স্বদেশ ডেস্ক: কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে সাক্ষাতের পর দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার এই ঘোষণা দেন। পাশাপাশি সোমবার রাজ্যসভায় এ সংক্রান্ত বিলও উত্থাপন করেছেন অমিত শাহ। এর মাধ্যমে সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দিয়ে কাশ্মিরের সাংবিধানিক মর্যাদা প্রত্যাহার করতে চাইছে ভারতের মোদি সরকার।
ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের সাংবিধানিক রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারাকে। এটি তুলে দিলে বিশেষ সুবিধা হারাবেন ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের বাসিন্দারা।
সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পার্লামেন্টে কাশ্মিরের সাংবিধানিক মর্যাদা তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার আগেই কাশ্মির উপত্যকায় ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি বাড়ায় ভারত। নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি ও হামলার আশঙ্কার ধোয়া তুলে গত সপ্তাহে কাশ্মিরে আধাসামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ইতোমধ্যেই কাশ্মিরের বিভিন্ন স্থানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে মোবাইল যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ। রোববার গভীর রাতে থেকে কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহকে গৃহবন্দি করে ভারত। এছাড়াও নিজের বাড়িতে নজরদারির মধ্যে রয়েছেন সেখানকার আরেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ ও পিপলস কনফারেন্স পার্টির চেয়ারম্যান সাজাদ লোন। পাশাপাশি রোববার মধ্যরাত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে শ্রীনগরে।
জানা যায়, সোমবার সংসদ শুরু হতেই রাজ্যসভায় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অর্থ্যাৎ কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা তুলে দেয়ার প্রস্তাব দেন সরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধীরা তুমুল হই হট্টগোল করে প্রস্তাবের বিরোধীতা শুরু করেন। এরপরই কয়েক মিনিটের জন্য মুলতবি হয়ে যায় অধিবেশন।
এদিকে ভারত অধিকৃত কাশ্মির উপত্যকায় যে কিছু একটা ঘটতে চলেছে, সে ইঙ্গিত অবশ্য বেশ কয়েকদিন ধরেই মিলছিল। অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে দিয়ে হঠাৎই কাশ্মীরে বাড়ানো হয়েছিল সামরিকবাহিনীর বহর। আসলেই কি উগ্রবাদী হামলার কোনো তথ্য নাকি হামলার আশঙ্কার ধুয়া তুলে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে সরকারের, জল্পনা তৈরি হচ্ছিল তা নিয়েই। ভূস্বর্গ ঘুরতে আসা পর্যটকদেরও কাশ্মির ছাড়তে বাধ্য করা হয়। কিন্তু এখন দেখা গেল, হামলার আশঙ্কা কিছুই নয়। কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করতেই ভারতের মোদি সরকারের এত আয়োজন।