইত্যাদি। প্রচলিত এসব কবিতা নিয়েও ডিজাইন করা হয়ে থাকে। তা ছাড়া বর্ষার চিত্রকর্ম নিয়েও বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করা হয়েছে। আর রঙের ক্ষেত্রে নীল রঙকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। নীল রঙের সঙ্গে বর্ষার মাধুরী দারুণভাবে মানিয়ে যায়। এ কারণে বেশির ভাগ শাড়ি নীলের ছোঁয়া রাখা হয়েছে। নীলের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি কম্বিনেশন করা হয়েছে সাদা রঙের।

ডিজাইন ব্যবহার করা হয়েছে হ্যান্ড পেইন্ট, স্প্রে, ব্লক, টাইডাই, পুতি, ক্রিস্টাল এবং মেটাল। মেটাল এবং ক্রিস্টাল দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বর্ষার আবহ। ফ্যাশন হাউজ ওটু এর ডিজাইনাল ফয়সাল জানান, আমরা থিম বেজ কাজ করতে বেশি পছন্দ করি। আর এই থিম বেজ কাজের মধ্যে ঋতুভিত্তিক কাজগুলোও পড়ে। এখন চলছে বর্ষাকাল। নীল রঙকে থিম করে ডিজাইন করা হয়েছে শাড়ি। জর্জেট কাপড়ের ওপর স্টোন বেজ কাজগুলো ক্রেতাদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছে। খুব বেশি গর্জিয়াস ডিজাইনও করি না। ডিজাইনগুলোও আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে করে থাকি। কারণ এই গরমে জমকালো ডিজাইন কখনই শোভনীয় নয়। যে কারণে হাল্কা ডিজাইনকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। শুধু আঁচল এবং পাড়ের ডিজাইন ছাড়া অলওভার কাজগুলো এভোয়েট করা হয়েছে। নীলের সঙ্গে সঙ্গে সাদার কম্বিনেশনও চমৎকার সাড়া জাগিয়েছে। সাদা শাড়ির ওপর বেজ করে নীল এবং পিংক কালারের ফুলের ডিজাইন বর্ষার চমৎকার আবহ ফুটিয়ে তুলেছে। ক্রেতারাও এখন বেশ সচেতন। কালার এবং ডিজাইন কম্বিনেশনের ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দেয়। যার ফলে খুব হিসাব-নিকাশ করে ডিজাইনগুলো প্রস্তুত করতে হয়।

ঋতুভিত্তিক পোশাক খুব বেশিদিন হয়নি আমাদের দেশে প্রচলিত হয়েছে। দিনে দিনে মানুষ ফ্যাশন সচেতন হয়ে উঠছে। তারই ধারাবাহিকতায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ঋতুভিত্তিক পোশাকগুলো। ফ্যাশন হাউজগুলোও ব্যস্ত ক্রেতাদের মন রাঙাতে। বর্ষার ভেজা হাওয়ায় কেমন পোশাক মানাবে তা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতে হয় ডিজাইনারদের। শুধু তাই নয়, অফিসগামী মানুষ কিংবা পার্টিতে এই বর্ষায় কিভাবে নিজেকে ফ্রেশ রাখা যায় তা নিয়েই ক্রেতাদের যত টেনশন। তা ছাড়া বৃষ্টির পানি কোন কোন কাপড়ে তিলা ছড়ায়। সে থেকে বাঁচারও পরিত্রাণ খোঁজে তারা। সবকিছু ছাপিয়ে পথ চলা সুগম করতেই ফ্যাশন হাউজগুলো ক্রেতাদের পছন্দসই বেশকিছু শাড়ির পসরা সাজিয়েছে এই বর্ষাকালে। দামও হাতের নাগালে। কটন শাড়ি পাওয়া যাবে ৮০০ টাকা থেকে ২৮০০ টাকার মধ্যে, এন্ডি সিল্ক ১৫০০ টাকা থেকে ৭০০০ টাকা, সিল্ক ৩০০০ টাকা থেকে ১২০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে, মসলিন শাড়ি মিলবে ২০০০ টাকা থেকে ১৫০০০ টাকা, জর্জেট ১৮০০ টাকা থেকে ১২০০০ টাকা।

কোমল স্নিগ্ধ পরিবেশে নিজেকে প্রাণবন্ত রাখতে ভালো শাড়ির জুড়ি নেই। ফ্যাশন হাউজগুলো ক্রেতাদের সুবিধার্থে পণ্য বিক্রয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সাজেশনও দিয়ে থাকে। এই বর্ষায় কোন্ শাড়ি মানাবে বা কোন্ শাড়ি কমফোর্টেবল সেসব তথ্যও পাওয়া যাবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877