স্বদেশ ডেস্ক:
বেসরকারি অবৈধ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অনুমোদন না থাকায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৫৬টি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিকের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে নিবন্ধন নিয়ে আবারও সেগুলো খোলার সুযোগ রয়েছে। তাই এ সুযোগকে কাজে লাগাতে গত এক সপ্তাহে অধিদপ্তরে আবেদন করেছে ২ হাজার ১৩৬টি প্রতিষ্ঠান। সে হিসাবে দিনে তিন শতাধিক আবেদন জমা পড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অভিযান শুরুর পর থেকেই বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও ব্লাড ব্যাংকের নিবন্ধন পেতে প্রচুর আবেদন আসছে। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে গড়ে প্রতি সপ্তাহে ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০টি আবেদন জমা পড়তো, অভিযানের কারণে সেখানে দৈনিক আবেদনই তিন শতাধিক। এর মধ্যে নবায়নের পাশাপাশি নতুন আবেদনও রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ মে থেকে ১ জুন- এই সাতদিনে ২ হাজার ১৩৬টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেখানে ৮৪৫টি আবেদন জমা পড়েছে নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধনের জন্য। বাকি ১ হাজার ২৯১টি আবেদনই নিবন্ধন নবায়নের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত সভায় নিবন্ধনহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পরদিন থেকে অভিযানে নামে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে ঘোষিত ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও অভিযান চলমান। সারা দেশে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেবল ১ হাজার ৪৫৬টি অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সাময়িকভাবে বন্ধ করতে পেরেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ঢাকায় ২৮৬টি, চট্টগ্রামে ২৮৮টি, রাজশাহীতে ২০২টি, রংপুরে ১১৪টি, ময়মনসিংহে ১৫০টি, বরিশালে ৬৫টি, সিলেটে ৪৭টি ও খুলনা বিভাগে ৩০৪টি।
এ বিষয়ে অধিদপ্তরের (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) শাখার উপ-পরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ দাউদ আদনান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৩টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় (পেন্ডিং) ছিল। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানের আবেদন ত্রুটিপূর্ণ থাকায় তাদের পেন্ডিং রাখা হয়েছে। অন্যদিকে নতুন ২ হাজার ২৮টি প্রতিষ্ঠানের আবেদনপত্র ঠিকঠাক থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পরিদর্শন হয়নি। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল রয়েছে কিনা, সেটি নিশ্চিত হতে পরিদর্শনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই পরিদর্শন সম্পন্ন হওয়ার আগে এসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন দেওয়া হবে না। সব মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের অপেক্ষায় রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এসব আবেদিত প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের পাশাপাশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও ব্লাড ব্যাংকের সংখ্যা ১০ হাজার ৯২২টি। এর মধ্যে ৭ হাজার ৪৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ৩ হাজার ৭১৭টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ও ১৬২টি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। এর বাইরে ব্যাঙের ছাতার মতো অসংখ্য হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে; যেগুলোর বৈধ কোনো কাগজপত্রই নেই।